Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে আদতে নেত্রীর মুখ পড়েছেন ফিরহাদ, চাপ বাড়ছে মমতার!

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – প্রথম দিকে অপারেশন সিঁদুরের পক্ষে থেকে তারা দেশের পক্ষে আছে, এইরকম একটা বিষয় দেখানোর চেষ্টা করছিলেন তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, ততই তাদের আসল মুখোশ সামনে আসতে শুরু করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে নরেন্দ্র মোদীকে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে কুরুচিকর আক্রমণ থেকে শুরু করে সম্প্রতি তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বিতর্কিত মন্তব্য, এমনিতেই তৃণমূলের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। আর তার মধ্যেই এবার সেনাবাহিনীর প্রশংসা করলেও, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে যে সমস্ত কথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম বলে বসলেন, তাতে আরও বড় অস্বস্তি গ্রাস করলো তৃণমূলকে। ববি হাকিম নিজের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে সেনাবাহিনীর ঢালাও প্রশংসা করলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই এক বালতি দুধে এক ফোঁটা চোনা মিশিয়ে দিলে যেমন গোটা দুধটাই নষ্ট হয়ে যায়, ঠিক তেমনই তার একটি মন্তব্যই বুঝিয়ে দিল যে, তিনি ঠিক কিভাবে কি বলতে চেয়েছেন!

 

এদিন ববি হাকিম বলেন, “ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের জীবন দিয়ে তাদের ক্ষমতা দিয়ে পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এখানে মহান কিছু করেননি। বরং একটি বৃহৎ দেশের ভয়ে কাপুরুষের মত সেনাবাহিনীকে থামানো হয়েছে, এটা ঠিক হয়নি। আমাদের সেনাবাহিনী ভারতের সম্মান রক্ষা করেছে আমরা আজ তাদের স্যালুট জানাচ্ছি।” আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার এই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের এই বক্তব্য নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে প্রথম কথা, প্রধানমন্ত্রী মহান কিছু করেছে, কি করেননি, তার সার্টিফিকেট অন্তত ববি হাকিমের কাছ থেকে নিতে হবে না। তিনি কলকাতা শহরের একটা এলাকাকে দেখিয়ে যেভাবে সেই এলাকাকে মিনি পাকিস্তান বলে সম্বোধিত করেছেন, তাতে তার কতটা দেশ ভক্তি রয়েছে, তা গোটা রাজ্যের মানুষের কাছেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর দ্বিতীয় কথা, এই অপারেশন সিঁদুরের পর অনেকেই, এমনকি তার মধ্যে তৃণমূলের অনেক সোশ্যাল মিডিয়া সেলের নেতারাও রয়েছেন, যারা ইন্দিরা গান্ধীর কথা তুলে ধরছেন। ইন্দিরা গান্ধীর সময় কিভাবে জবাব দেওয়া হয়েছিল, সেই কথা তুলে ধরে তখনকার প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করছেন। তাহলে তখনকার সময় যদি ইন্দিরা গান্ধীর ক্রেডিট হয়, তাহলে এখনকার সময় কেন নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্রেডিট হবে না! শুধুমাত্র বিরোধীতা করতে হবে জন্যই কি ববি হাকিমদের এই ধরনের বিরোধিতা, এই ধরনের আক্রমণ! তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।

 

অনেকে আবার এটাও বলছেন যে, ববি হাকিমের সাহস হয় কি করে এই ধরনের কথা বলার? সেনাবাহিনীকে থামানো হয়েছে কাপুরুষের মত, এটা তিনি কেন বললেন? আজকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে সেই দেশের কোমর ভেঙে দিয়েছে ভারত। আর এর প্রধান পরিকল্পনায় ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি ছিলেন বলেই আজকে পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিতে পেরেছে ভারত। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানালেও ভারত ঠিকমত সবটা করেনি বলে প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করে আসলে নিজের নেত্রীর কাছে এই নম্বর বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন ববি হাকিম। আসলে দেশের ভালো হচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বিজেপি সরকারের আমলে, এটা কোনোমতেই মেনে নিতে পারছে না তৃণমূল। আর সেই কারণেই অপারেশন সিঁদুরের পর তারা দেশের পক্ষে, দেশের সরকারের পক্ষে আছে বলে প্রথম দিকে মন্তব্য করলেও, ধীরে ধীরে তাদের এই ধরনের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে মুখ আর মুখোশ আলাদা হয়ে যাচ্ছে বলেই দাবি বিরোধীদের।

 

পর্যবেক্ষকদের মতে, ববি হাকিম এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, তৃতীয় কোনো দেশ রয়েছে, যার ফলে পাকিস্তানকে শেষ পর্যন্ত আর যোগ্য জবাব দেয়নি ভারত। পরোক্ষে তিনি আমেরিকাকেই খোঁচা দিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে তিনি যে সমস্ত কথা বললেন, তাতে তো সেই পাকিস্তান বাড়তি হাতিয়ার পেয়ে গেল! এটা কেন ববি হাকিম এবং তার দলের নেতারা বুঝতে পারছেন না? কেন লাগাতার তারা দেশে থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে শত্রু দেশের হাতে বাড়তি হাতিয়ার তুলে দিচ্ছেন? যখন গোটা দেশ পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে ঐক্যবদ্ধ, তখন এই ধরনের সমালোচনা কি একটি অঙ্গরাজ্যের মন্ত্রীর মুখে মানায়? স্বাভাবিকভাবেই ববি হাকিমের এই ধরনের মন্তব্য যখন বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে, তখন রীতিমত মাথায় হাত পড়তে বাধ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেই দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

Exit mobile version