এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ডিও ডিউটির হাত থেকে কি এবার মুক্তি পাবেন প্রাথমিক শিক্ষকরা? নতুন পদক্ষেপে বাড়ছে আশা

ডিও ডিউটির হাত থেকে কি এবার মুক্তি পাবেন প্রাথমিক শিক্ষকরা? নতুন পদক্ষেপে বাড়ছে আশা


রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের দীর্ঘদিন ধরেই বড়সড় মাথাব্যথার কারণ হল ডিও ডিউটি। ভোটার তালিকা সংরক্ষণের সময় এলেই নামমাত্র পারিশ্রমিকে দিন ১৫ ধরে নাওয়া-খাওয়া ভুলে তাঁদের এই কাজের মধ্যে নাক ডুবিয়ে বসে থাকতে। ঠিকমত পারিশ্রমিক না পাওয়া, কাজের পাহাড়ের পাশাপাশি যে স্থানীয় রাজনীতিকদের কাছ থেকে উপরি ‘সম্মানটা’ লজ্জার খাতিরে সে কথাটি মুখ ফুটে সরকারিভাবে কোথাও বলতেও পারেন না তাঁরা! আর এতসবের মাঝে সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসন সবাই একযোগে ভুলতে বসেছিলেন – আদতে এই কাজটি প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরির শর্তের মধ্যে পরেই না!

কিন্তু ‘ছাই ফেলতে ভাঙা কুলোর মত’ এই কাজটি যেন অঙ্গাঙ্গীভাবে জুড়ে গেছে প্রাথমিক শিক্ষকদের নামের সঙ্গে। আর এবছর তো এই ডিও এক লহমায় ১৫ দিন থেকে বেড়ে গিয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে দুমাস, যার মধ্যে আবার পুজোর ছুটিও পড়ছে! আর তার থেকেও মজার কথা, প্রশাসনের কাছে কিন্তু এই অতিরিক্ত কাজের জন্য প্রাথমিক শিক্ষকদের কি পারিশ্রমিক প্রাপ্য সেই তথ্যই নেই! ফলে, চাকরির শর্ত অনুযায়ী যে কাজ করতে বাধ্য না হয়েও বছরের পর বছর করে যেতে হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষকদের তার জন্য ক্ষোভের আগুন আকাশ ছুঁয়েছিল। আর এবার সেই ‘যন্ত্রনা’ থেকে মুক্তি পেতে বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ।

শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ নামে প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি সংগঠন আজ এই ব্যাপারে আলোচনায় বসেন কলকাতার প্রখ্যাত আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে – সবকিছু শুনে তিনি এই ডিও ডিউটি নিয়ে তাঁদের সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন – একটি লিগ্যাল ড্রাফট করে যে সমস্ত শিক্ষক এই ডিও/বিএলও ডিউটি থেকে সরে দাঁড়াতে চান তাঁরা যেন তা তাঁদের সংশ্লিষ্ট বিডিওকে ‘স্পিড পোস্টের’ মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন। এরপর নিয়মমত ৭২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে বিডিও এই ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেন তা জানার জন্য।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

সূত্রের খবর, যদি না এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিডিওদের কাছ থেকে ওই ড্রাফট পাঠানোর ৭২ ঘন্টার মধ্যে কোনো সুরাহা পাওয়া না যায় তাহলে বিকাশবাবুর সুযোগ্য সহকারী ফিরদৌস শামিম (তিনিও ইতিমধ্যেই বেশ কিছু হাই প্রোফাইল কেস লড়ে খবরের শিরোনামে এবং শিক্ষাগত মামলার ব্যাপারে অন্যতম বিশেষজ্ঞ আইনজীবী) এই মামলাটি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে চলেছেন। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ১২ জন শিক্ষক একটি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেছেন এবং আগামী সোমবার সেই মামলা হাইকোর্টে দায়ের হতে পারে বলে জানা গেছে।

শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি – আপনি যদি ডিও/বিএলও ডিউটি করতে না চান তাহলে কি করবেন? ইতিমধ্যেই, আইনজীবীদের পরামর্শমত একটি ‘লিগ্যাল ড্রাফট’ বানানো হচ্ছে (আজ রাত্রের মধ্যেই তা চূড়ান্ত হয়ে যাবে এবং তা সংগঠনের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া পেজে পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে) – সংগঠনের অন্যতম শীর্ষনেতা মইদুল ইসলামের কথা অনুযায়ী, যেসকল প্রাথমিক শিক্ষকরা এই ডিও/বিএলও ডিউটি করতে চান না, তাঁরা ওই ড্রাফটটি তাঁদের সংশ্লিষ্ট বিডিওকে ওই নিজের স্বাক্ষর করে পাঠাবেন স্পিড পোস্টে পাঠাবেন।

মইদুলবাবুর বাবুর কাছে আমরা জানতে চাই, কি আছে ওই লিগ্যাল ড্রাফটটিতে? মইদুলবাবুর কথা অনুযায়ী – ‘রাইট তো এডুকেশনাল অ্যাক্ট ২০০৯ এর ২৭ এর সি’ ধারা অনুযায়ী, শিক্ষকরা শিক্ষা বহির্ভূত অন্য কোন কাজ করতে পারেন না। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের ‘সেন্ট মেরি’ জাজমেন্ট অনুযায়ী, নির্বাচনের কাজে প্রথমে ব্যাঙ্ক ও সরকারি কর্মীদের নিযুক্ত করা হয়। তারপরেও যদি প্রয়োজনীয় কর্মী অপ্রতুল থাকে তাহলে ‘বিশেষ অবস্থায়’ শিক্ষকদের এই কাজে নিযুক্ত করা যেতে পারে। কিন্তু, সেক্ষত্রে কিন্তু যে দিনে বা দিনগুলিতে ওই নির্বাচনী কাজ শিক্ষকদের করতে হবে তা ‘ঘোষিত ছুটি’ হতে হবে। কিন্তু ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ শে অক্টোবর পর্যন্ত – বর্তমানে যে ডিও/বিএলও ডিউটি প্রাথমিক শিক্ষকদের করতে হচ্ছে – তা উপরোক্ত কোনো নিয়ম মেনেই হচ্ছে না। তাছাড়াও, নিয়ম অনুযায়ী এই ডিউটি করতে প্রাথমিক শিক্ষকরা যেহেতু বাধ্য নন – তাই এই দায়িত্ত্ব থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!