প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
পশ্চিমবঙ্গ সহ মোট ১২ টি রাজ্যে এসআইআর হচ্ছে। কিন্তু কোথাও থেকে এসআইআরের আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে, এরকম কোনো খবর আসছে না। একমাত্র এসআইআর নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বিএলও থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, এই খবর পাওয়া যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। অন্তত তেমনটাই দাবি করছে বিরোধীরা। ফলে যে রাজনৈতিক দল এসআইআর নিয়ে এত আতঙ্কগ্রস্ত, তারাই যে এই খবর বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিরোধী নেতারা। আর এসবের মধ্যেই গতকাল ১৫ বছরের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশের অনুষ্ঠানে এসআইআরের আতঙ্কে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং যারা চিকিৎসাধীন, তাদের ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কথা ঘোষণা করতে গিয়ে তিনি এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, এফআইআর নিয়ে প্রচুর মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। আর সেই কারণেই একের পর এক মানুষের প্রাণ চলে যাচ্ছে। আর মুখ্যমন্ত্রী যখন এই ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করছেন, তখন পাল্টা কাদের চাপে এই সমস্ত মানুষ মারা গিয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে দিয়ে তৃণমূলকে দায়ী করে নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে এই তদন্ত করা উচিত বলে দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর শুরুর অনেক আগে থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস এর বিরোধিতা করতে শুরু করেছে। প্রথমে তো তারা দাবি করেছিল যে, কোনোমতেই এসআইআর হতে দেওয়া যাবে না। পরবর্তীতে যখন এসআইআর শুরু হয়ে গিয়েছে, যখন একের পরে অবৈধ ভোটারের নাম বাদ যাচ্ছে, তখন হঠাৎ করেই এই রাজ্য জুড়ে একটা প্রচার শুরু করে দেওয়া হলো তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে, এসআইআরের আতঙ্কেই একের পর এক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। যার ফলে বিরোধী নেতারা দাবি করেছিলেন যে, এখন যত স্বাভাবিক মৃত্যু হবে, সেটাকেও এসআইআরের আতঙ্কে মৃত্যু বলে চালিয়ে দেবে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এসবের মধ্যেই গতকাল এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এসআইআরের কতটা মারাত্মক প্রভাব, তা বোঝাতে গিয়ে কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেই তথ্য সামনে নিয়ে এসে তাদের ক্ষতিপূরনের ঘোষণা করেন। তবে তিনি যতই এসআইআর ভালো নয়, এর চাপে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে বলে বোঝানোর চেষ্টা করুন না কেন, পাল্টা যে প্রশ্ন তুলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী, তাতে তার দাবি অনুযায়ী যদি এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত হয়, তাহলেই এসআইআরের চাপে মৃত্যু হয়েছে, নাকি ভুল তথ্য সিস্টেমে আপলোড করার ক্ষেত্রে তৃণমূলের নেতারা চাপ দিয়েছে, আর সেই কারণেই অনেক বিএলও প্রাণ হারিয়েছেন, সেই তথ্য সামনে চলে আসবে বলেই মনে করছেন বিরোধী নেতারা।
এদিন এসআইআর আতঙ্কে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পাল্টা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। কাদের চাপে মারা গেল? তৃণমূলের চাপে? সবচেয়ে বেশি যদি কেউ চাপ দিয়ে থাকে, বিডিওরা চাপ দিয়েছে। তৃণমূলের নেতারা চাপ দিয়েছে। নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে, সিটিং বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করে, কার চাপে? যদি মারা যায়, সত্যি মিথ্যা আমি জানি না। এই সময় অসুস্থ হয়েও কেউ মারা যেতে পারে। কোচবিহারে একজন দুর্ঘটনাতেও মারা গেছে। আমি নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। চাপ যদি কেউ দিয়ে থাকে, তৃণমূলের নেতারা দিয়েছে। চাপ যদি কেউ দিয়ে থাকে, দলদাস একশ্রেণীর বিডিও, তারা দিয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টির এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।”
