Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

শুভেন্দুর হিন্দু ভোট, আর হুমায়ুনের সংখ্যালঘু ভোট! দুই সমীকরণে মহা বিপদে তৃণমূল বিধায়ক?

 

 

 

 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
তৃণমূল কংগ্রেস খুব ভালো মতই বুঝতে পারছে যে, যেভাবে হিন্দু ভোটকে একত্রিত করছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তাতে এবার তাদের পক্ষে সেই হিন্দু ভোট পাওয়া অত্যন্ত সমস্যার। অন্যদিকে সম্প্রতি তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন হুমায়ুন কবীর। তিনি আবার নতুন দল গঠন করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সংখ্যালঘুদের জিতিয়ে বিধানসভায় পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল এতদিন সংখ্যালঘুদের ভোট পাবে, এটাতে তারা নিশ্চিত ছিলেন। কিন্তু হুমায়ুন কবীর যদি মন থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে আইএসএফকে সাথে নিয়ে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বসাতে পারেন, তাহলে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক যে অত্যন্ত শোচনীয় পর্যায়ে চলে যাবে, তা খুব ভালো মতই বুঝতে পারছেন শাসক দলের অনেক নেতৃত্বরা। তবে কেউ শুভেন্দু অধিকারী বা হুমায়ুন কবীরকে গুরুত্ব না দিলেও এবার প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে যে কথা বলে দিলেন তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, সত্যিই কি এটা তৃণমূলেরই মনের কথা? তৃণমূল কি শুভেন্দু অধিকারী দিকে হিন্দু ভোট একত্রিত হচ্ছে এবং সংখ্যালঘু ভোট হুমায়ুন কবীরের দিকে যাচ্ছে, তা ভেবে রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে?

এতদিন তৃণমূলের নেতারা নিশ্চিত ছিলেন যে, হিন্দু ভোটের বেশিরভাগ বিজেপি পেলেও তারা সংখ্যালঘুদের ভোট নিয়ে খুব সহজেই জিতে যাবেন। কিন্তু হুমায়ুন কবীর তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর যে সমস্ত হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তাতে কিন্তু শাসক দলের অনেক নেতারাই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এবার যে সংখ্যালঘু ভোটেও একটা বড় ফাটল ধরতে চলেছে, তা বুঝতে পারছেন তৃণমূল নেতৃত্বরা। আর সেই কারণেই শুভেন্দু অধিকারী এবং হুমায়ুন কবীরকে কটাক্ষ করে যে যার মত করে যে সম্প্রদায়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, তাতে তারা অত্যন্ত যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছেন বলেই মন্তব্য করলেন ‌ তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। তবে শুভেন্দুবাবু বা হুমায়ুনবাবুকে তপনবাবু কটাক্ষ করলেও, তৃণমূলের মনের কথাই যে তাদের এই বিধায়ক বলে ফেলেছেন এবং তারা যে সত্যিই আতঙ্কিত, সেই ব্যাপারে দ্বিমত নেই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

এদিন একটি দলীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হুমায়ুন কবীরকে কটাক্ষ করেন পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমি বিধানসভায় একদিন গিয়েছি। আমি দেখি, দুদিকে বিজেপির দুজন নেতা বসে আছেন, আর উনি মাঝখানে বসে আছেন। আমি তখন বলেছিলাম, কি ব্যাপার হুমায়ুন সাহেব, ওইখানে কেন আপনি কি ওই দলে যোগদান করবেন নাকি?” আর তারপরেই শুভেন্দু অধিকারী এবং হুমায়ুন কবীরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের তো এখন যন্ত্রণা হয়ে গিয়েছে। আমি যার নামটা বলতে ঘৃণা করি, বিরোধী দলনেতা, তিনি একটা সম্প্রদায়ের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন। আর আমাদের হুমায়ুনবাবু, আর একটা সম্প্রদায়ের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন। তাই আমি সবাইকে বলছি যে, আমরা এখন কোন দিকে যাবো, এটা তো আমি বুঝতে পারছি না।” আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সত্যিই তৃণমূলের যে শিয়রে সংক্রান্তি, তা বোঝার অপেক্ষায় রাখে না। মুখে তৃণমূল অনেক কথাই বলছে। কিন্তু তৃণমূলের এই বিধায়ক প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে নিজেদের যন্ত্রণার কথাটা তুলে ধরে বুঝতে পেরেছেন যে, হিন্দু ভোট যদি একত্রিত হয় এবং সংখ্যালঘু ভোট যদি হুমায়ুন কবীরের দিকে চলে যায়, তাহলে তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। তাই কটাক্ষ করেই বলুন, আর কথা শুনিয়েই বলুন, তৃণমূল বিধায়কের মনে মনে যে এবার প্রবল চিন্তা তৈরি হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Exit mobile version