Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

বাংলা ভাষায় কথা বললেই জেলে পাঠানো হচ্ছে? সরকারি অনুষ্ঠানে একি বলে যাচ্ছেন মমতা?

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ভাষাকে বাঁচানোর জন্য দলকে পথে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে সরকারি অনুষ্ঠানেও বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি যেভাবে বাংলা ভাষার ওপর ভাষা সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ করলেন এবং ঘুরিয়ে যারাই বাংলা ভাষায় কথা বলছে তাদের জেলে পাঠানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন, তাতে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বজ্ঞান নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিজেপির দাবি, ২০২৬ এ কোনোভাবেই ভোটে জেতা যাবে না। তাই এখন বাংলায় এবং বাঙালি সিমপ্যাথিকে কাজে লাগিয়ে নতুন ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবদিক থেকেই চূড়ান্ত মিথ্যাচার করছেন তিনি। আর সেই মিথ্যাচারের ক্ষেত্র হিসেবে সরকারি মঞ্চকে ব্যবহার করতেও বাকি রাখছেন না এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলেই অভিযোগ করছে বিজেপি।

প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরেই এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অভিযোগ করছেন যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিরা হেনস্তা হচ্ছে। এমনকি বাঙালিরা অন্য রাজ্যে নিরাপদ নয় বলেও সোচ্চার হচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আগামী ২৭ জুলাইয়ের পর থেকে প্রত্যেক শনি এবং রবিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলা ভাষার ওপর যে নির্যাতন চলছে এবং বাঙ্গালীদের যেভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে তৃনমূল কংগ্রেস। আর মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রোগ্রাম বেঁধে দেওয়ার পরেই বিরোধীরা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে যে, এখন এই বিষয়কে কাজে লাগিয়েই বাঙ্গালীদের মন পেতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজিয়েছেন, তবে সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চেও তিনি যেভাবে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার কথা বললেন, তাতেই স্পষ্ট যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন নতুন করে বিজেপি বিরোধীতার অঙ্গ হিসেবে বাংলা এবং বাঙালিকে হেনস্থা করা হচ্ছে, এই বিষয়টিকে কাজে লাগাতে চাইছেন।

এদিন মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রয়াণ বার্ষিকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বাংলা ভাষার উপর সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সকলকে সম্মান করেই বলছি, বাংলা ভাষার ওপরে আজকে ভাষা সন্ত্রাস চলছে এবং বাংলা ভাষায় যারা কথা বলেন, তাদের ওপর অত্যাচার চলছে। প্রায় ৩০ কোটি লোক বাংলা ভাষায় কথা বলেন। আর আজকে বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাকে জেলে নিয়ে যাওয়া হবে, এটা আমি মানতে পারছি না। আমি কেন, আপনারা কেউই মানতে পারছেন না। তাই এটা নিয়ে আমাদের সর্বস্তরের প্রোগ্রাম করা উচিত। এটা আমার একার নয়, এটা সবার।”

বিজেপির দাবি, যে বাংলা এক কালে গোটা দেশকে পথ দেখাত, আজকে সেই বাংলাকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছেন এই রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় যেভাবে তার সরকারের আমলে দুর্নীতি হচ্ছে, যেভাবে বাংলায় থাকা মানুষরা প্রতিনিয়ত অত্যাচারিত শিকার তৃণমূল সরকারের পুলিশ প্রশাসনের দ্বারা, তাতে তিনি বিজেপি শাসিত রাজ্যের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে পারছেন কি করে? তিনি এই কর্মসূচি করলেই গোটা দেশের মানুষ হাসবে। কারণ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি বাংলার মানুষকে সুশাসন দিতে ব্যর্থ। সবথেকে বেশি বাংলার মানুষরা যদি অবহেলিত হন, তাহলে তা পশ্চিমবঙ্গেই হচ্ছেন। তাই ঘুরিয়ে সরকারি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্তরের মানুষকে নিজের বেঁধে দেওয়া রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগদান করার ইঙ্গিত দিলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সমস্ত বক্তব্যে কেউ প্ররোচিত হবেন না। তার সরকারের আমলেই সব থেকে বেশি বাংলার মানুষরা শোষণ এবং শাসনের শিকার। তাই ভাষা সন্ত্রাস নয়, বাংলা থেকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করতে পারলেই বাঙালিরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

Exit mobile version