প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের আমলে যে কোনো সৃষ্টিশীল কার্যকলাপ হবে না, তা গতকালের ঘটনার পর আরও বেশি করে উপলব্ধি করেছে গোটা বাংলার সাধারণ মানুষ। ক্রিড়াপ্রেমী মানুষরা গতকাল প্রচন্ডভাবে হতাশ হয়েছিলেন। অনেক যন্ত্রণা তারা সহ্য করেছেন। কিন্তু গতকাল তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে যুবভারতীতে গিয়ে তারা ভেবেছিলেন যে, একবার মেসিকে দেখতে পাবেন। কিন্তু মেসিকে ঘিরে তৃণমূলের মন্ত্রীরা যেভাবে নিজেদের প্রচার করার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছিলেন, তা দেখে আর চুপ করে বসে থাকতে পারেননি উত্তেজিত জনতা। কার্যত যুবভারতীর ভেতরে ব্যাপক অশান্তি সৃষ্টি হয়। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং সুজিত বসুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মেসিকে দেখার জন্য প্রচুর টাকা দিয়ে টিকিট কিনেও, কেন তারা এইভাবে বঞ্চিত হলেন, তা নিয়ে যুবভারতীর ভেতরে তোলপাড় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ভাঙচুর করা হয় প্রচুর চেয়ার। ইতিমধ্যেই আয়োজক শতদ্রুবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে ঠিকই। তবে মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারির দাবি তুলছেন সকলে। আর এই পরিস্থিতিতে গতকাল মেসিকে যেমন সাধারণ মানুষ টিকিট কেটে দেখতে পেলেন না, ঠিক তেমনই যুবভারতীর ভেতরে যেভাবে কালোবাজারি শুরু হয়েছিল, তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
গতকাল যুবভারতীতে যে কাণ্ডকলাপ হয়েছে, তা দেখে লজ্জিত গোটা বাংলা। হায়দ্রাবাদেও মেসি গিয়েছিলেন। সেখানে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু যে বাংলা সংস্কৃতির পীঠস্থান, সেখানে কিছু মানুষের অপদার্থতার কারণে ক্রীড়াপ্রেমী মানুষকে যেভাবে বঞ্চিত হতে হলো, তা নিয়ে সকলেই সোচ্চার হচ্ছেন। মন্ত্রীদের দেখার জন্য তো সেখানে মেসি প্রেমীরা যাননি। তারা চেয়েছিলেন যে, এত হাজার হাজার টাকা দিয়ে তারা টিকিট কেটেছেন, একবারটি মেসিকে দেখবেন। কিন্তু মেসিকে ঘিরে যারা ছিলেন, তাদের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেই রীতিমত লন্ডভন্ড করে দেওয়া যুবভারতী। শুধু তাই নয়, একদিকে যেমন মেসিকে দেখতে পেলেন না হাজার হাজার দর্শক, ঠিক তেমনই ভেতরে যে কালোবাজারি চলছিলো, যেভাবে ২০ টাকার জল বিক্রি করা হচ্ছিল ২০০ টাকায়, সেই ভিডিও ইতিমধ্যে সামনে এসেছে।
ইতিমধ্যেই গতকাল যে তান্ডব হয়েছে যুবভারতীতে, তারপর ঘন্টায় ঘন্টায় বিভিন্ন খবর সামনে আসছে। যারা উদ্যোক্তা ছিলেন, তাদের ভূমিকা নিয়ে, তাদের অপদার্থতা নিয়ে সকলেই প্রশ্ন তুলছেন। মন্ত্রীরা কেন এত মুখ দেখানোর জন্য উদগ্রীব হয়েছিলেন? মেসিকে দেখতে যারা গিয়েছিলেন, তারা তো অরূপ বিশ্বাস আর সুজিত বসুকে দেখতে যাননি। ফলে তারা কেন মেসিকে আড়াল করে রেখে নিজেরা প্রচার নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন? সব ব্যাপারেই কেন হাইজ্যাক করার চেষ্টা এই তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের? তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। আর তার মধ্যেই যুবভারতীর ভেতরে যে ভয়ংকর কালোবাজারি গতকাল শুরু হয়েছিল, সেই ভিডিও সামনে চলে এলো। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, একদিকে তো হাজার হাজার টাকা দিয়ে দর্শকরা ভেতরে গিয়েও মেসিকে দেখতে পাননি, ফলে তাদের মধ্যে যথেষ্ট রাগ ছিলো। আর তার মধ্যেই এক ব্যক্তি গ্যালারিতে জল বিক্রি করছেন। আর তিনি সেই জলের দাম ধার্য করেছেন ২০০ টাকায়। স্বাভাবিকভাবেই বাইরে যে জল ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ভেতরে সেই জল এত দামে বিক্রি হওয়ায় কি ভয়ংকর পরিস্থিতি চলছে, এই রাজ্যের সব জায়গায় যে চিটিংবাজি শুরু হয়েছে, তার একটা ভয়ংকর চিত্র সামনে চলে এলো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
