প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হওয়ার পর থেকেই তাকে কোনোমতেই কাবু করতে পারছে না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় দলদাস হয়ে বিধানসভা পরিচালনার কাজ করলেও, প্রতিমুহূর্তে তাকে জব্দ করে নিজের স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বর্তমানে প্রবল অসুস্থ রয়েছেন মুকুল রায়। তবে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন। স্বাভাবিক ভাবেই একটি দলের টিকিটে জয়লাভ করার পর অন্য দলে তিনি যোগদান করলেও, তার বিধায়ক পদ খারিজ হয়নি। ইর এই পরিপ্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয় বিজেপি। এমনকি যে পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধীদের প্রাপ্য, সেখানে বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগদান করা দলবদলু বিধায়ক মুকুল রায়কে কেন সেই পদে বসানো হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিজেপি। তবে তাদের অভিযোগ ছিল যে, এত কিছুর পরেও প্রকাশ্যে তিনি দলবদল করছেন, তৃণমূলে যোগদান করছেন, এটা দেখার পরেও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় দলদাসের মত তিনি এখনও বিজেপিতেই আছেন বলে দাবি করেছেন। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অবশেষে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বিরাট জয় পেলেন তিনি।
বলা বাহুল্য, মুকুল রায় দলবদল করার পরেও তাকে বিধানসভার ভেতরে বিজেপি বলে চালানোর চেষ্টা হয়েছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। এমনকি অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি চোখে দেখছেন যে, মুকুল রায় দলবদল করেছেন। তারপরেও তৃণমূলের সুবিধে করে দেওয়ার জন্য তিনি বিজেপিরই বিধায়ক বলে দাবি করতে শুরু করেন। তবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়টি মোটেই হালকাভাবে নেননি। তিনি এই বিষয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের ওপর ভরসা রেখেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে শুনানি হয়েছিল। অবশেষে আজ সেই ব্যাপারে রায়দান হওয়ার কথা ছিল। আর কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়দানি খারিজ হয়ে গেল মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ। অর্থাৎ এতদিন ধরে যে লড়াই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি করে আসছিল। অবশেষে তারা একটা বিরাট জয় পেয়ে গেলেন। এর ফলে আরও যারা দলবদল করে এক দলের টিকিটে জিতে অন্য দলে যোগদান করেছেন, তারাও এখন রীতিমত চাপের মুখে পড়ে যাবেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে বিজেপি এবং শুভেন্দু অধিকারী বিরাট জয় পেয়ে গেলেন। দুদিন ধরে তারা একটাই বিষয় চেয়েছিলেন যে, একদলের টিকিটে জিতে অন্য দলে যোগদান করে একজন মানুষ কেন ক্ষমতা ভোগ করবেন? এর ফলে কি এলাকাবাসীরা স্যাক্রিফাইস করছেন না? তারা তো একটি দলের প্রতীকে দাঁড়ানো একটি ব্যক্তিকে ভোটে জিতিয়েছিলেন। ফলে তিনি ভোটে জেতার পর আর এক দলে যোগদান করে যাবেন, অথচ তার বিধায়ক পদ থেকে যাবে, এটা কি করে সম্ভব? তাই এই প্রশ্ন তুলে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারীরা। অবশেষে আজ মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যাওয়ায় তৃণমূল যেমন চাপে পড়লো, অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন চাপে পড়লেন, ঠিক তেমনই বিরাট জয় পেয়ে গেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
