উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির কারণ সামনে এল! কর্মী সমর্থকদের পোস্ট ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়! কলকাতা রাজ্য December 3, 2019 ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল। আর এই কেন্দ্রগুলোর মধ্যে এক করিমপুর বাদ দিয়ে বাকি খড়গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ দুইটি আসনে লোকসভা ভোটের নিরিখে যথাক্রমে 45 হাজার এবং 57 হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু ফলাফল ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই মাথায় হাত পড়েছে পদ্মফুল শিবিরের। সেখানে দেখা যাচ্ছে, লোকসভা ভোটে পিছিয়ে থাকা করিমপুরের সঙ্গে সঙ্গে কালিয়াগঞ্জ এবং খড়্গপুরে বিধানসভা কেন্দ্রতেও পরাজিত হতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। পরাজয়ের কারণ নিয়ে ইতিমধ্যেই চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়ে গেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে। পরশুদিন এই বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে রাজ্য কমিটির নেতারা বৈঠকে বসেছেন। ইতিমধ্যেই স্থির হয়ে গেছে, পরাজিত কেন্দ্রগুলিতে রাজ্য বিজেপির তিনজন সাধারণ সম্পাদককে পরাজয় বিশ্লেষণ করার জন্য পাঠানো হবে। তবে ইতিমধ্যেই বিজিপির অন্দরেই এমন নানান কথা উঠে আসছে। যার জেরে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বদের। কার্যত গত বৃহস্পতিবার থেকেই নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হতে দেখা যায় গেরুয়া সমর্থকদের। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ফেসবুকে পোস্ট করে নিজেদের মনোভাব ব্যক্ত করতে থাকেন রাজ্যের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে থাকা বঙ্গ বিজেপির নেতা কর্মীরা। তার মধ্যে কিছু পোস্টে দেখা যায় উল্লেখ রয়েছে “কেমন লাগছে বঙ্গ বিজেপি সঙ্ঘের কর্মীদের অবহেলা করা! স্বজনপোষণ টাকার বিনিময়ে পদ বন্টন বেনোজলদের মাথায় তোলা,” পোস্টে যেসব কথার উল্লেখ রয়েছে, তা নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বদের চিন্তা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে একাধিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ। গোটা ভারতবর্ষে ভারতীয় জনতা পার্টির উত্থানের পিছনে অন্যতম কারিগর হিসেবে কাজ করে থাকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। প্রকাশ্যে না বললেও অভ্যন্তরীণভাবে প্রায় সকল বিজেপি নেতারা জানেন গেরুয়া বাহিনীর মূল চালিকাশক্তি আরএসএস। কিন্তু 2018 সালের পঞ্চায়েত ভোটের থেকেই যখন রাজ্যজুড়ে বিরোধী শক্তি হিসেবে ভারতীয় জনতা পার্টি বাংলায় স্থান পেতে থাকে, তখন থেকেই সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল ইত্যাদি দলের বিদ্রোহী কর্মীরা ভারতীয় জনতা পার্টিতে শামিল হতে শুরু করে। উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হতেই সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গেছে এই ধরনের পোস্টে! প্রথমদিকে নিঃস্বার্থভাবে কিছু কর্মী ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিলেও লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে 18 টি আসন লাভ করার পরে যে সমস্ত নেতাকর্মীরা ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছে, তাদের যোগদানের পিছনে স্বার্থটাকেই বড় কারণ হিসেবে দেখছে পুরাতন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। এই কারণে দলের মধ্যে দ্বিমত সৃষ্টি হয়েছে – নতুন বনাম পুরনো বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। বিধানসভা উপনির্বাচনের পরাজয়ের পেছনে কর্মীদের মধ্যে অসমন্বয় একটা বড় কারণ হিসেবে উঠে আসছে। এছাড়াও ফেসবুক থেকে টুইটার এবং হোয়াটসঅ্যাপে ভারতীয় জনতা পার্টি কর্মীদের মধ্যে আরও অনেক কথাই উঠে আসছে। অনেক বাঘা বাঘা ভারতীয় জনতা পার্টির অন্তপ্রাণ কর্মীরাও ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে লিখছেন, “ঔদ্ধত্যের ফল।” আর এই পোস্টগুলি করা হয়েছে বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই, তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কেননা দলের নেতাদের সিদ্ধান্তে সহমত ছিলেন না অনেক কর্মী সমর্থকরাই। ফলে রাজ্যস্তরের নেতারা যতই এনআরসিকে হারের কারণ হিসাবে তুলে ধরুন – দলীয় কর্মীরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন! ফলে, ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এনআরসি থেকে শুরু করে দেশজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা, ইত্যাদি ব্যাপারে যেমন বিজেপির ভাবা উচিত, তেমনই আগামীদিনে সংগঠনে যদি সুদিন ফেরাতে হয়, তবে দলের অভ্যন্তরে কর্মীদের ভালো লাগা না লাগাটাকেও সমানভাবে গুরুত্ব সহকারে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে দেখতে হবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। বিশেষ করে রাজ্য সভাপতি বারেবারেই দাবি করে থাকেন – তিনি নাকি ৯০% বুথ কমিটি সাজিয়ে ফেলেছেন! কিন্তু সেটা যে কথার কথা কর্মী-সমর্থকদের ক্ষোভেই তা প্রমান হয়ে গেল! আপনার মতামত জানান -