এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > উপনির্বাচনে ফ্লপ, দলে দলে নেতাদের তৃণমূলে যোগ! বাম-কং জোট ভেঙে পড়া শুধু সময়ের অপেক্ষা?

উপনির্বাচনে ফ্লপ, দলে দলে নেতাদের তৃণমূলে যোগ! বাম-কং জোট ভেঙে পড়া শুধু সময়ের অপেক্ষা?


2016 সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম বাম-কংগ্রেস জোট করে লড়াই করেছিল। পরবর্তীতে সেই লড়াইয়ে সাফল্য না পাওয়ার দরুন দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা তৈরি হয়েছিল। তবে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধীদলের জায়গা ভারতীয় জনতা পার্টি দখল করে নেওয়ায় 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে তারা ফের জোট করতে উদ্যোগী হয়। কিন্তু তাতেও তেমন লাভ হয়নি।

সব কিছু ঠিক থাকলেও শেষ মুহূর্তে দুই দলের জোট ভেস্তে যায়। তবে সদ্য সমাপ্ত রাজ্যের তিন বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে জোট করেছিল সেই বাম এবং কংগ্রেস। তবে উপনির্বাচনের ফলাফলে তারা মাথা তুলতে পারেনি। উল্টে আরও খারাপ ফলাফল হয়েছে এই দুই রাজনৈতিক দলের। আর এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ি পৌরসভা নির্বাচনের আগে সেখানে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেস জোট করবে কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে দোলাচল।

ইতিমধ্যেই সিপিএমের সঙ্গে জোট করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়ে বেশ কয়েকজন যোগদান করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের। যদিও বা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেই ভাঙ্গনকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে পুর নির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচনে শিলিগুড়িতে বাম এবং কংগ্রেস কোন পথ বেছে নেবে, এখন তা নিয়ে চলছে জোর চর্চা।

জানা গেছে, উপনির্বাচনের আগে এই দুই দলের নেতারা একজোট হয়ে শিলিগুড়ি শহরে নাগরিক কনভেনশন পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু উপনির্বাচনে জোটের থেকে কার্যত মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় আদৌ পৌরসভা নির্বাচনে তারা জোট করবেন কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। সম্প্রতি গত বুধবার দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সেবাদলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিবেক সিং এবং জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিমলেশ মৌলিক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন।

যাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন শিলিগুড়ি পৌরসভার বিরোধী দলনেতা তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি রঞ্জন সরকার। এদিন দল বদলের কারণ হিসেবে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা বিমলেশ মৌলিক বলেন, “এই রাজ্যের মাটিতে আমাদের প্রধান শত্রু সিপিএম। প্রতিটি পদে-পদে ওদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। এখন নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করার উদ্দেশ্যে কিছু নেতা সিপিএমের হাত ধরেছেন। হাত এবং কাস্তে হাতুড়ি তারা এই জোটকে মানুষ মেনে নিচ্ছেন না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তাঁর মতে, “প্রতিটি নির্বাচনেই জোট ফ্লপ হচ্ছে। তাতেও কংগ্রেস নেতাদের হুশ না ফেরায় দলত্যাগ করেছি।” একইভাবে এই প্রসঙ্গে বিবেক সিং বলেন, “বিগত বাম জমানায় বহু কংগ্রেস কর্মী সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর হাতে খুন হয়েছেন। তা সত্ত্বেও এসব কংগ্রেস নেতা কর্মীদের ভুলে গিয়ে লোকসভা ভোটে সিপিএমের হাত ধরেন কংগ্রেস নেতারা। তাই লোকসভা ভোটের পরই সেবাদলের দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিই। বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলই হল মূল কংগ্রেস।”

তিনি স্পষ্ট করেন, “রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। তাই সেই উন্নয়নের শরিক হতেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।” এদিকে বাম এবং কংগ্রেসের জোট ফ্লপ হওয়ার ঘটনাকে দায়ী করে দীর্ঘদিনের কংগ্রেস কর্মীদের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান এখন রীতিমত অস্বস্থিতে ফেলেছে শিলিগুড়ির কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং বাম নেতৃত্বকে। একাংশ বলছেন, উপনির্বাচনে বাম- কংগ্রেস জোট ফ্লপ হওয়ার পরেও আগামী পৌরসভা নির্বাচনের আগে এই দুই দল জোট করবে বলে মনস্থির করছে।

কিন্তু, ঠিক তখনই দলীয় নেতাকর্মীদের তৃণমূলে যোগদান রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এবং বিধান ভবনের নেতাদের। যদিও বা দলবদলের এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ কংগ্রেস নেতৃত্ব। এদিন এই প্রসঙ্গে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা মাটিগাড়া নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে বিবেকবাবুর সম্পর্ক ছিলো না। আর বিমলেশবাবু আগেও বহুবার দলবদল করেছেন। এবার তিনি কাউন্সিলর হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তৃণমূলে গিয়েছেন।”

তাঁর কথায়, “কিন্তু, তার স্বপ্ন পূরণ হবে না। ওরা দলত্যাগ করায় দলের কোনো ক্ষতি হবে না। ওদের সঙ্গে দলের কোনো কর্মী-সমর্থক যাননি। আর সিপিএমের সঙ্গে জোট করেই পৌরসভা নির্বাচনে লড়াই করা হবে। বিগত বাম জমানায় চাইতে বেশি সন্ত্রাস তৃণমূলের জমানায় হচ্ছে। তাই গণতন্ত্র হত্যাকারী তৃণমূলকে রুখতেই এই জোট করা হচ্ছে।” তবে এই প্রসঙ্গে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, “কংগ্রেস নেতারা বড় বড় কথা বললেও তারা দল টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। খুব শীঘ্রই কংগ্রেসের অনেকে তৃণমূলে যোগদান করবেন।”

আর জেলা তৃণমূল সভাপতির এই কথা যদি সত্য হয়, তাহলে বাম-কংগ্রেস জোট যে সেই দলের কর্মীরাই ঠিকমত মেনে নিতে পারছেন না, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তবে এই বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের মনে অনীহা তৈরি হলেও, শেষ পর্যন্ত শিলিগুড়ি পৌরসভা নির্বাচনে দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক সন্ধি কতটা সফল হয়! সেদিকেই নজর থাকবে বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!