এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > শেষ হল পঞ্চায়েত মামলার শুনানি, শাসক-বিরোধী-কমিশন কোন পক্ষের কি বক্তব্য?

শেষ হল পঞ্চায়েত মামলার শুনানি, শাসক-বিরোধী-কমিশন কোন পক্ষের কি বক্তব্য?

বাংলায় আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে শাসকদলের ‘লাগামহীন সন্ত্রাসের’ ফলে সব আসনে মনোনয়ন দিতে পারেনি বিরোধীরা অভিযোগে মনোনয়ন পর্বের শেষদিনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে যায় বিরোধীরা। কমিশন বিরোধীদের দাবি মত মনোনয়ন জমা দেবার সময়সীমা আরো একদিন বাড়িয়ে দেয়। এরপরেই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানান, এই নির্দেশ আইন মোতাবেক হয় নি। ফলে রাত না পেরোতেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। আর তারপরেই বিরোধীরা আদালতে যান, আদালত প্রথমে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দেয় এবং নির্বাচন কমিশনকে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর তথ্য সহ আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল কংগ্রেস হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে। বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় সেই মামলা খারিজ করে দেন। ফলে মূল মামলাটি এখন বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারাধীন।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

গত সোমবার থেকে সেই মামলার শুনানি প্রত্যেকদিন হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টে। আজ সেই মামলার শুনাই শেষ হল বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে তিনি জানিয়েছেন এই মামলার রায় তিনি আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৪ টের সময় দেবেন। ফলে সেই দিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্যবাসী। তার আগে একনজরে দেখে নেওয়া যাক শাসক-বিরোধী-কমিশন কোন পক্ষের কি বক্তব্য ছিল এই মামলা ঘিরে –

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় – ভোট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর তার ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারে না আদালত। ফলে মামলাটির গ্রহণযোগ্যতাই নেই।

সৌরভ দাস, পঞ্চায়েত দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব – ভোট পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ করা কমিশনের কাজ। এর বাইরেও কমিশনকে অনেক ধরনের পরামর্শ দিতে হয় রাজ্য সরকারকে। ৯ এপ্রিল রাতে কমিশন মনোনয়নের তারিখ বাড়ায়। তখন রাজ্য সরকার বলে, ৯ তারিখ বিকেল ৩টের সময় মনোনয়ন পেশ যেখানে শেষ হয়ে গিয়েছে, তখন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তারিখ বাড়াতে পারে না কমিশন।

নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য, নির্বাচন কমিশন সচিব – কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করে তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ক্ষমতা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আছে। সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করেই কমিশন মনোনয়নের সময় বাড়িয়েও সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়। কমিশন নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ করেছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরে কয়েকটি বৈঠক হয়। কমিশনে যতগুলি অভিযোগ ৯ এপ্রিল পর্যন্ত জমা পড়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পর সেগুলি খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরপর কমিশন মনোনয়নের মেয়াদ বাড়ায়। পরে তা প্রত্যাহার করে। সামনেই বর্ষাকাল এবং রমজান মাস থাকবে। তাই তখন ভোট হলে সমস্যা হবে। আদালত যেন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে।

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য – ভোট প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা যাবে না, তা কখনই হতে পারে না। কমিশন তো তৃণমূলের বিরোধিতা করেনি। তাহলে কেন তৃণমূলের পক্ষে কমিশনের বিজ্ঞপ্তি মেনে নেওয়া সম্ভব হল না। কেনই বা রাতারাতি ভোলবদল করে বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নিল কমিশন। সেখানেই তো সমস্যা তৈরি হল।

প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপি – ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ তিনবার পরিবর্তন করা হয়েছিল। প্রয়োজনে কলকাতায় মনোনয়নের ব্যবস্থা করা হোক। দেশের বিচারব্যবস্থা এবং সংবিধানের ওপর বিশ্বাস রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, হাইকোর্টে সঠিক পথ দেখাবে।

অধীর চৌধুরী – কমিশনের উপর তাঁদের কোনও ভরসা নেই। বলেন, শাসকদলের চাপে পড়েই কমিশন মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়েও তা প্রত্যাহার করে নেয়। তাই এক্ষেত্রে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ভোটের জন্য আদালতের নজরদারিতে নির্বাচন হওয়া বাঞ্ছনীয়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!