এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > মহেশতলা উপনির্বাচন থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে জুন মাস থেকেই বঙ্গবিজয়ের নতুন কৌশল বিজেপির?

মহেশতলা উপনির্বাচন থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে জুন মাস থেকেই বঙ্গবিজয়ের নতুন কৌশল বিজেপির?


২০১৬ সালের পর থেকে রাজ্য জুড়ে হওয়া যে কোন নির্বাচন নিয়েই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। তা সে বিধানসভা বা লোকসভার উপনির্বাচন হোক, বা পৌর নির্বাচন বা পঞ্চায়েত নির্বাচন – শাসকদলের লাগামহীন সন্ত্রাসের কাছে হারতে হয়েছে বলেই দাবি বিরোধীদের। ব্যতিক্রম একমাত্র মহেশতলা উপনির্বাচন। মহেশতলা উপনির্বাচনের দিন আমাদের মত সাংবাদিকদের রীতিমত মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে কিনা তা খুঁজে বের করতে। দিনের শেষে কয়েকটা ইভিএম খারাপ আর একদম শেষবেলায় কয়েকটি বুথে বিজেপি এজেন্টকে বের করে দেওয়া ছাড়া সত্যিই বিরোধীরা আর কোনো অভিযোগ আনতে পারেননি। আর সেই শান্ত-সমাহিত উপনির্বাচনের ফল বেরোতেই শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস একেবারে ম্যাজিক দেখিয়ে দিয়েছে। সম্মিলিত বিরোধীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে গিয়ে ৬২ হাজারেরও বেশি ভোটে সেখানে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী দুলাল দাস। নির্বাচনের পর দুলালবাবু নিজে দাবি করেছিলেন ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতবেন, কিন্তু শাসকদলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল মহেশতলায় ৩০ হাজার ভোটে জিতলেই অনেক ছিল – সেখানে ৬২ হাজারে জয় অভাবনীয়।

আর তাই মহেশতলা উপনির্বাচন থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে নতুন করে ঘুটি সাজাতে বসেছে রাজ্যের অধুনা প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। ‘উগ্র হিন্দুত্ত্ববাদ’ দিয়ে যে বাংলার মাটিতে ফসল ফলানো অসম্ভব তা একপ্রকার মেনে নিচ্ছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা। বঙ্গের প্রায় বেশিরভাগ আসনেই কম-বেশি সংখ্যালঘু ভোট আছে। আর সেই ভোট প্রায় নিরঙ্কুশ ভাবে তৃণমূলের বাক্সে যাচ্ছে তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মহেশতলা উপনির্বাচন। সুতরাং বাংলায় সংখ্যালঘু ভোট বাদ দিয়ে যদি কোনো আসনে জিততে হয় তাহলে তা প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। সুতরাং ‘উগ্র হিন্দুত্ত্ববাদ’ থেকে সরে এসে বঙ্গ বিজেপি এবার তৃণমূলের সমান্তরাল ভোট-লাইনে হাঁটতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিজেপির বিভিন্ন কূটনৈতিক চালে ও বক্তব্যে তার ইঙ্গিতও ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। যেমন পঞ্চায়েত ভোটেই মুকুল রায় দায়িত্ত্ব পেয়ে প্রায় ৮০০ এর উপর সংখ্যালঘু মুখকে পদ্ম-টিকিট দিয়েছিলেন, ৫ বছর আগের পঞ্চায়েতে যা ছিল ১০০-এরও কম। অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, জুন মাস পড়লেই (বা বলা ভালো রমজান মাস মিটে গেলেই) বিভিন্ন দল থেকে সংখ্যালঘু নেতা-কর্মীরা বিজেপিতে যোগদান করবেন। এমনকি, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহাও সংখ্যালঘু নেতা-কর্মীদের বিজেপিতে যোগদান করানোর জন্য সওয়াল করেছেন। সব মিলিয়ে বাংলায় পদ্ম ফোটাতে ঘোষিত ‘হিন্দুত্ত্বের-লাইন’ থেকে সরে এসে জুন মাস থেকেই নতুন করে কৌশল রচনা করতে পারেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ত্ব বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!