এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > জানুয়ারিতেই সমস্ত ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হবে – মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা ঘিরে তীব্র জল্পনা শুরু সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে

জানুয়ারিতেই সমস্ত ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হবে – মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা ঘিরে তীব্র জল্পনা শুরু সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে


বকেয়া ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। ক্ষোভ এতটাই বেড়েছে যে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ সরাসরি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই নিয়ে আইনি লড়াইয়ের পথে হেঁটেছেন। সেই মামলা আপাতত কলকাতা হাইকোর্ট ঘুরে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল ঘুরে আবারো কলকাতা হাইকোর্টের ঘরে বন্দি। সেই মামলার জেরে সরকারি কর্মচারীরা জেনেছেন – ডিএ তাঁদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পরে, রাজ্য সরকারের দয়ার দান নয়!

কিন্তু সেই ডিএর হার কি হবে বা তা বছরে কতবার করে দেওয়া হবে সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত আপাতত ঝুলে। এরমাঝেই প্রায় মাস ছয়েক আগে – মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন যে এ বছরের ১ লা জানুয়ারী থেকে আরও ১৮% ডিএ দেবেন এবং তার সাথেই পে-কমিশন চালু না হওয়ায় যে অন্তর্বর্তীকালীন ভাতা ১০% দেওয়া হচ্ছিল তা এই ডিএর সঙ্গে ‘মার্জ’ করে দেবেন। ফলে সবমিলিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়ে দাঁড়াবে ১২৫% – কিন্তু, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের হিসাব অনুযায়ী – যেহেতু এখনও নতুন পে কমিশন চালু হয় নি, তাই তাঁদের প্রাপ্য ডিএর পরিমান ১৪৮%।

অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী ডিএ বরাবর ঘোষণার সাথেসাথেই অন্তর্বর্তীকালীন ভাতা হারানোর পাশাপাশি সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএর পরিমান দাঁড়ালো – এখনও ২৩%। সবথেকে বড় কথা এই অন্তবর্তীকালীন ভাতা ডিএর সঙ্গে ‘মার্জ’ হয়ে যাওয়ায় সরকারি কর্মচারীরা ঘুরিয়ে বেতন কম পেতে লাগলেন! এছাড়াও, কেন্দ্রীয় সরকারি নীতি অনুযায়ী জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা আরও এক কিস্তি ডিএ পাবেন। অর্থাৎ, হিসেবমত এই ২৫% ডিএ দেওয়ার পরেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের থেকে ২৮-২৯% পিছিয়ে থাকবেন (কেন্দ্রের ডিএ ২% বাড়তে পারে ধরে নিয়ে)।

আজ বীরভূমের ইলামবাজারের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে বলেন, টাকা নেই তবু রাজ্য সরকার ঠিক করেছে বকেয়া ডিএ মেটানোর। জানুয়ারিতেই এই সমস্ত ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা মত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বাকি থাকা ডিএর ওই ২৮-২৯% – কি নিদেনপক্ষে ২৩% (কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের নতুন ডিএর কিস্তি না ধরে) মুখ্যমন্ত্রী এই জানুয়ারি মাস থেকেই দিয়ে দেবেন। কেননা এই ১২৫% ডিএর গেজেটেড অর্ডার (জিও) তিনি ছমাস আগেই আদালতে হলফনামা করে বলে দিয়েছেন। তাছাড়া ওই ১২৫% ডিএ দিলে তা ‘সব ডিএ মেটানো’ হবে না বলেই মনে করছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই প্রসঙ্গে আমরা কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজের অন্যতম শীর্ষনেতা সুবীর সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী এরকম একটা ঘোষণা করেছেন বলে বিভিন্ন জায়গায় শুনেছি। কিন্তু, সেটা কি এই ১২৫% ডিএ – যা জানুয়ারী থেকে বলবৎ হল তা, নাকি এই ১২৫% ডিএর সাথেই আরও সত্যিসত্যিই বাকি থাকা ডিএর কথা উনি বলেছেন তা স্পষ্ট নয়। এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা দেখে তবেই ব্যাপারটা স্পষ্ট করে বলা যাবে।

অপরদিকে সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাইকোর্ট ও স্যাটে আমাদের ও কনফেডারেশনের করা জোড়া মামলার গুঁতোয় রাজ্য সরকার নাজেহাল। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বুঝে গেছেন আজ নাহলে কাল আদালতের নির্দেশে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পাই-পয়সা মিটিয়ে দিতে হবে। কেননা, এই মামলায় নিশ্চিত হার জেনে রাজ্য সরকার এখন শুধু সময় নষ্টের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাই হয়ত, মুখ বাঁচাতে বাকি ডিএর কথা বললেন। আবার সামনেই লোকসভা নির্বাচন আসছে – কর্মচারী ক্ষোভ ইভিএমে যে কি হাল করবে তা বুঝেও করে থাকতে পারেন। তবে, বিভিন্ন জায়গা থেকে যে খবর পাচ্ছি তা পরস্পর বিরোধী। তবে, সরকারি হিসাব বলছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএর পরিমান ১৪৮% – আশা করব এই ঘোষণার পর সেটি উনি মিটিয়ে দেবেন।

একইসাথে আমরা এই প্রসঙ্গে স্টিয়ারিং কমিটির রাজ্য আহ্বায়ক সঙ্কেত চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি শুনলাম আজ মুখ্যমন্ত্রী ইলামবাজারে দাঁড়িয়ে বলেছেন এই মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেবেন। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, একজন সরকারি কর্মচারী হিসাবে আমার প্রাপ্য ডিএর পরিমান ১২৫%, যা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মত ১ লা জানুয়ারী থেকেই চালু হয়ে গেছে এবং বকেয়া ডিএর পরিমান ২৩%, যা মুখ্যমন্ত্রী এইমসের মধ্যেই মিটিয়ে দেবেন বলেছেন। সুতরাং, আশা করব আগামী ২৮ দিনের মধ্যে অর্থদপ্তর থেকে এই সংক্রান্ত আরেকটি নির্দেশিকা প্রকাশিত হবে, যাতে এই বকেয়া ২৩% মিটিয়ে দেওয়ার সুষ্পট নির্দেশ থাকবে। যদি সেটা হয়, অভিনন্দন আর যদি সেটা নাহয়, তাহলে তা চূড়ান্ত তঞ্চকতা! আপনারা জানেন, এই বকেয়া ডিএ ও পে-কমিশন চালু না হওয়া নিয়ে বাম মনোভাবাপন্ন সংগঠনগুলি কিভাবে রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়িয়ে চলেছে, তাই সেই চাপের কাছে নতিস্বীকার করে আজ নাহলে কাল ওনাকে সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য তো মিটিয়ে দিতেই হবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!