এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বেনোজল ঢুকে বিজেপির ‘তৃণমূলীকরন’ আটকাতে সংগঠনের শীর্ষে বসতে চলেছেন দুই কট্টরপন্থী হিন্দুনেতা?

বেনোজল ঢুকে বিজেপির ‘তৃণমূলীকরন’ আটকাতে সংগঠনের শীর্ষে বসতে চলেছেন দুই কট্টরপন্থী হিন্দুনেতা?

লোকসভা নির্বাচনের আগে, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তুলেছিলেন – ২০১৯, বিজেপি ফিনিশ! তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস তো বটেই, তিনি নিজেও স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলা থেকে ৪২ এ ৪২ করে, দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু, সেই স্বপ্ন দেখতে গিয়ে তিনি বুঝতেই পারেননি, তাঁর দলের পায়ের তলা থেকে মাটিটা কতটা সরে গেছে! তা স্পষ্ট হল গত ২৩ শে মে যেদিন লোকসভার ফলাফল বেরোলে দেখা গেল, তাঁর স্বপ্ন চুরমার করে শুধু দিল্লির মসনদে নরেন্দ্র মোদী বসেনই নি, বাংলা থেকেও গেরুয়া শিবির ছিনিয়ে নিয়েছে ১৮ টি আসন।

আর তারপরেই, ‘পাঁচিলের উপর বসে থাকা’ নেতারা কার্যত লাইন লাগিয়ে দিয়েছেন বিজেপিতে নাম লেখানোর। এমন যে একটা কিছু হতে পারে আগেই আঁচ করছিল রাজনৈতিক মহল। আর সেই জল্পনাকে সত্যি করেই লোকসভার ফলাফল বেরোনোর এক সপ্তাহের মধ্যেই বেশ কিছু বিধায়ক ও কাউন্সিলর গুটি গুটি পায়ে চলে গিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু, গোলটা প্রথম বাধল – যখন লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম নাম লেখালেন গেরুয়া শিবিরে! দীর্ঘদিন ধরে এ রাজ্যে বিজেপির পতাকা বয়ে নিয়ে চলে বিজেপির পুরোনো দিনের কর্মীরা তো বটেই, এই ঘটনার জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলে দিলেন সাধারণ মানুষও।

গেরুয়া শিবিরের এই পুরোনো কর্মীদের মতে, সিপিএমের অত্যাচারে মানুষ দিশেহারা হয়ে এই রাজ্যে পরিবর্তন করে তৃণমূলকে এনেছিলেন। কিন্তু, তৃণমূলের অত্যাচার বর্তমানে সিপিএমের সেই অত্যাচারকেও ছাপিয়ে গেছে, ফলে রাজ্য আবার একটা পরিবর্তনের পরিবর্তন চাইছে। গত লোকসভা ভোটেই তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলার মানুষ। আর তাই দেখে, অনেকেই নিজেদের সুবিধা ও স্বার্থে এখন গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে চাইছে। কিন্তু, এদের মধ্যে অনেকেই আছে, যাদের নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই! ফলে এইসব দলবদল নিয়ে ইতিমধ্যেই মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন উঠছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তাঁদের আরও বক্তব্য, সাধারণ মানুষ স্পষ্টতই প্রশ্ন তুলছেন, যাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছি, তারাই তো এবার দলবদলে বিজেপির হয়ে একই জিনিস করবে! ফলে এইভাবে যদি ‘বেনোজল’ দলে ঢোকে, তবে পরিবর্তন হবে শুধু রঙের! বঙ্গ-বিজেপির কার্যত ‘তৃণমূলীকরন’ হয়ে যাবে! সেক্ষেত্রে, যেসব সাধারণ মানুষ ‘পরিবর্তনের আশায়’ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনগুলোতে তাঁরাই মুখ ফিরিয়ে নেবেন! তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, তৃণমূলের সকলেই খারাপ নন, দলে নিতে হলে প্রথমত স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতা নিতে হবে, কিছুতেই এই ‘বেনোজল’ ঢুকতে দেওয়া যাবে না।

দলের পুরোনো কর্মীদের এই ভাবধারার কথা শুনছেন ও বুঝছেন সঙ্ঘের নেতারাও। তাঁরাও কার্যত একমত – তাঁদের বক্তব্য, বিজেপিতে একটা নির্দিষ্ট নিয়ম, নীতি, নিষ্ঠা, আদর্শ রয়েছে – এটি কোন আঞ্চলিক দল নয়। ফলে, বিজেপি করতে গেলে বিজেপির ভাবাদর্শ ভালোভাবে জেনে ও মেনে তবেই বিজেপি করা যাবে। আমাদের কাছে আগে দল, পরে ব্যক্তি। অন্য দলের থেকে আমরা অনেক বেশি শৃঙ্খলাপরায়ণ। সুতরাং, বিজেপিতে যোগ দিতে গেলে বা বিজেপি করতে গেলে, বিজেপির ভাবধারা জেনে-বুঝে তবেই করতে হবে। যাঁরা শুধু পদের লোভে এই দলে আসতে চাইছেন, তাঁদের জন্য বিজেপি নয়!

কিন্তু, কিভাবে আটকানো হবে এই বেনোজল। সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই বঙ্গ-বিজেপির সাংগঠনিক পরিবর্তন হতে চলেছে। আর সেখানে রাজ্য বিজেপির শীর্ষপদে আসতে চলেছেন দুই কট্টরপন্থী হিন্দুনেতা। একজন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহ ও অপরজন হিন্দু সংহতির সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য। যদিও এনিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সব পক্ষই, কিন্তু গেরুয়া শিবিরের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, এই দুই নেতার কাজই হবে রাজ্য বিজেপির সঙ্গে সঙ্ঘের সমন্বয় সাধন। দলে কাকে নেওয়া হবে আর কাকে নয়, দলে নিলেও কার কতটা বিজেপিকরন হল – কার্যত সবটাই দেখাশোনা করবেন এই দুই নেতা। তবে, শুধু এই দুই নেতাই নয়, দলের তৃণমূলস্তরের পুঙ্খানুপুঙ্খ খবর তাঁদের পৌঁছে দিতে জেলাস্তরেও শীৰ্ষপদে বসতে চলেছেন একাধিক সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বলেই সূত্রের খবর।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!