Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

অভিষেককেও মানছেন না কেষ্ট-কাজল? ওপেন বৈঠকেই চুলোচুলি শুরু? অস্বস্তিতে ঘাসফুল?

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এতদিন যেটা আড়ালে চলছিল এবার হয়ত সেটা প্রকাশ্য চলে এলো। অনুব্রত মণ্ডল দীর্ঘদিন জেলায় ছিলেন না। জেলে ছিলেন। তারপর জেলায় ফিরে আসার পর কাজল শেখের হাতে অনেকটাই কর্তৃত্ব চলে যাওয়ায় তিনি তার অনুগামীদের নিয়ে পরিস্থিতি যাতে তার হাতে আসে, তার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। মাঝেমধ্যেই খবর আসছিল যে, অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখের অনুগামীরা বিভিন্ন জায়গায় দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে। তবে তৃণমূলের যেটা স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমা, যখনই দুই পক্ষের মধ্যে অশান্তি শুরু হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসছিল, তখনই দুই শিবিরের নেতারা এই দাবি করেছিলেন যে, এই সমস্ত কিছুই বিরোধীদের চক্রান্ত। কিন্তু এবার ঘরোয়া মিটিংয়েই যে ঘটনা ঘটে গেল, যেভাবে একেবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই যে দুই নেতা এতদিন বিরোধীনের চক্রান্ত বলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন, তারাই যেভাবে নিজেদের মধ্যে অশান্তিতে জড়িয়ে পড়লেন, এটাকে কি বলবেন তৃণমূল নেতারা? এটাও কি বিরোধীদের চক্রান্ত? নাকি সংবাদমাধ্যমে যে খবর প্রকাশ হয়েছে, সেটা মিথ্যা, গুজব?

আগে জেনে নেওয়া যাক, কি ঘটনা ঘটেছে? ঘটনা যেটা ঘটেছে এবং যে খবর সামনে আসছে, তা অত্যন্ত মারাত্মক। ইতিমধ্যেই খবর এসেছিল যে, আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে প্রত্যেকটি জেলা নিয়ে বৈঠক করছেন, সেভাবেই আজ বীরভূম জেলাকে নিয়ে তিনি বৈঠক করবেন। তবে একটা প্রশ্ন প্রথম থেকেই ছিল যে, সেখানে অনুব্রত মণ্ডল উপস্থিত হবেন তো? কিন্তু দিনের শেষে দেখা গেল অনুব্রত মণ্ডলও যেমন উপস্থিত হয়েছেন, তেমন কাজল শেখও সেখানে রয়েছেন। কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক চললেও, বৈঠকের মধ্যেই লেগে গেল ঝগড়া। মূলত যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, বিশেষ সূত্র মারফত, তাতে জানা যাচ্ছে যে, সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতির দায়িত্বে কে বসবেন, তা নিয়েই ওপেন বৈঠকেই রীতিমতো দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে যায় অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখের মধ্যে। তাও প্রায় ছয় থেকে সাত মিনিট ধরে দুইজনের মধ্যে এই সমস্যা চলছিল, একেবারে প্রকাশ্য মিটিংয়ে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই। অন্তত তেমনটাই খবর পাওয়া যাচ্ছে। পরবর্তীতে অবশ্য তারা নিজেরাই চুপ করে যান। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই বৈঠকেই স্পষ্ট বার্তা দিয়ে জানিয়ে দেন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

আর এই খবর সামনে আসার পরেই খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো দলের সেনাপতি। সেনাপতির সামনে এইভাবে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছেন জেলা স্তরের নেতারা? অবশ্য জড়াবেন নাই বা কেন! হয়ত ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে অশান্তি। আর সেই কারণেই কার ভাগে বেশি টাকা আসবে, কে বেশি এলাকা দখলে রাখবে, তা নিয়েই একটু সমস্যা তৈরি হয়েছে। আসলে তৃণমূল তো কোনো দল নয়, এটা একটা লিমিটেড কোম্পানি। তাই যে সমস্ত বৈঠক হচ্ছে জেলা ধরে ধরে, তার মধ্যে কোনো রাজনৈতিক কথাবার্তা হচ্ছে না। শুধুমাত্র কি করে অবৈধ উপায়ে মানুষের ওপরে অত্যাচার করা হবে, কি করে ভোট লুট করা যাবে, তার একটা ব্লু প্রিন্ট তৈরি হচ্ছে। তাতে এক একজন নেতা এক এক ফর্মুলা বলছেন। আর সেই নিয়েই নিজেদের মধ্যে এই ধরনের চুলোচুলি। তবে বাংলার মানুষ এই সমস্ত কিছু নিয়ে মোটেই ভাবিত নয়। আগামী ২৬ এর নির্বাচনে তারা এই লিমিটেড কোম্পানিকে বিসর্জন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।

Exit mobile version