Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানবেন না মমতা? দলীয় মঞ্চ থেকেই ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ মুখ্যমন্ত্রীর!

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ভোটার তালিকায় কারচুপির কারণে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। যেখানে বারুইপুর পূর্ব এবং ময়নার চারজন অফিসারকে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমনকি একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে যাতে এফআইআর করা হয়, তার জন্যও রাজ্যের মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে রাজ্যের কাছে কমিশনের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে চিঠি গেলেও নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশ রাজ্য আদৌ মানবে কিনা, তা নিয়েই একটা সংশয় তৈরি হয়েছিল। আর এবার প্রকাশ্য মঞ্চ থেকেই সরাসরি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাত তৈরি করে তাদের এই ধরনের সাসপেন্ড করার নির্দেশ রাজ্য সরকার মানবে না এবং কারও বিরুদ্ধে কোনো শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না বলেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, এদিন ঝাড়গ্রামে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলা ও বাঙালিকে হেনস্থা করার প্রতিবাদে একটি মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরেই একটি সভা থেকে নির্বাচন কমিশন যেভাবে রাজ্যের অফিসারদের সাসপেন্ড করার নোটিশ পাঠিয়েছে, তা নিয়ে সোচ্চার হন তিনি। সরাসরি কমিশনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশ রাজ্য মানবে না বলেই জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য ঘিরেই নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। কিন্তু এদিনের এই সভা থেকে ঠিক কি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?

ঝাড়গ্রামের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি কর্মচারীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। গতকাল আমার দুজন অফিসারকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে যে, সাসপেন্ড করা হলো। আমরা বলি, তোমার নির্বাচন এখন ঘোষণা হয়েছে! কোন আইনের বলে তুমি নোটিশ পাঠিয়ে দিচ্ছ? সাসপেন্ড করছ! আর বলে দিচ্ছ, এফআইআর করতে। হবে না, আমি কারও কোনো পানিশমেন্ট করতে দেব না। এটা মাথায় রাখবেন। ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আপনাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে আপনাদের রক্ষা করব। কোনো চিন্তা করবেন না। কেউ হতাশ হবেন না।”

তবে মুখ্যমন্ত্রী যখন এইরকম মন্তব্য করে সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ জানালেন, তখন পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের প্রশ্ন, নির্বাচন এখনও ঘোষণা হয়নি ঠিকই। কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা অবলম্বন করতে তো আধিকারিকদের ভূমিকা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে যদি আধিকারিকরাই কোনোরকম ভোটার তালিকায় কারচুপির সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা হবে না? তাই তো নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে হেঁটে যেভাবে সেই সমস্ত সাসপেন্ড হওয়া আধিকারিকদের পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি কমিশনকে চ্যালেঞ্জ জানালেন, তাতে তিনিই সংবিধানকে অমান্য করলেন না তো? একজন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে যেভাবে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তাতে ভবিষ্যতে রাজ্যে এক অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Exit mobile version