প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২৬ এর নির্বাচনের আগে এসআইআর এবং ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনী প্রক্রিয়ার ক্রমাগত বিরোধিতা করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির দাবি, এই ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনী হলে রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ যাবে, মৃত ভোটারদের নাম বাদ যাবে। আর তাতেই তৃণমূলের ক্ষমতায় থাকা হবে না জন্যেই তারা এখন ভোটার তালিকায় দুধ এবং জল আলাদা করতে দিতে চাইছে না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নিচ্ছে একের পর এক পদক্ষেপ। অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের কথা অনুযায়ী যদি আধিকারিকরা পথ চলতে শুরু করেন এবং তারাও যদি চালাকি করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হতে পারে। কিন্তু অনেকেই ভেবেছিলেন যে, চালাকি করে পার পাওয়া যাবে। তবে এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে নিলো, তাতে আধিকারিক মহলে তো বটেই, একেবারে নবান্নেও তোলপাড় করা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে।
কি ঘটনা ঘটেছে? ইতিমধ্যেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর সেখানেই জানানো হয়েছে যে, ভোটার লিস্টে কারচুপি সংক্রান্ত ঘটনার কারণে বারুইপুর পূর্ব এবং ময়নার ERO কে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই দুই জায়গার AERO কেও সাসপেন্ড করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও আরও চারজনের বিরুদ্ধে যাতে এফআইআর দায়ের করা হয়, তার জন্যও নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর এই খবর সামনে আসতেই রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে প্রশাসনিক মহলে।
বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, এখনও সময় আছে, রাজ্যের প্রশাসনের হয়ে, তৃণমূলের হয়ে যারা তাবেদারি করছেন, তারা এখন থেকেই সমঝে যান। কারণ নির্বাচন কমিশন এবার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই যারা ভোটার তালিকায় কারচুপি করে ভাবছেন যে, তৃণমূলের সুবিধা করে দেবেন, সেই সমস্ত প্রশাসনিক আধিকারিকদের এই বারুইপুর পূর্ব এবং ময়নার ঘটনার দিকে একটু তাকানো উচিত। যদি নিজের ক্যারিয়ারে কালি লাগাতে না চান, তাহলে অন্তত নিরপেক্ষভাবে কাজ করা উচিত বাংলার গণতন্ত্রের স্বার্থে। কারণ দিনের শেষে তৃণমূলের তাবেদারি করতে গিয়ে নিজেদের ক্ষতি করলে জনমানসে এভাবেই ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে বলেই দাবি পদ্ম শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশাসনের ভেতরে অনেকেই যে রয়েছেন তৃণমূলের হয়ে কাজ করার জন্য, তা তো দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। তাই নির্বাচন কমিশন সেদিক থেকে গাফিলতি খুঁজে পেয়েছে জন্যেই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এইরকম কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই যারা এখনও পর্যন্ত শাসকের হয়ে তাবেদারি করবেন বলে ভাবছিলেন, তারা এই ঘটনার পর অনেকটাই নিজেদেরকে শুধরে নেবেন। আর আধিকারিক স্তরে যদি নিজেদের শুধরে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়, তাহলে তৃণমূল কোনোমতেই ভোটার তালিকায় অস্বচ্ছতার পথ অবলম্বন করতে পারবে না এবং দিনের শেষে রাজ্যে তৃণমূলের বিদায়ের পথ নিশ্চিত হয়ে যাবে বলেই দাবি রাজনৈতিক সমালোচকদের।