কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এই বিষয় নিয়ে বারবার বলতে শোনা গেছে ভারতবর্ষের রাষ্ট্রনায়কদের। শুধু তাই নয়, কাশ্মীর যে ভারতেরই অঙ্গ, তা নিয়ে কোথাও কোনো সন্দেহ নেই। বর্তমানে করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্বকে ভাবিয়ে তুলেছে। আর এমত পরিস্থিতিতে কাশ্মীরকে নিজেদের দিকে রাখতে কড়া বার্তা দিতে দেখা গেল প্রাক্তন সেনাপ্রধান তথা সড়ক, পরিবহনমন্ত্রী রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি কে সিংকে।

যেখানে কাশ্মীর কিছু অংশে পাকিস্তান জবরদখল চালাচ্ছে এবং তা যে কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না, তার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। আর ভি কে সিংয়ের এই মন্তব্যের জেরেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, করোনা আবহের মধ্যে এবার কাশ্মীরকে নিজেদের দিকে আনতে ঘুটি সাজাতে শুরু করেছে ভারত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শুধু ভি কে সিংয়ের মন্তব্যই নয়, গত কয়েকদিন ধরেই কিন্তু পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত।

সূত্রের খবর, এদিন গিলগিট-বালতিস্তান নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ভি কে সিং বলেন, “শুধু পাকিস্তানকেই সামলাতে পারছে না সে দেশের সরকার। সে দেশে সেনা ঠিক করে কিভাবে চলবে দেশ! তাই গিলগিট-বালতিস্তান নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার পাকিস্তানের নেই। গোটা বিশ্বের কেউ পাকিস্তানকে সমর্থন করে না। ভারত যেভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে, তা প্রশংসনীয়। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আজ মোদীর নেতৃত্বে সকলে একজোট হয়েছে।”

আর এরপরই তিনি বলেন, “গোটা কাশ্মীর ভারতের অংশ। এই নিয়ে কোথাও কোনো সন্দেহ নেই। পাকিস্তান কাশ্মীরের কিছু অংশে জবরদখল চালাচ্ছে, সেটা বন্ধ হওয়া দরকার। পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে যে কোনো রকম পদক্ষেপ নিতে তৈরি ভারতীয় সেনা। শুধুমাত্র তার বাস্তবায়ন ঘটানো সময়ের অপেক্ষা।” অর্থাৎ ভিকে সিংয়ের এই মন্তব্য থেকে পরিষ্কার যে, পাকিস্তান কাশ্মীর নিয়ে যতই তৎপরতা দেখা না কেন, কোনোভাবেই ভারত কাশ্মীরকে নিজেদের থেকে বিচ্যুত করবে না।

অর্থাৎ পাকিস্তান কাশ্মীর দখলের ব্যাপারে তৎপর হলে ভারত যে ছেড়ে দেবে না তা ভি কে সিংয়ের কথার মধ্যে দিয়েই উঠে আসল বলে মনে করছে একাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাসের জন্য সমস্ত দেশ চিন্তিত। তাই এমন একটা সময়ে ভারত করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি নিজেদের কাশ্মীরকে সুরক্ষিত রাখতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঢাল তৈরি করছে। আর তারই ইঙ্গিত পাওয়া গেল ভি কে সিংয়ের কথা থেকে।

সকলেই মনে করছিলেন, করোনাতে নাজেহাল হয়ে এই সময় কাশ্মীর নিয়ে সীমান্তে লড়াই বন্ধ রাখবে পাকিস্তান। কিন্তু দেখা গেছে উল্টে সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। আর তাদের রুখতে গিয়ে শহীদ হতে হয়েছে বহু ভারতীয় জওয়ানকেই। আর এরপরেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে আবহাওয়া আপডেট দিতে শুরু করে ভারত সরকার। শুধু তাই নয়, এরপরেই গুগল ম্যাপেও পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের বলেই দেখানো শুরু হতে থাকে।

আর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই বৈদেশিক নীতি জোরদার করতে মন দিয়েছিলেন। আর বর্তমানে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান বিশ্বে দৃঢ় হতেই আসরে নেমেছেন অজিত দোভাল। পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে পরপর ঘটে যাওয়া ঘটনা তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। আর তাঁর সেই মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ ভি কে সিংয়ের মন্তব্য। সব মিলিয়ে এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।