প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বেশ কিছু দাবি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, যারা পার্মানেন্ট স্টাফ রয়েছেন সরকারের, তাদেরকেই বিএলওর দায়িত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস অত্যন্ত কৌশল করে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সমস্ত বিএলওদের জায়গায় তৃণমূলের ক্যাডারদের বসিয়ে দিচ্ছে। যাতে তাদের অবৈধ উপায়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া সামাল দিতে সুবিধা হয় এবং তারা ক্ষমতায় আসে। কিন্তু সেই সমস্ত অপচেষ্টা যে এবার তৃণমূল হাজার চেষ্টা করলেও করতে পারবে না, প্রথম থেকেই সেই হাল ধরেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রোহিঙ্গা মুক্ত এবং অনুপ্রবেশ কারীদের বিতাড়িত করে এবারের ভোটার তালিকা সংশোধনের দাবি জানাচ্ছেন তিনি। আর এবার নির্বাচন কমিশনের কাছে তৃণমূলের অপচেষ্টাকে রুখে দিয়ে সর্ষের মধ্যে থাকা ভুত উদ্ধার করে বড় দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
বস্তুত, ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি ক্রমাগত তৃণমূলের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। তাদের একটাই বক্তব্য, ভোটার তালিকায় সংশোধন করতে হবে। কেননা পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের আসল ভোটব্যাঙ্ক হচ্ছে রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশকারীরা। তাই তারা পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক মানচিত্রকে বিনষ্ট করছে, দেশের ক্ষতি করছে। তাই সেই সমস্ত রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশ কারীদের বিতাড়িত করলেই বাংলায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়া সম্ভব। তবে তৃণমূল এতে কোনোমতেই সমর্থন করছেন না। তাদের বক্তব্য, বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মানুষদের নাম বাদ দিতে চাইছে। আর তা নিয়েই দুই দলের মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আর সেসবের মধ্যে এবার বিএলওদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানালেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।
এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি করছি, সমস্ত বিএলওদের তালিকা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে দিতে হবে। কারণ আমাদের কাছে খবর আছে যে, পার্মানেন্ট স্টাফ থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাডারদের ডিএম, এসপিদের সঙ্গে বসে তৃণমূল এই সমস্ত বিএলওদের দায়িত্ব নিতে চাইছে। তাহলে আমরা বুথ ভিত্তিক বুঝে নেব যে, পার্মানেন্ট এমপ্লয়ি কোথাও থাকা সত্বেও আপনি তৃণমূলের কথায় পার্মানেন্ট এমপ্লয়িকে করেননি। এই ডিএমরা, বিডিওরা, এরা ভাবছে, আগের মত হবে। আরিজ আফতাব আছে, সব আগের মত হবে। ধামাচাপা পড়ে যাবে। ধামাচাপা পড়বে না।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক জায়গায় খেলা ধরে ফেলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বারবার করে এই রাজ্যে দাবি উঠেছে যে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা প্রয়োজন। কারন এই রাজ্যের ভোটার লিস্টে বহু জল ঢুকে রয়েছে এবং যারা এই বিএলওদের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূলের ক্যাডার বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই এবার সেই বিএলওদের দায়িত্ব কাদের কাদের দেওয়া হচ্ছে, তার তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছেই চেয়ে বসলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর তার এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই তালিকা যদি সামনে আসে, তাহলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, বিএলওদের দায়িত্বে কারা বসেছে! সেক্ষেত্রে যদি সমস্ত নিয়ম ঠিক থাকে, তাহলে কারওর কিছু বলার নেই। কিন্তু যদি সেই জায়গায় তৃণমূলের কোনো ক্যাডার পার্মানেন্ট স্টাফ থাকা সত্ত্বেও এই দায়িত্ব পায়, তখনই চেপে ধরার সুযোগ পেয়ে যাবে বিজেপি। তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে সেই তালিকা দাবি করে সর্ষের মধ্যে যেভাবে ভূত লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তা উদ্ধার করে তৃণমূলের অপচেষ্টাকে রুখে দেওয়ার সমস্ত প্ল্যান রেডি করে ফেললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।