Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

রাজ্যের অনুদানে শিরদাঁড়া বিক্রি নয়! পুজো অনুদান প্রত্যাখ্যান আরও এক ক্লাবের!

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকার যতই ভাতা, ভর্তুকি দিয়ে রাজ্য চালানোর চেষ্টা করুন না কেন, যত দিন যাচ্ছে, ততই সাধারণ মানুষের চোখ খুলতে শুরু করেছে। তারা আর কোনোমতেই সরকারের অনুদানের কাছে, ভাতার কাছে মাথা বিক্রি করতে রাজি নয়। অভয়ার মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিচার হয়নি। গত বছর দুর্গাপূজোয় বেশকিছু ক্লাব সেই অভয়ার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে পূজা অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছিল। এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্লাবগুলিকে দুর্গাপুজোর অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অনুদানের পরিমাণ অনেকটাই বৃদ্ধি করেছেন। তিনি ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে ক্লাবগুলোকে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, সরকারি টাকা ক্লাবগুলো নিতেই পারে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগাতে হবে, এই শর্তে কেউ যেন এই অনুদান না নেন। তাহলে অভয়ার পরিবারের সঙ্গে অবিচার করা হবে। তবে রাজ্যের সাধারণ ক্লাবগুলি যে এই সরকারি অনুদানের কাছে মাথা নত করতে রাজি নয়, তারা যে সঠিক জায়গায় প্রতিবাদটা করতে পারেন, তা একের পর এক ক্লাবের পক্ষ থেকে দুর্গাপুজোর জন্য সরকারের যে আর্থিক অনুদান, তা প্রত্যাখ্যানের ঘটনাতেই ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বস্তুত, যে রাজ্যে টাকা নেই বলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন প্রশাসনিক সভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন, সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আবার কিছুদিন আগে দুর্গাপুজোর ক্লাব কমিটিগুলোকে নিয়ে বৈঠকে একটি চমকপ্রদ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এবার ক্লাবগুলিকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে অর্থনৈতিক অনুদান দেওয়া হবে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, এক্ষেত্রে সরকারের টাকা আসছে কোথায়? পাশাপাশি গত বছর পুজোর আগে রাজ্যে ঘটে গিয়েছিল অভয়ার মৃত্যুর মত মর্মান্তিক ঘটনা। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিচার হয়নি। এই রাজ্যে মা বোনেরা এখনও পর্যন্ত সুরক্ষিত নয়। তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবগুলিকে আর্থিক অনুদান দিলেও তাতে যেন কোনো ক্লাব মাথা নত না করেন, এইরকম একটা আহবান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এসেছিল। আর এবার রাজ্যের জয়নগরের ৭ ও ১৪ পল্লী সার্বজনীন শারদোৎসব কমিটির পক্ষ থেকেও রাজ্যের আর্থিক অনুদান প্রত্যাখ্যান করার কথা জানিয়ে দেওয়া হলো।

বলা বাহুল্য, এর আগেও রায়গঞ্জের বিদ্রোহী ক্লাবের পক্ষ থেকে এই আর্থিক অনুদান প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। আর এবার জয়নগরের আরও একটি ক্লাব সেই আর্থিক অনুদান প্রত্যাখ্যান করায় ক্রমশ সরকারের চাপ বাড়ছে। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছিলেন যে, আর্থিক অনুদান দিয়ে ২০২৬ এর ভোট বৈতরণী পার হবেন, তিনি নিজেকে হিন্দুদের রক্ষাকর্তা হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন, তার সেই ভাবনায় কার্যত জল পড়ে গেল। তিনি যতই আর্থিক অনুদান দিয়ে ক্লাবগুলোকে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে শিরদাঁড়া উঁচু রেখে বেঁচে থাকার মত মানুষ রয়েছেন। সেই কারণে সরকারের আর্থিক অনুদান প্রত্যাখ্যান করে একের পর এক ক্লাবগুলি অভয়ার বিচার না পাওয়ার ঘটনায় নিজেদের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্যকেই যথেষ্ট অস্বস্তির মুখে ফেলে দিলেন বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

Exit mobile version