প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালো মতই বুঝে গিয়েছেন যে, এসআইআর আর বন্ধ হবে না। যে পদ্ধতিতে এসআইআর চলছে, যে গতিতে চলছে, তাতে তাকে আটকানো মুশকিল। আর এসআইআরকে না আটকালে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকাতে হবে না, তা বুঝতে পেরেই তিনি কিছুদিন আগে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে এসআইআর স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে কারণ হিসেবে তিনি দেখিয়েছেন যে, এসআইআরের কাজ করতে গিয়ে প্রচুর বিএলও প্রাণ হারাচ্ছেন। তারা এত চাপ নিতে পারছেন না। যার ফলে এই প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখা হোক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চিঠিকে গ্রহণ করে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বলে খবর সামনে আসেনি। আর কোনোভাবেই যখন এসআইআর বন্ধ হচ্ছে না, তখন কি ঘোমটার নীচে খ্যামটা নাচের মত মুখোশের আড়ালে মুখটাকে রেখে কিছু মানুষকে পথে নামিয়ে দিতে চাইছে এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস?
কি ঘটনা ঘটেছে? এখন তৃণমূলের মুখে একটাই বুলি শোনা যাচ্ছে যে, এসআইআর হওয়ার ফলে প্রচুর মানুষ আত্মহত্যা করছে, তারা মানসিক অবসাদে ভুগছেন। এমনকি বিএলওরা এত চাপ না নিতে পারে প্রাণ হারাচ্ছেন বলে দাবি করছে রাজ্যের শাসক দল। পাল্টা বিরোধীদের প্রশ্ন যে, তৃণমূলের সরকারের উচিত, অন্যান্য রাজ্যের মত এই এসআইআরের কাজে গতি আনার জন্য ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করা। ফলে তারা সেই কাজ করছে না জন্যই তো বিএলওদের বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে। তাই বিএলওরা যদি এই কাজের চাপের কারণে প্রাণ হারান, তাহলে তার জন্য তো দায়ী তৃণমূলের সরকার। আর এসবের মধ্যেই খবর পাওয়া গেল যে, আজ বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটি নামে একটা নতুন কমিটি পথে নামছে এসআইআর বন্ধ করার দাবিতে। এক্ষেত্রে তারা কলেজ স্ট্রিট থেকে নির্বাচন কমিশনের দপ্তর পর্যন্ত একটি মিছিল করবেন। তাদের একটাই দাবি যে, বিএলওরা অনেকেই এই কাজের চাপ না নিতে পেরে মারা যাচ্ছেন। যার ফলে এসআইআর প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হোক। তবে নতুন করে গজিয়ে ওঠা এই কমিটির নেপথ্যে কারা রয়েছে? তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন একটা বড় অংশ।
এদিকে বিএলও ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির এই কর্মসূচির পাল্টা বিরোধিতা করা হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, এসআইআরের বিরোধিতা করে কেন তৃণমূল পন্থী শিক্ষক সংগঠন থেকে শুরু করে অন্যান্যরা পথে নামবে, যেখানে এসআইআরের অর্ধেকের বেশি কাজ সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে। তখন সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করানোর কোনো অর্থ হয় না।এক্ষেত্রে তৃণমূল যে নিজেদের সুবিধে করার জন্য এবং এসআইআরকে বানচাল করতেই এই কর্মসূচি চালাচ্ছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিএলও ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিএলও ঐক্য মঞ্চ হোক বা বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটি, দুটোই কিন্তু খুব সম্প্রতি গজিয়ে ওঠা কমিটি। তবে যখন এসআইআর পুরো গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন তাকে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া এই বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে এবং যেভাবে তারা আজকে রাস্তায় নামছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, তাদের সঙ্গে তৃণমূলের সুর মিলে যাচ্ছে। ফলে তারা হয়ত রাজনৈতিক রঙ নিয়ে পথে নামছে না। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য যে তৃণমূলকে রক্ষা করা এবং তৃণমূল নেত্রীর দাবি মোতাবেক আন্দোলন করা, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির আজকের এই এসআইআর বন্ধের দাবিতে যে আন্দোলন, তাকে ঘোমটার নীচে খ্যামটা নাচন বলা ছাড়া অন্য কিছু আখ্যা দিতে পারছেন না রাজনৈতিক সমালোচকরা।
