প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একসময় হলদিয়ায় এই লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের বর্তমান শীর্ষ নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে। কিন্তু বর্তমানে সেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে। খুব তাড়াতাড়ি তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে।

আর শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের জল্পনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে এক মঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেল এই লক্ষ্মণ শেঠকে। যার ফলে রাজ্য রাজনীতিতে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, এবার কি শুভেন্দু অধিকারীকে আটকাতে লক্ষ্মণ শেঠকে দলে নিতে চলেছে তৃণমূল? সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার হলদিয়ার দুর্গাচকে ক্ষুদিরামের জন্ম দিবস উদযাপনের আয়োজন করেছিলেন মধুসূদন মন্ডল।

আর তার আমন্ত্রণেই সেখানে এসেছিলেন তৃণমূলের কুনাল ঘোষ এবং প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। স্বভাবতই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন নতুন করে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে। একাংশের মতে এই লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে লড়াই করেই কার্যত রাজ্য রাজনীতিতে বড় জায়গা দখল করে নিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী কিন্তু এখন সেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছে।

কিছুদিন আগে মন্ত্রী পদ ত্যাগ করেছেন তিনি। এবার দল পর্যন্ত ত্যাগ করতে পারেন এই তৃণমূল নেতা। আর শুভেন্দু অধিকারী যদি বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলত্যাগ করেন, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক চাপে পড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই পরিস্থিতিতে সেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে এককালে লড়াই করা লক্ষ্মণ শেঠকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের পাশে বসে থাকতে দেখে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে।

এদিন লক্ষ্মণ শেঠের উপস্থিতি নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “মধুসূদন মন্ডল হলদিয়ায় ক্ষুদিরামের জন্ম দিবস পালন করছেন। তার আমন্ত্রণ পেয়ে এসেছি। আয়োজকরা কাকে ডাকবেন, সেটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার। লক্ষ্মণ শেঠ পুরনো পরিচিত। তিনি সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ। তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে যে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কিছু বলতে পারব না।”

একইভাবে নন্দীগ্রাম কাণ্ডে লক্ষ্মণ শেঠকে ক্লিনচিট পর্যন্ত দিয়েছেন তৃনমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তিনি বলেন, “লক্ষণদা একদিন দুঃখ করে বলেছিলেন, নন্দীগ্রাম তার ওপরে জোর করে চাপিয়ে দিয়েছিলেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। তিনি তখন পইপই করে জানিয়েছিলেন। কিন্তু মহাকরণ থেকে এক প্রকার জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই দায় লক্ষ্মণ শেঠকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।”

এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদান নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। এদিন সেই প্রসঙ্গেও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন কুণালবাবু। তিনি বলেন, “শুভেন্দুকে বলব এই বিজেপি 2016 সালে তাদের দপ্তরে বিশাল স্কিন লাগিয়ে ওর ছবি দেখিয়ে নারদা-সারদার কালিমালিপ্ত করে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছিল। এখন শুভেন্দু বিজেপিতে গেলে সবাই বলবে, সিবিআই ভয় দেখিয়ে ওকে বিজেপিতে নিয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় না, শুভেন্দুর মত একজন লড়াকু, ঝকঝকে ছেলে এদের কাছে মাথা নত করবে।”

কিন্তু তাকে যেভাবে তৃণমূলের মুখপাত্রের সাথে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা গেল, তাতে তিনি কি এবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন? এদিন এই প্রসঙ্গে লক্ষ্মণ শেঠ বলেন, “তৃনমূলে কেন যাব! এমন অনুমান করে কি লাভ! পৃথিবীতে সব কিছু হতে পারে।” অর্থাৎ লক্ষ্মণ শেঠ নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কার্যত জল্পনাকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করলেন।

আর এখানেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তাহলে কি এবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী যদি দলবদলের মত কোনো সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তার পাল্টা লক্ষণ শেঠকে নিজেদের দিকে টেনে সেই শুভেন্দু অধিকারীকে চাপে ফেলার চেষ্টা করবে তৃণমূল কংগ্রেস? ক্ষুদিরামের জন্ম দিবসের বেশকিছু অনুষ্ঠানে বেশ কিছু চিত্র থেকে এই ধরনের জল্পনা আরও বৃদ্ধি পেল বাংলার রাজনৈতিক মহলে।