প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বুকে এতদিন যেভাবে সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে, যেভাবে একের পর এক অরাজকতার পরিস্থিতি সামনে এসেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকদিন আগেই রাজ্যপালের অ্যাকশন নেওয়া উচিত ছিল। বিরোধীদের পক্ষ থেকে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি সমস্ত সীমাকে লংঘন করে গিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যেখানে পুলিশের সামনে যেভাবে বিজেপির একজন সাংসদকে রক্তাক্ত হতে হয়েছে, যেভাবে ত্রাণ দিতে গিয়ে তিনি হামলার শিকার হয়েছেন, যেভাবে একজন বিধায়ক আক্রান্ত হয়েছেন, তাতে প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের বন্যা বিপর্যস্ত এলাকা থেকে শুরু করে সেই আক্রান্ত বিজেপির সাংসদ এবং বিধায়কের সঙ্গে দেখা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। বিরোধীরা দাবি করছেন যে, শুধুমাত্র দেখা করে কি হবে? রাজ্যপালকে তো সেই মত রিপোর্ট তৈরি করে কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে হবে, যাতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই রাজ্যকে টাইট দেওয়ার জন্য কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তাই সেই কাজ রাজ্যপাল কবে করবেন? তবে এই সমস্ত পরিস্থিতির মাঝেই আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। আর তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বড় মন্তব্য করলেন তিনি।
উত্তরবঙ্গে ত্রান দিতে গিয়ে যেভাবে বিজেপির সংসদ খগেন মুর্মু রক্তাক্ত হয়েছে, তা কেউ মেনে নিতে পারছেন না। সকলেই বলছেন যে, এরপরেও যদি এই রাজ্যের আইন শৃঙ্খলাকে ঠিক করতে কেন্দ্র কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে ২৬ এর নির্বাচন কোনো মতেই শান্তিপূর্ণ হতে পারবে না। তবে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ তখনই করতে পারে, যখন রাজ্যপালের পক্ষ থেকে কোনো রিপোর্ট যায়, এক্ষেত্রে রাজ্যপাল কেন নীরবতা পালন করছেন? তিনি কেন চুপচাপ মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করছেন? এই প্রশ্ন বিরোধীদের মধ্যে থেকেই উঠেছিল। তবে আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরেই বাংলার পরিস্থিতি যে অত্যন্ত খারাপ, সেই কথাই শোনা গেল রাজ্যপালের মুখ থেকে। আর তার এই মন্তব্যের পরেই প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি এবার বাংলার খারাপ পরিস্থিতিকে ঠিক করার জন্য রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতির কাছে বা কেন্দ্রের কাছে বড় কোনো সুপারিশ করবেন পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে?
এদিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আর তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। যেখানে রাজ্যপালের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘিরে কৌতুহলী হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্যবাসী। কেননা বর্তমানে যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে রাজ্যপাল যখন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন, তখন বড় কোনো একটা বিষয় নিয়েই দুজনের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, এমনটাই ভাবতে শুরু করেছিলেন সকলে। আর সেই সাক্ষাতের পরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে যে মন্তব্য রাজ্যপাল করলেন, তাতে আরও কৌতুহল বাড়তে শুরু করেছে। এদিন সি ভি আনন্দ বোস বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়েছে, পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। এভাবে চলতে পারে না।” আর এখানেই প্রশ্ন, তাহলে কি এই বাংলায় যা চলছে, যে অরাজকতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেভাবে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের ওপর আক্রমণ নেমে আসছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনকে টাইট দেওয়ার জন্য এবং এই রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে বড় কোনো স্টেপ নিতে চলেছেন রাজ্যপাল? রাষ্ট্রপতির কাছে বড় কোনো সুপারিশ করতে চলেছেন তিনি? যেভাবে রাজ্যের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ বলে মন্তব্য করলেন সিভি আনন্দ বোস, তাতে সেরকম রিপোর্ট যদি তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে দেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে যদি পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বড় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে, তাহলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।