Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

টাকা নিলে ক্লাবে রাখতেই হবে মমতার ছবি! পুলিশের সামনেই তৃণমূল বিধায়কের ফতোয়া!

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বিরোধীরা মাঝেমধ্যেই বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার রাজ্যে যে সমস্ত ভাতা, ভর্তুকি দিয়ে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করছে, সেটাকে তারা নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি বলে মনে করে। সেই কারণে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কিছু প্রকল্প দিয়ে জনগণকে তারা সন্তুষ্ট রাখলেও, তারা মনে করে যেন জনগণ তাদের ক্রীতদাস। তৃণমূল যা বলবে, সেই মতই চলতে হবে। আর সেটা করতে গিয়েই রাজ্যের সাধারণ মানুষদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে শাসক দল বলে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। এবার প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে একেবারে পুলিশের সামনেই তৃণমূলের বিধায়ক বুঝিয়ে দিলেন যে, প্রত্যেকটি ক্লাব, যারা সরকারের আর্থিক অনুদান নিচ্ছে, তাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রাখতেই হবে। আর যদি তারা না রাখেন, তাহলে পরের বছর তিনি তাদের দেখে নেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন এই তৃণমূল বিধায়ক। স্বাভাবিকভাবেই তার এই ফতোয়া ঘিরেই এখন তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

এই রাজ্যের বুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার ক্লাবগুলোকে একটি টাকা দিচ্ছেন। তারা দাবি করছেন যে, পুজোর জন্য তারা এই টাকা দিচ্ছেন। কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য যে, ক্লাবগুলোকে এই টাকা দিয়ে সরকার তাদের কিনে নিতে চাইছে এবং নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করার চেষ্টা করছে। তাদের এটাও প্রশ্ন যে, এর আগে কি সরকারের আর্থিক অনুদান ছাড়া ক্লাবগুলো পূজা করতো না? তখনও তো পূজো হতো। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতায় আসার পর কি করে ভোট কেনা যায়, তার জন্য ক্লাবগুলোকে টাকা দিয়ে সবাই তাদের কথামত চলবে, তার একটা চিন্তা ভাবনা এই তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে গ্রাস করেছে। আর বিরোধীদের এই দাবিই কি এবার সত্যি হতে চলেছে? কেননা নন্দকুমারের তৃণমূল বিধায়ক যেভাবে সরকারি মঞ্চ থেকে পুলিশ প্রশাসনের সামনে থেকে ক্লাবগুলোকে হুশিয়ারি দিলেন, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, তৃণমূল কি সবাইকে নিজেদের সম্পত্তি বলে মনে করে? নিজেদের ক্রীতদাস বলে মনে করে?

কি ঘটনা ঘটেছে? ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, পুলিশ প্রশাসনের সামনে ক্লাবগুলোকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে রীতিমত মুখ্যমন্ত্রীর ছবি না থাকলে কি করে পরের বছর অনুদান পায় ক্লাবগুলো, তা দেখে নেওয়া হবে বলে বুঝিয়ে দিচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক। শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার দে বলছেন, “ন্যূনতম সৌজন্যবোধ আপনাদের কারও কারও নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি টাকাটা দিয়েছেন, আমাদের এই পুজোর জন্য। তাকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে তার ছবিটা, এটা আপনারা কেউ করেননি। কেন করেননি? আপনারা কেউ বলুন তো, টাকা নেব না! কেউ বলবেন? তার ছবিটা আপনার ক্লাবের সামনে রাখতে এত কুণ্ঠাবোধ কেন? কিসের দ্বিধা? তিনি তো আমাদের অর্থনৈতিক সাহায্য দিচ্ছেন। তার ছবিটা কেন রাখতে পারেন না ক্লাবের সামনে? মঞ্চের সামনে? কিসের বাঁধা আপনাদের? কেন পারেন না?” আর এরপরেই সরাসরি সেই ক্লাবগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এই তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “যে ক্লাব আমাকে ভালোবাসে, যারা করে, আমি তাদের সঙ্গে আছি। যারা করে না, আমি তাদের সঙ্গে নেই। আমি কিন্তু বাহিনী নিয়ে ৬৬ টা ক্লাবে যাব। আমি দেখব, কারা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গিয়েছে, আর কারা টাঙ্গায়নি! আগামী বছর আমি দেখব।”

আর তৃণমূল বিধায়কের এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, এভাবেই তো ফতোয়া দিয়ে ক্লাবগুলোকে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। সামনে পুলিশ বসে রয়েছে, আর তৃণমূলের বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর ছবি না টাঙালে দেখে নেওয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন! তৃণমূলের সরকার যে টাকা দিয়ে ক্লাবগুলোকে সহযোগিতা করছে, সেই টাকা তারা নিজের পকেট থেকে দিচ্ছে না। মানুষের ট্যাক্সের টাকাই মানুষকে দেওয়া হচ্ছে। এতে তৃণমূল দয়া করছে না। আর যেভাবে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙানোর ব্যাপারে ফতোয়া দিচ্ছেন এই তৃণমূল বিধায়ক, তাতে পুলিশ কেন নীরব? যেভাবে ক্লাবগুলোকে পরের বছর দেখে নেওয়া হবে বলে তিনি মন্তব্য করলেন, তাতে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের হেলদোল নেই কেন? আর এতেই তো প্রমাণিত যে, এই রাজ্যে তৃণমূল কিছু সামান্য টাকা এবং ভাতা দিয়ে মানুষকে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করে। আর মানুষকে ধমকানোর পরেও পুলিশ প্রশাসন তৃণমূল নেতাদের দলদাস হয়ে এই রাজ্যটাকে পুরোপুরি ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের।

Exit mobile version