প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- অবশেষে গতকাল যবনিকার পতন হয়েছে। তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে হুমায়ুন কবীরকে। আর তারপরেই তিনি বলতে শুরু করেছেন যে, বাবরি মসজিদে শিলান্যাসের যে দাবি নিয়ে তিনি লড়াই করছেন, তা তিনি করবেন। এমনকি চলতি মাসের ২২ তারিখে তিনি নতুন দল ঘোষণা করবেন। তবে বারবার রাজ্য রাজনীতিতে বর্ণময় চরিত্র হিসেবেই পরিচিত এই হুমায়ুন কবীরকে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। এর আগেও তিনি বারবার দলবদল করেছেন। ফলে তৃণমূল তাকে সাসপেন্ড করলেও এটা হুমায়ুন কবীর এবং তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়া এবং সেটিংয়ের রাজনীতি নয় তো, তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে চর্চা চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেস ভোটের আগে হিন্দুদের কাছে ভালো হওয়ার জন্য বাবরি মসজিদের ঘোষণা করা হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইলেন না তো? সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিরোধী মহল। তবে হুমায়ুন বাবুর ওপরে যে তার একেবারেই ভরসা নেই, তা স্পষ্ট করে দিলেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহ।
গতকালই তৃণমূলের পক্ষ থেকে সাসপেন্ড করা হয় হুমায়ুন কবীরকে। তারপর তিনি সদর্পে ঘোষণা করেন যে, তিনি বাবরি মসজিদের যে কথা বলেছেন, তা তিনি করে দেখাবেন। শুধু তাই নয়, আগামী ২২ তারিখে তিনি নতুন দল ঘোষণা করবেন। তবে এর পরিপ্রেক্ষিতেই প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী ঘুরিয়ে বুঝিয়ে দেন যে, এর আগে এই হুমায়ুন কবীর ভাগীরথীর জলে ৩০ শতাংশ হিন্দুদের ভাসিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। পরবর্তীতে যখন তা নিয়ে বিতর্ক হয়, তখন তিনি বলেছিলেন যে, তিনি এটা বলতে চাননি, তাকে বলানো হয়েছিল। ফলে এক্ষেত্রেও তিনি বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করছেন, আর তৃণমূল তাকে সাসপেন্ড করছে। কিন্তু তলায় তলায় তৃণমূলের পক্ষ থেকেই কেউ তাকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে রাখেনি তো? আর এই সমস্ত প্রশ্ন নিয়ে যখন রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে, ঠিক তখনই হুমায়ুন কবীরের এই নতুন দল ঘোষণাকে গুরুত্ব দিতে চাইলেন না বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ।
এদিন এই ব্যাপারে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহকে একটি প্রশ্ন করা হয়। আর সেই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে অর্জুনবাবু বলেন, “হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছে, সেটা তার পার্টির ব্যাপার। তবে হুমায়ুন কবীর মমতার বিরুদ্ধে দল করবে, আর সেটা কতটা কার্যকর হবে, সেটা সময়ের ব্যাপার। ও আবার কবে পা ধরে নেবে, তার তো ঠিক নেই।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিক কথাই বলেছেন অর্জুন সিংহ। এটা তৃণমূলের পাতা ফাঁদ হলেও হতে পারে। তৃণমূল ব্যালেন্সের রাজনীতি করতে গিয়ে ২০২৬ এর আগে একদিকে সংখ্যালঘুদের খুশি রাখতে এই বাবরি মসজিদ, আর অন্যদিকে দল থেকে সাসপেন্ড করে হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে হিন্দুদের কাছে ভালো থাকার চেষ্টা করতে পারে। আর হুমায়ুন কবীরও বাইরে দেখাতে পারেন যে, তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। কিন্তু অতীতেও অনেক কথা বলে আবার তৃণমূলে যোগদান করেছেন এই হুমায়ুন কবীর। তাই যতক্ষণ না তিনি নতুন দল করছেন এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সেই ভাবে লড়াই দিচ্ছেন, ততক্ষণ যে এই হুমায়ুনবাবুর ওপর ভরসা করা যাবে না, তা বুঝিয়ে দিলেন অর্জুন সিংহ।
