যেকোন মূল্যে জয়ী বিধায়কদের ধরে রাখা এবং দলের ভাঙন আটকাতে মরিয়া গেরুয়া শিবির কলকাতা বিজেপি রাজনীতি রাজ্য May 5, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – লোকসভা নির্বাচনের পর এ রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের ব্যাপক উত্থান হয়েছিল। তিন থেকে 18 য় পৌঁছে গিয়েছিল গেরুয়া শিবির আর তারপরেই স্বপ্ন দেখা শুরু বাংলা জয়ের। বাংলার শাসন ক্ষমতা কায়েম করতে রাজ্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কিন্তু পাল্লা দিয়ে এরাজ্যে প্রচার করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও প্রায়দিনই এ রাজ্যে প্রচারে থাকতেন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর দেখা গেল, কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলায় গেরুয়া শিবির। যে লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল গেরুয়া শিবির তার কার্যত ভরাডুবি হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য আজকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার গেরুয়া শিবিরের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ আগামী পাঁচ বছরের জন্য বিজেপি বিধায়কদের দলে আটকে রাখা। এই মুহূর্তে বিজেপি প্রধান বিরোধী দল। পাশাপাশি হেরে যাওয়া বিজেপি প্রার্থীরা যাতে গেরুয়া শিবির ত্যাগ করে শাসকদলের দিকে ঝুঁকে না পড়েন, সেকথাও মাথায় রাখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই দেখা গিয়েছে তৃণমূলের ঘর ক্রমাগত ভেঙে চলেছে রাজ্য বিজেপি। দলবদলুদের নির্বাচনে টিকিটও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ এই দলবদলকারীদের বেশিরভাগকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। এরই মধ্যে আবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলবদলকারীদের দলে ফেরার ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন যা খুব স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরের। এতদিন পর্যন্ত দেখা যেত, বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ‘অপারেশন কমল’ নামক একটি বিশেষ কৌশলকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচিত সরকারকে ধরাশায়ী করে ক্ষমতা দখল করেছে। বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার ফেলে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশ থেকে শুরু করে চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরিতেও একই ঘটনা ঘটিয়েছে বিজেপি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কিন্তু বাংলায় উল্টো ছবি। বিধায়ক ভাঙানো তো দূরের কথা, নিজেদের বিধায়কদের আটকে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে 77 জন বিধায়ক যাতে দলে অটুট থাকে, তার জন্য ইতিমধ্যেই ঘনঘন আলোচনা শুরু করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কারণ অতীতে তৃণমূল সরকার গঠনের পর কংগ্রেস এবং বাম দল ছেড়ে একাধিক বিধায়ক গিয়ে শাসক দলে যোগ দিয়েছিল। সেই ছবি যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে সতর্ক নজর রাখছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শোনা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা বাংলার রাজ্য নেতৃত্ত্বের কাছে বার্তা দিয়েছেন, বিধানসভা ভোটের প্রচারে যে ইস্যু অন্যতম ছিল অর্থাৎ রাজনৈতিক হিংসা সেই ইস্যুকেই কাজে লাগাতে হবে আগামী দিনে। তৃণমূলের ওপর চাপ বাড়াতে ইতিমধ্যেই ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলার শাসক-বিরোধী উভয়পক্ষের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি দেখা হচ্ছে, রাজনৈতিক হিংসা সত্ত্বেও দলীয় কর্মীদের মনোবল যাতে ধরে রাখা যায়। রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে কথা বলেছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। দিল্লি থেকে তড়িঘড়ি বাংলায় উড়ে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগত প্রকাশ নাড্ডা। এবং একই সাথে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এই নিয়ে বিজেপি নেতা গৌরব ভাটিয়া। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি যে এখন মোটেই ভালো নয়, সে কথা প্রকাশ্যে। ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরের দিকে অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভুল খবর ছড়িয়ে রাজ্যে অশান্তি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ গ্রহণ করার পরেই জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার কথা। কোনরকম অশান্তি তিনি মানবেন না। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী যদি রাজ্য পরিস্থিতি পাল্টাতে সক্ষম হন, তাহলে কিন্তু চাপ আরো বাড়বে গেরুয়া শিবিরের উপর। আপাতত অবশ্য বিজেপির মূল লক্ষ্য, তাঁদের জয়ী বিধায়কদের ধরে রাখা এবং সেক্ষেত্রে তাঁরা কতটা সফল হয়, সে দিকেই নজর রাখছে ওয়াকিবহাল মহল। আপনার মতামত জানান -