Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

২৬ হাজার চাকরি বাতিল: এবার বড়োসড়ো পদক্ষেপ নিলেন চাকরিহারারা

 
সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে বাতিল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) সম্পূর্ণ প্যানেল দুর্নীতির অভিযোগে বাতিল হওয়ায় একঝাঁক তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন মুহূর্তে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতার দায়িত্ব সামলানো বহু ‘যোগ্য’ প্রার্থীও চাকরি হারিয়েছেন এই রায়ে। এই গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে এবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সরাসরি চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চাকরিহারারা।

এই চিঠিতে তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে দুই বিকল্প দাবি তুলেছেন—হয় তাঁদের পুনর্বহাল করা হোক, নয়তো সপরিবারে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দেওয়া হোক। দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে বসা রাষ্ট্রপতির কাছে এমন আবেদন নিঃসন্দেহে মারাত্মক বার্তা বহন করে। আন্দোলনরত চাকরিহারারা জানিয়েছেন, রাজ্যের প্রতিটি জেলার পোস্ট অফিস থেকে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে পৃথক পৃথকভাবে এই চিঠি পাঠানো হবে। তাঁরা মনে করেন, রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপই এখন তাঁদের শেষ আশার আলো।

সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, যদিও রাষ্ট্রপতির হাতে সরাসরি কোনো বিচারক্ষমতা নেই, তবে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে বিষয়টি বিবেচনা করতে পরামর্শ দিতে পারেন। সেই পরামর্শের ভিত্তিতে অ্যাটর্নি জেনারেল শীর্ষ আদালতের কাছে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারেন। এভাবেই রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মত প্রশাসনিক মহলের।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্ট প্রথমেই পুরো প্যানেল বাতিল করেছিল। এরপর সুপ্রিম কোর্ট সেই রায়কে বহাল রাখে এবং নতুনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেয়। স্কুল সার্ভিস কমিশন ইতিমধ্যেই নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ফের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে, বহু চাকরিহারার আপত্তি—যাঁরা দীর্ঘদিন স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন, তাঁদের আবার নতুন করে পরীক্ষায় বসার কথা বলা অনুচিত এবং অন্যায্য।

এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ, হতাশা ও অনিশ্চয়তার এক জটিল আবহে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতিকে আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাঁরা। শিক্ষকতার মতো সম্মানজনক পেশায় যুক্ত হয়ে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখা বহু মানুষের এখন একটাই প্রশ্ন—ন্যায় কি শুধু কাগজে-কলমে রয়ে যাবে? রাষ্ট্রপতির পদক্ষেপই এবার নির্ধারণ করবে, এই লড়াই কেবল প্রতীকী রইবে নাকি এর ফলস্বরূপ কোনো বাস্তব পরিবর্তন আসবে।

 

Exit mobile version