প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একসময় তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা ছিলেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি দলবদল করে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের আন্দোলনের জন্যই একসময় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন বলে অনেকে দাবি করেন। কিন্তু নন্দীগ্রামের আন্দোলন নিয়ে কোনো রূপ বিতর্ক না থাকলেও সিঙ্গুরের আন্দোলন নিয়ে এখন মাঝেমধ্যেই প্রশ্ন ওঠে। সেখানকার মানুষরা মাঝেমধ্যেই আফসোস করে বলেন যে, সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে আন্দোলন, তা অনেকাংশেই ভুল ছিল। এমনকি টাটাকে যেভাবে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যেভাবে বাংলার শিল্প সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, তার ফলেই আজকে পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের এই দুরাবস্থা বলে দাবি করে বিজেপি। শুধু তাই নয়, এখন প্রত্যেকটি সমাবেশে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করছেন যে, বিজেপি ক্ষমতায় এলে টাটাকে ফিরিয়ে আনা হবে। আর তার মাঝেই সিঙ্গুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনে তিনি তৃণমূলের সাংসদ থাকলেও একদিনও সেখানে যাননি বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরে একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন অনশন আন্দোলন করেছিলেন। জোর করে শিল্পের জন্য জমি কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে তার এই আন্দোলন তাকে ক্ষমতার অনেকটা কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিল। তবে বর্তমান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সেই সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সাংসদ ছিলেন। তিনি মাঝে মধ্যেই এখন দাবি করেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় এই সিঙ্গুর আন্দোলন করলেও, তিনি একদিনও সেখানে যাননি। কারণ তিনি এই আন্দোলনকে সমর্থন করেননি। কেননা এইভাবে কোনো শিল্পগোষ্টীকে তাড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্তে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের সঙ্গে সামিল হতে পারেননি। আর এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেই শুভেন্দু অধিকারী আরও দীপ্ত কন্ঠে জানিয়ে দেন যে, সিঙ্গুরের আন্দোলন কেউ সমর্থন করেননি। এমনকি তিনিও সেখানে যাননি। আর যদি সেই সিঙ্গুরের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনে তার একটা ছবি কেউ দেখাতে পারেন, তাহলে তিনি কান ধরে ওঠবস করবেন।
এদিন বর্ধমানের সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আর সেখানেই তিনি বলেন, “কেউ সিঙ্গুরের আন্দোলন সমর্থন করেনি। মমতা ব্যানার্জি ছামড়া বেঁধে বসেছিলেন। আমি ওনার পার্টির সাংসদ ছিলাম। একদিনও আপনি আমাকে ওখানে দেখাতে পারবেন না। একটা ছবি দেখান, কান ধরে ওঠবস করব।” পাশাপাশি শুভেন্দুবাবু আরও দাবি করেন যে, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সহনশীল মানুষ ছিলেন জন্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আন্দোলন করতে বলেছিলেন। তবে সেই সময় যদি জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী থাকতেন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই আন্দোলন করার সুযোগটুকুও তিনি দিতেন না।
