প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে একটি ঐতিহাসিক রায় সামনে এসেছে। যেখানে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে জয়লাভ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি। ২০২১ এ বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করেছিলেন মুকুল রায়। পরবর্তীতে তিনি তৃণমূলে যোগদান করলেও তার বিধায়ক পদ অটুট ছিল। এমনকি স্পিকারের কাছে এই ব্যাপারে বারবার বিজেপি অভিযোগ জানালেও, স্পিকার গুরুত্ব দেননি। বরঞ্চ বিধানসভার ভেতরে মুকুল রায়কে বিজেপি বলেই চালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি, যাতে তৃণমূলের সুবিধে হয়। অবশ্য বাইরে যিনি তৃণমূলের পতাকা হাতে নিচ্ছেন, সেটা কেন দেখতে পাচ্ছেন না বিধানসভার অধ্যক্ষ? তাহলে কি তিনি দলদাসের মত কাজ করছেন? এই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে উঠেছিল। যার ফলে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং অম্বিকা রায়। অবশেষে গতকাল কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, মুকুল রায়ের পদ খারিজ করা হয়েছে। আর তারপরেই শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দেন যে, বিজেপি টিকিটে জেতার পর বাকি যে সমস্ত বিধায়করা বিধায়ক পজ থেকে পদত্যাগ না করে তৃণমূলে যোগদান করেছেন, এবার তাদেরকেও জব্দ করবেন তিনি। আর যেমন কথা, তেমন কাজ। আগামী সোমবারই দলবদলু আরও চার বিধায়ককে জব্দ করতে কলকাতা হাইকোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
এই রাজ্যের বুকে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর একটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছিল দল ভাঙানোর। বিরোধীদের টিকিটের জেতার পরেও একের পর এক জনপ্রতিনিধিদের নিজেদের দিকে টানতে শুরু করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু যারা একটি দলের প্রতীকে জিতেছে, মানুষ যাদেরকে প্রতীক দেখে ভোট দিয়েছে, তারা ভোটে জেতার পর কেন অন্য দলে যাবে? কেন তারা নিজের বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করবেন না? এই প্রশ্ন উঠেছিল। তবে বাম এবং কংগ্রেস যখন বিরোধী দলে ছিল, তখন তারা চিৎকার চেঁচামেচি করলেও, এই ব্যাপারে তৃণমূলকে জব্দ করতে পারেনি। তবে ২০২১ সালে মুকুল রায় দলবদল করার পরেও যেভাবে তাকে বিধানসভার ভেতরে বিজেপির বিধায়ক বলে চালানোর চেষ্টা হয়েছে এবং স্পিকার তাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে সেই মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে পৌঁছে গিয়েছিল বিজেপি। অবশেষে গতকাল তারা ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে। আর তারপরেই বাকি যে সমস্ত বিধায়করা দলবদল করেছে অথচ বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেননি, তাদের জব্দ করার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। অবশেষে আজ আরও বড় পদক্ষেপের কথা জানিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
এদিন মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের প্রসঙ্গে দলবদলু আরও চার বিধায়ককে জব্দ করতে তিনি যে হাইকোর্টে যাচ্ছেন, তা জানিয়ে দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “সোমবার দিনই হাইকোর্টে যাচ্ছি। হরকালি প্রতিহার, তন্ময় ঘোষ, তাপসী মন্ডল, সুমন কাঞ্জিলাল।” অর্থাৎ শুধু মুকুল রায় নয়, মুকুল রায় যে দোষে দুষ্ট হয়ে তার বিধায়ক পদ খারিজ হয়েছে, সেই একই ঘটনা এই চার বিধায়কের সঙ্গেও যে ঘটবে, সেই ব্যাপারে ওভার কনফিডেন্ট রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। যেভাবে তারা দলবদল করেছেন, কিন্তু বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেননি, এবার সেই বিষয় নিয়ে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের পর এই চার দলবদলু বিধায়ককে জব্দ করতে আগামী সপ্তাহেই হাইকোর্টে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী।
