Site icon প্রিয় বন্ধু মিডিয়া

তৃণমূলী মন্ত্রীর বিক্ষোভ! বিরোধিতা কি করে সামলাতে হয়, দেখিয়ে দিলেন শমীক!

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে যদি কেউ জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয় বা তার চোখে চোখ রেখে প্রতিবাদ করে, তখনই তিনি তাকে হয় বিরোধী তা না হলে মাওবাদী বলে আখ্যা দিয়ে বসেন। অতীতে এই ঘটনা দেখেছে বাংলা। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির পার্থক্য একটাই। বিজেপি সমালোচনাকে গ্রহণ করতে পারে। আজ স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো ধর্ম সভার বক্তৃতার দিনে নরেন্দ্র কাপের আয়োজন করা হয়েছিল। সকাল সকাল সেই অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। তবে সেখানে যাওয়ার পথে তার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূলের মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি থেকে শুরু করে আরতি কটন মিলের শ্রমিকরা। তাদের একটাই বক্তব্য যে, দীর্ঘদিন ধরে মিল বন্ধ রয়েছে। তাই তারা প্রতিবাদ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তবে এটা যদি তৃণমূলের কোনো মন্ত্রীর সঙ্গে হত, তাহলে তারা ধৈর্যচ্যুতি ঘটিয়ে রাজনৈতিক আক্রমণ করতে শুরু করতেন। কিন্তু সেরকম কোনো কথা না বলেই কি করে বিরোধীতাকে সামলাতে হয়, আর কি করে তাকে স্বাগত জানাতে হয়, তা আদ্যপ্রান্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।

প্রসঙ্গত, এদিন নরেন্দ্র কাপ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময় আরতি কটন মিলের শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শমীক ভট্টাচার্যের গাড়ি ঘিরে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারিও। মনে করা হয়েছিল যে, শমীকবাবু হয়ত মেজাজ হারাবেন। তিনি তৃণমূলের মন্ত্রীদের মতই হয়তো যা ইচ্ছে তাই বলবেন। গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে অভিহিত করবেন। কিন্তু সেরকম কিছুই বললেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি। উল্টে সাংবাদিকরা যখন তাকে প্রশ্ন করলেন গোটা বিষয় নিয়ে, তখন তিনি শ্রমিকদের এই যন্ত্রণাকে স্বাগত জানিয়ে কিভাবে কোথায় এই বিষয় নিয়ে তিনি জানাবেন, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, শ্রমিকদের যন্ত্রনা হয়েছে, তাই তারা তাকে ভারত সরকারের প্রতিনিধি ভেবে তাদের দাবি জানিয়েছেন। তেমনটাও জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনীতিতে শুধুমাত্র নেতা হলেই হয় না। সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখতে হয়। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিন্দুমাত্র সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না জন্যই আজকে গোটা রাজ্যকে তিনি ভয়ের মধ্যে রেখেছেন। পুলিশ প্রশাসন দিয়ে মিথ্যে মামলা দিয়ে প্রতিবাদীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তৃণমূলের মন্ত্রী বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদের গাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকদের নিয়ে, অথচ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সেই বিক্ষোভকে কোনরূপ রাজনৈতিক আক্রমণ করলেন না। উল্টে শ্রমিকদের যে যন্ত্রনা রয়েছে, তাকে তিনি সুনির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেবেন বলে জানিয়ে দিলেন। এখন তৃণমূলের উচিত, বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই অসীম ধৈর্য এবং সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতাকে গ্রহণ করা। কথায় কথায় প্রতিবাদীদের কন্ঠরোধ করা, বিক্ষোভ নামক অধিকার কেড়ে নেওয়ার যে প্রবণতা তৃণমূল প্রশাসন এবং তৃণমূল সরকারের আমলে এই রাজ্যে শুরু হয়েছে, তা অন্তত শমীক ভট্টাচার্যের এই বিরোধিতা সামলানোর যে রাজনৈতিক মনোভাব, তা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত তৃণমূলের নেতাদের। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Exit mobile version