প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
গতকাল ঝাড়গ্রামের দলীয় মঞ্চ থেকে সরাসরি জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করে বসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এতটাই সীমা ছাড়িয়ে যান যে, নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির ক্রীতদাস বলেও আক্রমণ করতে দুবার ভাবেননি। স্বাভাবিকভাবেই একটি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হয়ে কি করে তিনি নির্বাচন কমিশনকে এইভাবে আক্রমণ করতে পারেন, কিভাবে সংবিধানকে চ্যানেল জানাতে পারেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যদিও বা বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর এই সমস্ত কথা শুনে বিন্দুমাত্র বিচলিত নয়। কারণ তারা এর আগেও দেখেছেন যে, যখনই মুখ্যমন্ত্রী কোনো কিছু পছন্দ হয়নি, তখনই তিনি আদালত থেকে শুরু করে সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। তবে এবার তিনি যা করেছেন, তাতে যদি তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আরও প্রশ্রয় পেয়ে যাবেন। তাই এবার নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া। ফলে কমিশনের পক্ষ থেকে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বস্তুত, গতকাল নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে একাধিক মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির বন্ডেড লেবার বলেও আক্রমণ করেন তিনি। এমনকি তার সরকারের যে সমস্ত আধিকারিককে সাসপেন্ড করার কথা কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিনি সেটা মানবেন না বলেও বিদ্রোহ ঘোষণা করেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। স্বাভাবিক ভাবেই একেবারে নির্বাচন কমিশনকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী অমান্য করার কথা প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বললেন, তাতে কি তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? এরপরেও কি চুপ করে বসে থাকবে নির্বাচন কমিশন? যদি এক্ষেত্রে কমিশন নীরবতা পালন করে, তাহলে সংবিধানকে অমান্য করেও যে শাস্তির মুখে পড়তে হয় না, সেটা প্রমাণিত হয়ে যাবে। তাই কমিশনের দায়িত্ব, মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার। অন্তত তেমনটাই দাবি উঠছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। আর সেই ব্যাপারেই এবার প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুবাবু বলেন, “এই মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান মানেন না। গা জোয়ারি করে পশ্চিমবঙ্গকে রসাতলে পাঠিয়েছেন। রোহিঙ্গা, বাংলাদেশী মুসলমানদের বাঁচানোর জন্য বাংলা ও বাঙালি ড্রামা করছেন। অর্থাৎ তিনি নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙ্গুল তোলার সাথে সাথে সংবিধানের ৩২৪ থেকে ৩২৯ অনুচ্ছেদ, তাকেই আক্রমণ করছেন। নির্বাচন কমিশন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক, এটাই আমাদের দাবি।”
এখন সকলের একটাই প্রশ্ন যে, নির্বাচন কমিশন এখন কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে? বিরোধীরা মুখিয়ে আছে যে, এত বড় আক্রমণ করার পরেও কি করে মুখ্যমন্ত্রীকে ছাড় দেওয়া হয়? তিনি যত বড়ই ব্যক্তি হোন না কেন, আইন তো সকলের জন্য সমান। তাই যেভাবে নির্বাচন কমিশনকে মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণ করেছেন, তাতে এখন কারওর কিছু করার নেই। এক্ষেত্রে একমাত্র কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে নির্বাচন কমিশন। ফলে কমিশনের ঘাড়েই বল ঠেলে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীও অপেক্ষা করছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর এই বেলাগাম মন্তব্যের পর কমিশন কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে! যার দিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্যবাসী।