প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
তৃণমূল সরকার এখন যেখানেই হাত দিচ্ছে, সেখানেই তাদের হাত পুড়ছে। একের পর এক ঘটনার মধ্যে দিয়ে তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই যুবভারতীতে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে রীতিমত অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। নাটক করে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে অরূপ বিশ্বাস পদত্যাগ করলেও, তাকে কোনোমতেই ভালোভাবে নিতে পারছে না রাজ্যের সাধারণ মানুষ। প্রত্যেকেই বলছেন, এই সমস্ত কিছু লোক দেখানো ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যদিকে প্রশাসনের বেশ কিছু কর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। তবে সামনেই যেহেতু নির্বাচন এবং যুব সমাজের ক্ষোভ যেভাবে মেসির অনুষ্ঠানে তাকে না দেখতে পাওয়া নিয়ে আছড়ে পড়েছে এবং যেভাবে রাজ্যের বিরুদ্ধে মানুষ সরব হচ্ছেন, তাতে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার প্রশাসনের এই পদক্ষেপ, তা বুঝতে বাকি নেই সকলের। আর মানুষের যখন ক্রমশ অসন্তোষ বাড়ছে, ঠিক তখনই গতকাল ব্যবসায়ীদের একটি সম্মেলন থেকে সেই যুবভারতী কাণ্ডে তার সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে, বেশ কিছু ব্যক্তিকে শোকজ করেছে, ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে অরূপ বিশ্বাস পদত্যাগ করেছেন, সেই বিষয়টি কি ঘুরে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান? নিজের কাছের লোক হলেও তিনি তাকে শাস্তি দেন, এমনটাই কি বার্তা দিতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
ইতিমধ্যেই যুবভারতী কান্ডে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্যর জুড়ে। বিরোধীদের একটাই দাবি যে, অরূপ বিশ্বাস এবং সুজিত বসুকে গ্রেফতার করতে হবে। নাটক করে অরূপ বিশ্বাস পদত্যাগ করলেও, লাভের লাভ কিছু হবে না। এমনকি বেশ কিছু পুলিশ কর্তাকে রাজ্যের পক্ষ থেকে শোকজ করা হলেও রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীকেও কেন দায়ী করা হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। আর এই পরিস্থিতিতে গতকাল ব্যবসায়ীদের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী যেমন মন্তব্য করলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে যে, তিনি যুবভারতী কাণ্ডে ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে রীতিমত মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। আর সেই কারণেই হয়ত মানুষের কাছে এই বার্তা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে, কাছের লোক হলেও তিনি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।
এদিন ব্যবসায়ীদের সম্মেলনের মঞ্চ থেকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদেরও কেউ যদি দুষ্টুমি করে, আমি দুষ্টু মিষ্টি মেডিসিন দিই। দুষ্টু মিষ্টি মেডিসিন দিয়ে ঠিক করে দিই বা সমাধানের চেষ্টা করি।” আর এখানেই বিরোধীদের পাল্টা খোঁচা যে, মুখ্যমন্ত্রী তো নিজেই বুঝিয়ে দিলেন, এই সমস্ত কিছু নাটক ছাড়া আর কিছু নয়। সাময়িক লোক দেখানো এই দুষ্টু মিষ্টি মেডিসিন দিয়ে পরবর্তীতে যে তাদেরকে আবার উচ্চতর দায়িত্বে বসানো হবে, সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। মুখ্যমন্ত্রী এই সমস্ত কথা সাধারণ মানুষের মনে কোনোমতেই বিশ্বাস যোগ্যতার মর্যাদা পাবে না বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।
