এখন পড়ছেন
হোম > আন্তর্জাতিক > সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ভারতে চলে আসছে করোনার ভ্যাকসিন? ভারতীয় সংস্থার উদ্যোগে বাড়ছে আশার আলো

সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ভারতে চলে আসছে করোনার ভ্যাকসিন? ভারতীয় সংস্থার উদ্যোগে বাড়ছে আশার আলো

আতঙ্কের হিম স্রোত বয়ে যায় এখন একটাই নাম শুনলে। আর তা হলো করোনা ভাইরাস। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে করোনা তার মারণ প্রভাব এতটাই দেখিয়েছে, যে প্রতিটি দেশ করোনার হাত থেকে বাঁচার জন্য ত্রাহি রব জুড়েছে। সমগ্র বিশ্বে করোনা ভাইরাসকে লক ডাউন এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করা যায়নি। তার প্রমাণ এতদিনে সবাই পেয়ে গেছে। মুশকিলটা হচ্ছে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতন এখনো কোনো অস্ত্র মানবজাতির হাতে আসেনি।

অর্থাৎ কোন প্রতিষেধক বা কোন বিশেষ ওষুধ এখনো পর্যন্ত তৈরি হয়নি যা করোনার বিরুদ্ধে লড়তে পারে। তবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও গবেষকরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে মানব জাতিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রক্ষা করা। এই পরিস্থিতিতে ভারতে এবার শুরু হতে চলেছে করোনার ভ্যাকসিন তৈরি। সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে সেখানকার সিইও আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন ইতিমধ্যে, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি সঙ্গে যৌথভাবে ভারতে এবার এই ভ্যাকসিন তৈরি হতে চলেছে।

অন্যদিকে  জানা গেছে, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে যে ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে তা পরীক্ষামুলকভাবে প্রথম দুজনের শরীরে ইনজেক্ট করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন মহিলা বিজ্ঞানী এলিসা গ্রানাটো। জানা গেছে, আরও 800 জনকে দুটি দলে ভাগ করে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। অন্যদিকে সেরাম ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে নিশ্চিত ভাবে বলা হয়েছে, আগামী দিনে অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা নেবে করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে।

এ প্রসঙ্গে আদর পুনাওয়ালা আরও জানিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পরীক্ষা সফল হলে করোনার ভ্যাকসিন আসতে চলেছে ভারতের বাজারঅ্যা। ইতিমধ্যে ড্রাগ কন্ট্রোল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ এর কাছ থেকে মানব শরীরে এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানী ও করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারের অন্যতম সদস্য ডক্টর অ্যাড্রিয়ান হিলের সাহায্যে এই কাজ শুরু হতে চলেছে সেরাম ইনস্টিটিউটে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অবশ্য আদর পুনাওয়ালা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, অক্সফোর্ডে ট্রায়াল ভ্যাকসিনের ফলাফলের ওপর নজর রেখেই আগামী দিনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে তার আগেই সেরামের ভাইরোলজিষ্টরা ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট বানিয়ে ফেলবেন বলে দাবি করা হয়েছে। আর তার মধ্যেই অক্সফোর্ডের পরীক্ষাও বেশ কিছুটা এগিয়ে যাবে বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি যে ভ্যাকসিনটি বানাচ্ছে, তার নাম হচ্ছে ChAdOx1 nCoV-19। দাবি করা হচ্ছে এই ভ্যাকসিনটি আসলে ভেক্টর ভ্যাকসিন।

এই ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে অ্যাডেনোভাইরাল ভ্যাকসিন ভেক্টর ও সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেনের স্পাইক প্রোটিনের সঙ্গে মিলে। জানা গেছে, ভেক্টরের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল সাধারণ ফ্লু ভাইরাস অর্থাৎ অ্যাডেনোভাইরাস। এটি একটি শিম্পাঞ্জির শরীর থেকে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এর পরেই বাহক ভাইরাসটিকে এবং সার্স-কভ-২ ভাইরাসের স্পাইক গ্লাইকোপ্রোটিনগুলোকে আলাদা করে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। এবং অ্যাডেনোভাইরাসের মধ্যে ঢুকিয়ে ভাইরাস ক্যান্ডিডেট তৈরি করা হয়েছে। মানব শরীরে এই ভ্যাকসিন ইনজেক্ট করলে দেহ কোষ তখন এই ভাইরাল প্রোটিনের উপস্থিতি বুঝতে পারবে এবং তার প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করবে।

সেই সঙ্গে দেহ কোষের সঙ্গে থাকা টি সেলগুলিও উদ্দীপিত হয়ে উঠবে। এবার একদিকে অ্যান্টিবডি এবং অন্যদিকে টি সেল- এই দুই অস্ত্রে করোনার স্পাইক প্রোটিন ধ্বংস হচ্ছে কিনা সেটাই দেখার। অন্যদিকে সেরাম ইনস্টিটিউটেও যক্ষার প্রতিরোধক ব্যাসিলাস ক্যালমেট গেরান নিয়ে করোনা প্রতিরোধ করা যায় কিনা, তা নিয়ে গবেষণা চলছে প্রতিনিয়ত। জানা গেছে, আইসিএমআর এর অনুমতি পেলেই এই ভ্যাকসিন এর ট্রায়াল শুরু হবে মহারাষ্ট্রে। এ প্রসঙ্গে আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিন তাঁদের ওপরই প্রয়োগ হবে, যাঁদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

জানা গিয়েছে, সেরাম ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাগারে আবিষ্কৃত এই ভ্যাকসিন বার্লিনের ম্যাক্সপ্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট অফ ইনফেকশন বায়োলজির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করোনার প্রতিরোধী করে বানানো হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে এখন একটাই প্রার্থনা, যেকোনোভাবে করোনার প্রতিষেধক যেন সফলভাবে মানবদেহে কাজ করা শুরু করে। কারণ, একমাত্র প্রতিষেধকেই শেষ হবে করোনার জীবনযাত্রা। থামবে করোনার মানব হানার। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, এই পরীক্ষা ফলপ্রসূ হচ্ছে কিনা তার জন্য আরো তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে এখন আশা, হয়তো বরাবরের মতো এবারেও বিজ্ঞান বাঁচিয়ে দেবে মানবসভ্যতাকে। নতুন করে হয়তো আবার ইতিহাস লেখা সম্ভব হবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!