প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- অনেকেই তাকে বঙ্গ বিজেপির সবথেকে বড় সফলতম সভাপতি বলে দাবি করেন। তার অনুগামীরা দাবি করেন যে, দিলীপ ঘোষ ছিলেন জন্যই বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। এমনকি তার জন্য এই বিগত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এত ভালো ফলাফল করেছে। তবে তিনি দলকে কতটা সাফল্যের মুখ দেখাতে পেরেছেন, তা তো অবশ্যই বিজেপি নেতারা নির্ধারণ করবেন। কিন্তু কিছুদিন আগে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিন যেভাবে তিনি সেখানে পৌছে গিয়েছিলেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক ফ্রেমে ধরা দিয়েছিলেন, তা নিঃসন্দেহে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দেয়। যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করছে, তখন দিলীপ ঘোষের এই ধরনের আচরণ নিয়ে দলের মধ্যেই চর্চা শুরু হয়। আর তারপর থেকে ক্রমাগত দিলীপ ঘোষের একের পর এক মন্তব্য বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, বিজেপিও তার সঙ্গে অনেকটাই দূরত্ব স্থাপন করে তাকে সেভাবে কোনো কর্মসূচিতে বর্তমানে তেমনভাবে ডাকতে দেখা যায় না। আর এই পরিস্থিতিতে যখন বিজেপি ২০২৬-এর নির্বাচনকে লক্ষ্য করে আরও সঙ্ঘবদ্ধ হতে শুরু করেছে, কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, ঠিক তখনই ফের দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন সেই দিলীপ ঘোষ।

বর্তমানে বিজেপি নেতারা বিহারের ফলাফলের পর আরও বেশি করে উজ্জীবিত হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের যে রাজনৈতিক মানচিত্র দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তাতে অনেকেই বলছেন যে, বিজেপি যদি এই লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে পারে, তাহলে ২০২৬-এ তৃণমূলের সরকারের ফেরা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে। আর এই পরিস্থিতিতে তিনি এখনও দলের সৈনিক বলে সব সময় দাবি করা দিলীপ ঘোষ কেন পুরোনো দিনের কথা টেনে এনে দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন? প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি তিনি চাইছেন না যে, বিজেপি ক্ষমতায় আসুক! আর যখনই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কোনো ভালো দিক দেখতে পাওয়া যায়, তখনই কেন দিলীপ ঘোষের এই ধরনের মন্তব্য সামনে আসে? তাহলে তিনি ঠিক কি চাইছেন, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। আর সেখানেই তিনি বলেন, “পার্টি দুইবার আমায় ইচ্ছায় টিকিট দিয়েছে। এইবার আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে টিকিট দিয়েছে। আমি কোনোদিন ভোটে লড়াই করার জন্য কারও কাছ থেকে টিকিট চাইনি। পার্টি বলেছে, ইলেকশনে লড়তে। আমি ভোটে লড়েছি। আবার বললে, লড়ব। আমি সাধারণ কর্মী। যতদিন রাজনীতি করার ইচ্ছে থাকবে, করব। সারা জীবন কেউ রাজনীতি করে না।” আর এখানেই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে যে, দিলীপ ঘোষ ঠিক চাইছেনটা কি? এই সময় দলের পক্ষে কথা না বলে দল তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে টিকিট দিয়েছে বলে তিনি যে সমস্ত মন্তব্য করছেন, তা কি বিজেপির পক্ষে যাচ্ছে? নাকি তিনি ঘর শত্রু বিভীষণের মত কাজ করছেন! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।