এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > যাঁদের আন্দোলনে ক্ষমতায় তাঁদেরই আজ তীব্র আক্রমন? ২১ শের আগেই ঘুম উড়বে তৃণমূল নেত্রীর?

যাঁদের আন্দোলনে ক্ষমতায় তাঁদেরই আজ তীব্র আক্রমন? ২১ শের আগেই ঘুম উড়বে তৃণমূল নেত্রীর?


ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষক সমাজ, ক্ষোভে ফুঁসছে পিটিটিআইরা! তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ, ক্ষমতায় আসতে তাঁদের একদিন ‘ব্যবহার’ করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর এখন ক্ষমতায় এসে তাঁদের তো ভুলে গেছেনই, উল্টে তাঁদের দাবিকে দমন করতে তাঁর পুলিশ করছে বর্বরোচিত আক্রমন। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম শহর কলকাতার রাজপথ! তৃণমূল নেত্রীর সাধের ২১ শে জুলাইয়ের আগেই তাঁর ঘুম উড়িয়ে দেবার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও শুরু করে দিয়েছেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক ও পিটিটিআইরা।

বাম জামানা থেকেই রাজ্য-রাজনীতিতে বড়সড় প্রভাব বিস্তার করতে থাকে পিটিটিআই আন্দোলন। পিটিটিআইদের অধিকারের দাবিতে সেই সময় তীব্র আন্দোলন হয়, অনশনে বসেন পিটিটিআই পড়ুয়ারা। সেই আন্দোলনের পাশে সবসময় ছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পিটিটিআই পড়ুয়াদের পাশে থেকে বাম সরকারকে কার্যত তুলোধোনা করেন তিনি। এমনকি, তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে পিটিটিআই পড়ুয়াদের অনশন ভঙ্গও করেন তিনি।

অনেকেরই মতে, ৩৪ বছরের বাম জামানার অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে পরিবর্তনের সরকারের প্রতিষ্ঠা হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল এই পিটিটিআই আন্দোলন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও তা অনুধাবন করেছিলেন। আর তাই মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেই, রাইটার্স বিল্ডিঙে এক ঐতিহাসিক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেন তিন বছরের মধ্যেই পিটিটিআই পড়ুয়াদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি। কিন্তু, পিটিটিআই পড়ুয়াদের অভিযোগ তিন বছর ছাড়িয়ে তৃণমূল নেত্রীর শাসনকাল ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও, মুখ্যমন্ত্রী ভুলে গেছেন নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি।

পিটিটিআই পড়ুয়ারা যে তিমিরে ছিলেন সেই তিমিরেই আছেন। কিন্তু, এঁদের কথা ভোলেননি তৎকালীন পিটিটিআই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া তথা বর্তমানে ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই। পিটিটিআইদের সমস্যা ও রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বঞ্চনার প্রতিবাদে আজ তাঁর সংগঠনের ডাকে কলকাতার ওয়াই চ্যানেলে এক অনশন-অবস্থান কর্মসূচি নেওয়া হয়। যে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন প্রায় দুহাজার পিটিটিআই ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পিন্টুবাবুর কথা অনুযায়ী, তাঁদের কাছে এই কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম অনুমতিপত্র ছিল। কিন্তু, তাঁদের আন্দোলনকে প্রতিহত করতে প্রথম থেকেই বিশাল সংখ্যক পুলিশ দিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছিল। তবুও, কোনোমতেই পিছিয়ে না এসে নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী তাঁরা মিছিল করে এগোতেই, পুলিশ এসে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁদের উপরে। শুরু হয় বর্বরোচিত আক্রমন, পিন্টুবাবুর ‘অস্থানে’ পুলিশ এমনভাবে মারে যে তাঁকে ঘন্টাদুয়েক ‘এমার্জেন্সিতে’ চিকিৎসাধীন থাকতে হয়। এছাড়াও এই আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা, পিন্টু পাড়ুই সহ ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার অ্যাসোসিয়েশনের ৯৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়।

শিক্ষকদের বঞ্চনার প্রতিবাদে আজকের এই কর্মসূচীকে সমর্থন জানিয়েছিল বহু সংগঠনই। এই সমর্থনকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীল, শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মচারী পরিষদের রাজ্য সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী (পুলিশ সুব্রতবাবুকেও গ্রেপ্তার করে জেলে নিয়ে যায়), বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ ও সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অধ্যাপক অনুপম হাজরা, বিজেপি নেতা জয় ব্যানার্জি, শিক্ষা সেলের ডঃ স্বর্ণেন্দু মন্ডল সহ অন্যান্যরা।

পরে, দেবাশীষবাবু সহ অন্যান্যদের সহযোগিতায় ও আইনজীবীদের পরামর্শে অনুপমবাবুদের জামিনের ব্যবস্থা করা হয়। সেই জামিনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লালবাজারে পৌঁছাতেই অনুপম হাজরা, পিন্টু পাড়ুই সহ ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য গ্রেপ্তার করা নেতাদের মুক্ত করা হয়। কিন্তু, জেল থেকে বেরিয়েই কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই।

পিন্টুবাবু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বাম জামানার অবসানে এই পিটিটিআই আন্দোলন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল – তা মেনে নেন প্রায় সকল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞই। অথচ সেদিন এই পিটিটিআই আন্দোলনকে সমর্থন করলেও, আজ সেই আন্দোলন রুখতে এই ভাবে পুলিশ দিয়ে বর্বরোচিত আক্রমন করাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী? সেদিন যদি এই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রবল বাম শক্তিকে সরিয়ে দিতে পারি, তাহলে আমাদের ন্যায্য দাবি না আদায় হলে এই সরকারেরও পরিবর্তন না করা পর্যন্ত আন্দোলন থামাবো না। আজকের এই বর্বরোচিত অত্যাচারের প্রতিবাদে খুব শীঘ্রই বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছি আমরা। সেই আন্দোলনের তীব্রতায় ঘুম উড়ে যাবে বর্তমান রাজ্য সরকারের, আর তা আমরা করব ২১ সে জুলাইয়ের আগেই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!