প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গতকাল রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় করা একটি ঘটনা ঘটেছে। শেখ শাহজাহান, যিনি সন্দেশখালি বেতাজ বাদশা বলে পরিচিত, যিনি এখন জেলে রয়েছেন, তবুও মাঝেমধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করতেন যে, শাহজাহান জেলের মধ্যে ভালো অবস্থাতেই রয়েছে। তাকে আদরে, যত্নেই জেলে রাখা হয়েছে। এমনকি জেল থেকেই তিনি এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন লোককে হুমকি দিচ্ছেন, যাতে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ না খোলে। বিভিন্ন সময়ে এই অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলের নেতাদের। কিন্তু গতকাল শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের একটি মামলায় অন্যতম সাক্ষী ভোলা ঘোষ যখন তার ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় হঠাৎ করেই একটি ট্রাক এসে তার গাড়িতে ধাক্কা মারে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে, এই ঘটনা কি কাকতালীয়, নাকি ষড়যন্ত্র? জেলের ভেতর থেকেই কি এই ভোলা ঘোষকে সম্পূর্ণরূপে শেষ করে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা কষেই এই কাজ করেছেন শেখ শাহজাহান? তবে আহত হলেও, ভোলা ঘোষকে শেষ করা যায়নি। কিন্তু তার ছোট ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আর তারপরেই শেখ শাহজাহানের চক্রান্ত নিয়ে মুখ খুললেন ভোলা ঘোষ।
গতকাল যেভাবে আদালতে যাওয়ার সময় ভোলা ঘোষের গাড়িতে একটি ট্রাক এসে ধাক্কা মারে, তাকে অনেকেই নিছক কাকতালীয় বলে অনেকেই উড়িয়ে দিতে নারাজ। তাদের একটাই বক্তব্য, এই কাজ শাহজাহান তার বাহিনীকে দিয়ে করিয়েছে। কারণ শাহজাহান খুব ভালো মতই জানেন যে, ভোলা ঘোষ তার অনেক কুকীর্তি জানে। একসময় এই শাহজাহানের সঙ্গে পার্টনার শিপে মাছের ব্যবসা করতেন ভোলা ঘোষ। স্বাভাবিকভাবেই তার কাছ থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বেশ কিছু তথ্য নিতে পারে। এমনকি আদালতেও তিনি সেই তথ্য তুলে দিতে পারেন। স্বাভাবিক ভাবেই আদালতে যাওয়ার সময়ই যখন সেই ভোলা ঘোষের গাড়িতে এইভাবে দুর্ঘটনা হলো, তখন অনেকেই নিশ্চিত হয়ে বলছেন যে, এই কর্মকাণ্ডের পেছনে জড়িত একমাত্র শেখ শাহজাহান। জেলেতে কেউ বসেও তিনি মানুষকে ভয় দেখাচ্ছেন এবং প্রাণে মেরে ফেলার মত চক্রান্ত করছেন। যা অত্যন্ত ভয়ংকর।
ইতিমধ্যেই আহত ভোলা ঘোষ দাবি করেছেন, তাকে অন্যতম সাক্ষী করা হয়েছিল। আর তিনি ২০১৯ পর্যন্ত যা যা জানতেন, সেই সমস্ত তথ্য তুলে ধরেছেন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই তার কাছে হুমকি আসতো। এক্ষেত্রেও তাকে পরিকল্পনা করেই মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে কোনো রকমে তিনি রক্ষা পেলেও, তার ছেলের প্রাণ চলে গিয়েছে। এমনকি সেই গাড়ির চালকেরও মৃত্যু হয়েছে। তবে এই যে বৃহৎ পরিকল্পনা, এর পেছনে কি সত্যিই শেখ শাহজাহানের মাথা রয়েছে? সত্যিই কি তিনি জেল থেকে প্রভাব বিস্তার করে কাউকে দিয়ে অন্যতম সাক্ষী ভোলা ঘোষকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন? আর সেই জন্যই কি এই দুর্ঘটনা? আক্রান্ত ভোলা ঘোষের বক্তব্যের পর এই সমস্ত প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।
