প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়া। তবে এই এসআইআরের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস লাগাতার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করছে। তবে তৃণমূলের এত গাত্রদাহ কেন হচ্ছে, তার যুক্তি দিতে গিয়ে বিজেপি দাবি করছে যে, এতদিন তৃণমূল অবৈধ বাংলাদেশি থেকে শুরু করে একজন ব্যক্তির নাম রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভোটার লিস্টে তুলে দিয়ে ছাপ্পা মেরেছে। তাই যারা অবৈধ ভোটার, যারা ভুয়ো ভোটার, যারা মৃত ভোটার তাদের সকলের নাম এসআইআরে বাদ যাবে। আর তার আতঙ্কেই তৃণমূলের এই ধরনের ছটফটানি। আর বিজেপির এইসব দাবির মাঝেই উঠে এলো এক ভয়ংকর তথ্য। যেখানে পাণ্ডবেশ্বরের একটি বুথের এক ভোটারের এনুম্যারেশন ফর্ম স্ক্যান করতেই দেখা গেল যে, তিনি এই রাজ্যেরই প্রায় ৪০ জায়গার ভোটার। যেখানে কোথাও তার নাম রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরে, কোথাও তার নাম রয়েছে বর্ধমানে। তবে সব জায়গাতেই তার নামের শব্দ ঠিক থাকলেও পদবী পাল্টে গিয়েছে। আবার তার স্বামীর নাম ঠিক থাকলেও, সেখানেও পদবী পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনাকে সামনে এনে এখন সোচ্চার হয়েছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, এতেই বোঝা যাচ্ছে যে, এসআইআর হলে তৃণমূল কেন এত ছটফট করছে। কারণ এভাবেই তারা এক ব্যক্তির নামে বিভিন্ন জায়গায় ভোটার লিস্টে নাম তুলিয়ে অবৈধ ভোট দিয়ে একের পর এক নির্বাচনে জিতেছে। তবে এসআইআরের মধ্য দিয়ে সেই সমস্ত নাম বাদ যাওয়ার কারণেই তৃণমূল এর বিরোধিতা করছে।
এই রাজ্যে এসআইআর হওয়ার পর থেকেই বিরোধীরা ক্রমাগত দাবি করে আসছে যে, এসআইআর হলে তৃণমূল একই ব্যক্তির নাম বিভিন্ন জায়গায় ভোটার লিস্টে তুলে যেভাবে অবৈধ ভোট দিতো, সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হবে। আর বিরোধীদের সেই দাবিই কি এবার সত্যি হয়ে গেল? যেখানে পাণ্ডবেশ্বরে ঘটে গেল এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। জানা গিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বরের এডিবিসি পাড়ার ৪৭ নম্বর বুথের বাসিন্দা মায়ারানী গোস্বামী। কিন্তু তার এনুমারেশন ফর্ম স্ক্যান করতেই দেখা গেল যে, এই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তার ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। কখনও বর্ধমান, আবার কখনও বা হাওড়া। তবে তার আসল নাম মায়া রানী গোস্বামী হলেও রাজ্যের যে সমস্ত জায়গায় ভোটার তালিকায় তার নাম রয়েছে, সেখানে সব জায়গাতেই তার পদবী পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে তার স্বামীর পদবীও বিভিন্ন জায়গায় পরিবর্তন করা হয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে, একজন ব্যক্তির নাম কি করে 40 জায়গায় ভোটার তালিকায় থাকতে পারে? কে করলো এই কাজ? যদিও বা মায়ারানী দেবী এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তার বক্তব্য, তিনি প্রথম থেকে এই বুথেই ভোট দিয়ে এসেছেন।
তবে গোটা ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা ইতিমধ্যেই বিজেপি এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে সোচ্চার হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, এই জন্যই এসআইআর এত প্রয়োজনীয়। এভাবেই তৃণমূল গোটা রাজ্য জুড়ে একজন ব্যক্তির নাম এক রেখে তার পদবী এবং তার স্বামীর নামের পদবী পরিবর্তন করে অবৈধ ভোট দিয়েছে। এসআইআর হলে সেই সমস্ত কিছু ধরা পড়ে যাবে এবং তাদের নাম বাদ যাবে। তাই তৃণমূল এই এসআইআরের এত বিরোধিতা করছে বলেই দাবি। যদিও বা তৃণমূল এই সমস্ত অভিযোগকে অস্বীকার করছে। তাদের বক্তব্য, প্রথম থেকেই মায়ারানীদেবী এখানেই ভোট দিয়ে আসছেন। আর তার পক্ষে অন্য কোথাও গিয়ে ভোট দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভুল থাকতে পারে বলেই মনে করছে রাজ্যের শাসক দল। তবে সর্ষের মধ্যে যে একটা বড় ভূত রয়েছে, মায়ারানী দেবী না জানলেও তার নামে যে বিভিন্ন জায়গায় ভোট পড়ে যেত এতদিন, আর সেই তথ্য যে এসআইআর না হলে প্রকাশ্যে আসতো না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
