প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই, তা আবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। গতকাল দুর্গাপুরে এক বেসরকারি মেডিকেল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের গণধর্ষণের খবর সামনে এসেছে। স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধীরা প্রতিবাদ শুরু করেছে। তাদের বক্তব্য যে, মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাপারে কেন বিবৃতি দিচ্ছেন না? অবশেষে আজ উত্তরবঙ্গ যাওয়ার আগে সেই ব্যাপারে বিবৃতি দিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। কিন্তু বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি যে কথা বলে বসলেন, তাতে আরও দ্বিগুণ ভাবে তৈরি হয়ে গেল বিতর্ক। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন যে, এখানে নারী নিরাপত্তা সবথেকে বেশি সুনিশ্চিত, সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরের এই ঘটনার পর আজব যুক্তি দিয়ে বসলেন। তার বক্তব্য, বেশি রাতে মেয়েদের বাইরে বেরোতে দেওয়া উচিত নয়। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
বলা বাহুল্য, আরজিকর কান্ডের পর রাজ্যে আবার ঘটে গিয়েছে এক বীভৎস ঘটনা। দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এক পড়ুয়া খাবার নিতে বাইরে বেরিয়ে ছিলেন। আর ফেরার পথে দুই তিনজন যুবক তার পথ আটকে দেয়। তারপর তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আর সেই ব্যাপারেই আজ প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এমন এক মন্তব্য করে বসেছেন, যার ফলে বিরোধীরা আরও বেশি করে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পেয়ে গেল।
এদিন উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এক তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “স্তম্ভিত করে দেওয়ার মত ঘটনা। ওই মেয়েটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ছিল। বেসরকারি কলেজে কার দায়িত্ব? রাত সাড়ে বারোটায় বেরোলো কি করে? আমি যতদূর জানি, জঙ্গলের মধ্যে ঘটেছে। সাড়ে ১২ টায় কি হয়েছে, জানি না। তদন্ত চলছে। আমি হতবাক বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলিকে সতর্ক হতে হবে, পড়ুয়াদের খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে রাতের বেলায় বাইরে বেরতে দেওয়া উচিত নয়। নিজেদের রক্ষা করতে হবে। আমি প্রাথমিক যে রিপোর্ট পেয়েছি, পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। কেউ রেহাই পাবে না। যেই দোষী হোক না কেন, কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।” আর একজন মুখ্যমন্ত্রী কি করে মহিলাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, কি করে তিনি বলতে পারেন যে, বেশি রাতে মহিলাদের বাইরে বেরোনো উচিত নয়! তাহলে তার রাজ্যে নারী নিরাপত্তা নেই, সেটা তো তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই আরও একবার স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য সামনে আসার পর কটাক্ষ করে তেমনটাই বলছে বিরোধীরা।