Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

বাম হোক বা বিজেপি, বিরোধী কণ্ঠস্বরকে এভাবেই দমন করছে পুলিশ? ধুন্ধুমার মেদিনীপুরে!

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে কেউ শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অনাচারের বিরুদ্ধে যে কথা বলবে, তাকেই পুলিশ দিয়ে বাধাদান করা হবে। অথবা মিথ্যে মামলা দিয়ে তাকে আটকে রাখা হবে। এটাই এখন এই রাজ্যের স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই বলেন, তৃণমূলের সঙ্গে বামপন্থীদের একটা সেটিং রয়েছে। যার কারণে বিজেপি কোথাও আন্দোলন করতে গেলেই তাদের বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু বামপন্থীদের সেভাবে বাধাদান করে না এই রাজ্যের প্রশাসন কিন্তু আজ যে চিত্র মেদিনীপুরে দেখা গেল, মানুষের দাবি নিয়ে যে লড়াই আন্দোলনে নামলেন বামপন্থী ছাত্র যুব সংগঠনরা এবং তাকে যেভাবে বাধাদান করলো এই রাজ্যের পুলিশ, তাতেই প্রশ্ন উঠছে যে কেন বিরোধী কণ্ঠস্বরকে সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখছে না এই রাজ্যের প্রশাসন? কেন বারবার বিরোধীদের লড়াই করার, আন্দোলন করার গণতান্ত্রিক অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এই রাজ্যের বুকে?

আজ মেদিনীপুরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে একাধিক দাবি নিয়ে জেলাশাসকের দপ্তর অভিযান করার কথা ছিল বামপন্থী ছাত্র এবং যুব সংগঠনের। কিন্তু স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই অন্যান্য জেলাতে যেমন বিরোধীরা কর্মসূচিতে শামিল হলে তাদের প্রশাসন পুলিশ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়, ঠিক একইভাবে আজকে মেদিনীপুরেও সেই চিত্র দেখা গেল। বামপন্থী ছাত্র এবং যুব সংগঠনের বেশ কিছু দাবি ছিল। যার মধ্যে ছিল, সরকারি শূন্য পদে স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ, দুর্নীতি এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি। মূলত মানুষের মধ্যে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোড়ন তৈরি হচ্ছে, যে বিষয়গুলো প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি করেছে, সেই বিষয়গুলো নিয়েই আজ তারা আন্দোলনে নেমেছিলেন। কিন্তু জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে যেতেই পুলিশ তাদের বাধাদান করে। পরবর্তীতে গায়ের জোরে সেই দরজা ঠেলে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন বিরোধী দলের ছাত্র এবং যুব সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে তারা জেলা শাসকের দপ্তরে গিয়ে ডেপুটেশন দেয়। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এই রাজ্যে বিরোধীদের প্রত্যেকটি আন্দোলনের ক্ষেত্রেই পুলিশের এই অতি সক্রিয়তা কেন?

বামপন্থী ছাত্র এবং যুব সংগঠনের দাবি, মানুষের মনের দাবি নিয়ে তারা রাজপথে নেমেছেন। কলেজগুলিতে ছাত্র ভোট হচ্ছে না। যার ফলে কলেজগুলি দুষ্কৃতীদের আতুড়ঘর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই ছাত্রভোটের দাবিতেই তারা আজ আন্দোলনে নেমেছেন। এই রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্নীতি ভরে গিয়েছে। সর্বত্র স্বজন-পোষণ চলছে। তাই সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে মানুষের কথা তুলে ধরতেই তারা এই ডেপুটেশন কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও পুলিশ যেভাবে তাদের বাধাদান করলো এবং গায়ের জোর দেখালো, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এই রাজ্যের বুকে বিরোধী শক্তিকে শেষ করার জন্য সব রকম চেষ্টা করছে তৃণমূলের প্রশাসন। যা গণতন্ত্রকে বারবার করে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে বলেই মত বিরোধীদের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নবান্ন অভিযান থেকে শুরু করে জেলায় জেলায় জেলা শাসকের দপ্তর অভিযান। সব ক্ষেত্রেই বিরোধীরা কোনো কর্মসূচি করলেই পুলিশ তাদের বাধাদান করে। আসলে এই তৃণমূল সরকারের প্রশাসনকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কোথাও বিরোধীদের মাথা তুলতে দেওয়া যেন না হয়। কারণ বিরোধীরা তাদের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর নিয়ে সোচ্চার হলেই শাসক চাপে পড়ে যাবে। শাসকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ অবগত হয়ে যাবেন। তাই বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, বিজেপি বলে কথা নেই। এই রাজ্যে যারাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তাদেরকেই কি করে স্তব্ধ করতে হয়, কি করে আন্দোলনকে বন্ধ করতে হয়, তার জন্য পুলিশকে লেলিয়ে দিয়ে জেলা থেকে শুরু করে খাস কলকাতা, বিভিন্ন জায়গায় চলছে প্রশাসনিক জোরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বন্ধ করার প্রক্রিয়া। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেই দাবি রাজনৈতিক সমালোচকদের।

Exit mobile version