প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এতদিন বিজেপি দাবি করে এসেছে যে, পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল সরকার। এক্ষেত্রে অবৈধ বাংলাদেশিদের দ্বারা পশ্চিমবঙ্গ ভরে গিয়েছে বলেও বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতারা। তবে তাদের সেই অভিযোগকে অনেকেই পাত্তা দেননি। কিন্তু এসআইআর শুরু হওয়ার পর যেভাবে সীমান্তে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশীদের ওপার বাংলায় ফিরে যাওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে, তাতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, বিজেপি নেতারা সত্যি কথাই বলেছিলেন। প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যে, এতদিন এই রাজ্যের বুকে অবৈধ বাংলাদেশি বা অনুপ্রবেশকারীরা বহাল তবিয়তে ছিলেন। তবে এসআইআর হওয়ার ফলে তারা এখন বিতাড়িত হতে শুরু করেছেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তেও যাতে তাদের রেখে দেওয়া যায়, তার জন্য কি দরদ উথলে পড়ছে তৃণমূল নেতাদের? কেননা সীমান্তের একটি তথ্য আজ প্রকাশ্যে এনে রীতিমত চমকে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসআইআরের যে গতি, তাতে কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট বিরোধীরা। শুধু তাই নয়, তারা যে দাবি এতদিন করে এসেছিলেন যে, এসআইআর হলে প্রচুর অবৈধ বাংলাদেশিদের নাম প্রকাশ্যে চলে আসবে, যাদেরকে এতদিন মদত দিয়ে রেখেছিল তৃণমূল সরকার। তাদের সেই দাবি কিছুটা হলেও সত্যতার রূপ পেয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা সীমান্তে এই এসআইআরের আবহে প্রচুর অবৈধ বাংলাদেশি বা অনুপ্রবেশকারী ওপার বাংলায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আর আশ্চর্যজনকভাবে তারা যখন ফিরে যাচ্ছেন, তারা যখন বুঝতে পারছেন যে, তারা অবৈধভাবে এতদিন বাংলায় ছিলেন, কিন্তু এখন এসআইআর হলে তারা আর থাকতে পারবেন না, তখন সীমান্তে তাদেরকে শেষ মুহূর্তেও কি আশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা করছেন এই রাজ্যের শাসক দলের নেতারা? বসিরহাট সীমান্তের কথা তুলে ধরে সেই সমস্ত অনুপ্রবেশকারীদের বসে থাকার জায়গায় তাদের ছাউনি দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তৃণমূল বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আর সেখানেই অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেন তিনি। সুকান্তবাবু বলেন, “যে ঘটনা ঘটলো বসিরহাট সীমান্তে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি স্বীকৃত সংগঠন। তারা শান্তিপূর্ণভাবে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারা একটাই কথা বলেছিলো যে, যারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী, তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। আর আমি আজকে জানতে পেরে অবাক হলাম, ওখানে যারা বসে আছে, যারা বাংলাদেশী নাগরিক, তাদের খাওয়ানো, বসার ব্যবস্থা, মাথার ওপর আচ্ছাদনের ব্যবস্থা, সব তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য করছে।” আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, তৃণমূলের সেই পঞ্চায়েত সদস্যের এত আগ্রহ কেন এই সমস্ত বাংলাদেশীদের প্রতি? তাহলে বিজেপি এতদিন ধরে যে দাবি করেছিলো, সেটাই তো সত্যি হয়ে যাচ্ছে? তাহলে কি এই সমস্ত বাংলাদেশীদের এতদিন ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস? যে কারণে এখন এসআইআরের ফলে তারা যখন ওপারে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন, তখনও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা বোধ দেখাচ্ছেন তৃণমূলের এই সমস্ত নেতারা? আর তাদের এই নির্লজ্জতার জন্যই যে পশ্চিমবঙ্গের ডেমোগ্রাফি ক্রমশ পরিবর্তিত হতে শুরু করেছিল, সেই ব্যাপারে সোচ্চার হচ্ছে বিরোধীরা।
