এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পিসি-ভাইপোর ‘চক্রান্তেই’ কি টুকরো টুকরো হয়ে যাবে ‘বাঙালি প্রধানমন্ত্রীর’ স্বপ্ন?

পিসি-ভাইপোর ‘চক্রান্তেই’ কি টুকরো টুকরো হয়ে যাবে ‘বাঙালি প্রধানমন্ত্রীর’ স্বপ্ন?


প্রিয় বন্ধু বাংলা এক্সক্লুসিভ – আর মাস দুয়েকের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের লক্ষ্যে সাধারণ লোকসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে হঠাতে দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে এক ছাতার তলায় আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কংগ্রেস সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলো। আর তা দেখে, গেরুয়া শিবিরের একটাই প্রশ্ন – এই জোটের মুখ কে? নরেন্দ্র মোদিকে আটকাতে প্রধানমন্ত্রী কে? যা শুনে বিরোধীদের বক্তব্য – আগে জোট করে বিজেপিকে হারানোটাই মূল লক্ষ্য – তারপরে ঠিক করা হবে প্রধানমন্ত্রী কে?

এই প্রসঙ্গে এই জোটের প্রধান উদ্যোক্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন – বিজেপিকে এই নিয়ে চিন্তা করতে হবে না! তাঁদের জোটে, সবাই রাজা – সুতরাং, বিজেপি পরাজিত হলেই জোট তখন বসে সিদ্ধান্ত নেবে কে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবে। কিন্তু, তৃণমূল নেত্রী নিজে একথা বললেও – তাঁর অনুগামীরা একথা মানতে নারাজ! বাংলার জনগণকে তাঁদের একটাই অনুরোধ – আগে বাংলা থেকে প্রিয় দিদিকে ৪২-এ-৪২ উপহার দিন, বাকিটা দিদি নিজেই বুঝে নেবেন। আর সত্যিই তো – বাঙালি একটুর জন্য জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পান নি। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত অবশ্য – প্রণব মুখোপাধ্যায়কে পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি হিসাবে।

কিন্তু, বাঙালি প্রধানমন্ত্রী? সেটা হবার যোগ্যতম লোক তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। সুতরাং, তৃণমূল কংগ্রেসের অনুগামীরা এই কথা বললে তার মধ্যে ভুল তো কোথাও নেই। আর তাই, এই বিরোধী জোটের সমস্ত কথা, বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত দাবি মেনে নিয়ে দেখা যাক – কোন অঙ্কে কি হতে পারে। তৃণমূল নেত্রী জোরের সঙ্গে দাবি করেছেন বিজেপি আগামী নির্বাচনে ১২৫ টির বেশি আসন পাবে না। হিসাবের সুবিধার্থে ধরে নিলাম – এর সাথে বিজেপি শরিকেরা আরো ১৮ টি আসন পেল – অর্থাৎ এনডিএ জোট ১৪৩-এ ফিনিশ। আর তারমানে বিরোধী জোট ৪০০ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসাবে যাঁদের নাম ভেসে উঠছে, একবার দেখে নেওয়া যাক তাঁরা কে কত সর্বোচ্চ আসন পেতে পারেন –
১. মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় – ৪২
২. চন্দ্রবাবু নাইডু – ২৫
৩. তেজস্বী যাদব – ২০ (কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে ৫০% আসন ধরে)
৪. কুমারস্বামী – ১৪ (কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে ৫০% আসন ধরে)
৫. স্ট্যালিন – ২৬ (কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে দুই-তৃতীয়াংশ আসন ধরে)
৬. চন্দ্রশেখর রাও – ১৭
৭. উদ্ধব ঠাকরে – ২৪ (কংগ্রেস-এনসিপি জোট বাকি ৫০% আসনে জয়ী হল ধরে)
৮. অখিলেশ যাদব – ৩৮ (এই সংখ্যক আসনেই উত্তরপ্রদেশে তাঁর দল লড়বে)
৯. মায়াবতী – ৩৮ (এই সংখ্যক আসনেই উত্তরপ্রদেশে তাঁর দল লড়বে

অর্থাৎ, যে ফেডারেল ফ্রন্টের কথা বলা হচ্ছে তারাই সকলে মিলে পৌঁছে যাচ্ছে ২৪৪-এ। বাকি ছোটোখাটো দল মিলেই সংখ্যাটা ২৭২-এ পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থাৎ ১২০-১৩০ টি আসনে জয়লাভ করেও কংগ্রেসের কোনো মূল্যই থাকছে না। আর তাই, বলাই যায় – তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু ভুল বলেননি, ফেডারেল ফ্রন্ট ক্ষমতায় আসতেই পারে এবং তাঁদের মধ্যে থেকেই কেউ দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে পারেন। আর, সেক্ষেত্রে ফেডারেল ফ্রন্টের যে চেহারা দাঁড়াচ্ছে – তাতে দেখা যাচ্ছে সব থেকে বেশি আসনের মালিক তৃণমূল কংগ্রেস। সুতরাং, স্বাভাবিক নিয়মেই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিন্তু, মুশকিল হচ্ছে এখানেই ‘পিসি-ভাইপো’-এর ‘চক্রান্ত’ দেখতে পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা জোট সফল হলে, অবশ্যাম্ভাবী, সেখানকার বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে হারাতে জোট করবে এই দুই দল। এখন দুই দলের কাছে তাহলে খুব স্বাভাবিক ফর্মুলা হবে – মায়াবতীকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়ে দেওয়া এবং সেক্ষত্রে ‘ভাইপো’ অখিলেশ যাদবকে উত্তরপ্রদেশের কুর্শি ছেড়ে দিতে খুব একটা অসুবিধা হবে না ‘পিসি’ মায়াবতীর। আর তাই, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস ৪২-এ-৪২ পেলেও, ফেডারেল ফ্রন্ট ক্ষমতা দখল করলেও, কংগ্রেস বা রাহুল গান্ধী ক্ষমতার বাইরে থাকলেও – প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে এক বাঙালির আসিন হওয়া হচ্ছে না!

উত্তরপ্রদেশের ‘বুয়া-ভাতিজা’ বা ‘পিসি-ভাইপো’ নিজেদের রাজনৈতিক ‘স্বার্থসিদ্ধির’ জন্য যদি – এই ফর্মুলায় চলে, তাহলে স্বাভাবিক নিয়মেই কোটি-কোটি বাঙালিকে কপাল চাপড়াতে হবেই। একজন বাঙালি দেশ চালাচ্ছেন, এই স্বপ্ন অধরাই বোধ হয় থেকে যাবে। নিজের পাশের বাড়ির মেয়ের ইমেজ যুক্ত একজন – যিনি একার হাতেই রাজ্য থেকে বামফ্রন্ট ছাড়া করেছেন বা যাঁর মস্তিষ্কের জোরেই বিজেপি দেশছাড়া হবে বা ক্ষমতাচ্যুত হবে, নরেন্দ্র মোদির মত দাপুটে প্রধানমন্ত্রী আবার গুজরাটে ফেরত যেতে বাধ্য হবেন – তিনি প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে পারবেন না শুধুমাত্র রাজনীতির অঙ্কে – এটা মেনে নেওয়া আম বাঙালির পক্ষে বোধ হয় সম্ভব হবে না। আর তাই আজ থেকে, বাংলায় ৪২-এ-৪২ করার পাশাপাশি তৃণমূল সমর্থকদের মনে-প্রাণে প্রার্থনা হবে উত্তরপ্রদেশের পিসি-ভাইপোর জোট যেন তৃণমূলের থেকে বেশি সাফল্য না পায়!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!