এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > কার অঙ্গুলিহেলনে কেন হিমঘরে চলে গেল আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত? জল্পনা প্রবল

কার অঙ্গুলিহেলনে কেন হিমঘরে চলে গেল আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত? জল্পনা প্রবল

টাইম মেশিনে করে যদি হঠাৎ করে বছর দুয়েক পিছিয়ে ২০১৪ সালের মে মাস নাগাদ পৌঁছে যাওয়া যায়, তাহলে দেখা যাবে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে একের পর এক আর্থিক দুর্নীতি সামনে আসছে। সারদা, নারদ, রোজভ্যালি, প্রয়াগ – একের পর এক কোটি কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ, আর তাতে নাম জড়িয়ে যাচ্ছে শাসকদলের বাঘা বাঘা সব নেতাদের। আজ একে সিবিআই ডাকছে, তো কাল তাকে গ্রেপ্তার করছে, তো পরের দিন আরেকজনের নামে জল্পনা চরমে উঠছে। বাড়িতে বাড়িতে সন্ধ্যের প্রাত্যহিক ‘শাস-বহুর’ কিস্সা ছেড়ে আমজনতা মজে, কোন নেতাকে ডেকে কি প্রশ্ন করছে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারেরা সেই নিয়ে। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে সেইসব তদন্ত যেন হঠাৎ করে হিমঘরে চলে গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া ‘প্রভাবশালীরা’ সবাই একে একে আপাতত জেলের বাইরে। কেউ কেউ তো আবার ইতিমধ্যেই বিদেশ পর্যন্ত ঘুরে এসেছেন! সবথেকে বড় কথা দুর্জনেরা বলতে শুরু করেছেন, এইসব প্রভাবশালীদের জামিন আটকানোর নাকি চেষ্টায় করেননি সিবিআইয়ের আইনজীবীরা!

ফলে শুরু হয়েছে প্রবল জল্পনা। রাজ্যের বিরোধীরা অভিযোগ জানাচ্ছেন ‘দিদিভাই-মোদীভাই’-এর ‘সেটিং’ হয়ে গেছে, আর তাই সব ধামাচাপা পরে গেছে! যখন একের পর এক শাসকদলের নেতা-মন্ত্রী গ্রেপ্তার হচ্ছিলেন, তখন শাসকদলের তরফে অভিযোগ ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার! বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘বাগে’ আনতেই নাকি স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী এই তদন্তে বিশেষ উদ্যোগী। যদিও বিজেপি সেইসব দাবি উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছিল, আইন বা সিবিআই চলছে নিজেদের পথেই, এতে কেন্দ্রের কোনো ভূমিকাই নেই। এমনকি তদন্ত হঠাৎ করে থমকে যাওয়াতেও কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের কোনো ভূমিকা দেখছে না, সবটাই নাকি সিবিআই নিজেদের মতোই করছে! কিন্তু যেখানে গত সাড়ে তিন বছরে সারদা কেলেঙ্কারির মাত্র একটি মামলাতেই চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ হয়েছে আর নারদ-কাণ্ডে এখনও কলকাতা হাইকোর্টে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্টই জমা পড়েনি – তখন প্রশ্ন তো উঠবেই।

ফলে, রাজনৈতিক মহলে, গুঞ্জন প্রবল, তাহলে কি শীতঘুমে চলে গেল আর্থিক কেলেঙ্কারিগুলোর তদন্ত। অতীত অভিজ্ঞতা কিন্তু তা বলছে না। লালু-মায়াবতী-মুলায়মের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন পড়লেই মাথাচাড়া দিয়েছে, এমনকি কবর খুঁড়ে বার করা হয়েছে বফর্স-কাণ্ডও! তাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এমনিতেই কেন্দ্র সরকার নোট-বাতিল, জিএসটি, নীরব মোদী, বিজয় মালিয়া – এই সব নিয়ে যথেষ্ট ব্যাকফুটে আছে, তার উপরে একের পর এক উপনির্বাচনে হার পায়ের নীচের জমি আর আলগা করছে। তাছাড়া – এইসব তদন্ত পশ্চিমবঙ্গের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, জাতীয় ক্ষেত্রে খুব একটা ফায়দা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে ২০১৯ এ যদি কেন্দ্রে সরকার গঠনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুব একটা ভূমিকা না থাকে, তাহলে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এগুলো আবার শীতঘুম ভেঙে ফিরে আসতেই পারে!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!