প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
রাজ্যের সাধারণ মানুষ যে তৃণমূল বিদায়ের জন্য অপেক্ষা করছে, তা নতুন করে বলতে হবে না। গোটা রাজ্যের মানুষ এই রাজ্যের শাসকদলের বিভিন্ন কান্ড কীর্তির জন্য তাদের ওপর প্রচন্ডভাবে বিরক্ত। তাই ২০২৬ এর নির্বাচনে তৃণমূলের বিদায় একপ্রকার নিশ্চিত বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। তবে সাধারণ মানুষ তৃণমূলের ওপর যেমন বিরক্ত, ঠিক তেমনই তৃণমূল কর্মীরাও যে তৃণমূলের কাজকর্মে খুব একটা খুশি নয়, দলের মধ্যে যেভাবে কোন্দল শুরু হয়েছে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে যেভাবে জেলায় জেলায় তৃণমূল কর্মীরা খুন হচ্ছেন, তাতে যথেষ্ট আতঙ্কিত তৃণমূলের নেতৃত্বরা। আর তার মধ্যেই এবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে আরও এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। আর তৃণমূলের এই দ্বন্দ্ব, টাকা নিয়ে একে অপরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়া এবং তার ফলে এইভাবে তৃণমূল কর্মীরা খুন হয়ে যাওয়ার পেছনে বড় কারণ সামনে আনলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
প্রসঙ্গত, এদিন ভরতপুরে এক তৃণমূল কর্মী খুন হওয়ার খবর সামনে আসে। যেখানে গতকাল রাতে সেই তৃণমূল কর্মী বাড়ি যাওয়ার পথে তার পথ আটকানো হয় এবং তাকে এলোপাথাড়ি কোপ দেওয়া হবে বলে অভিযোগ। যদিও বা এই ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা রয়েছে, তার রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা হচ্ছে। আর সেসবের মধ্যেই বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ তৃণমূলের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল সম্পর্কে বলতে গিয়ে তৃণমূল দলে যে কোনো কন্ট্রোল নেই, এমনকি ভগবানও যে তা কন্ট্রোল করতে পারবেন না, তা স্পষ্ট করে দিলেন।
এদিন তৃণমূলের এই কোন্দল এবং ভরতপুরে এক তৃণমূল কর্মীর খুন হওয়া নিয়ে দিলীপবাবুকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “দুই পক্ষই দুষ্কৃতী। এরাও দুষ্কৃতী, ওরাও দুষ্কৃতী। কেউ টিকিট নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান হয়ে গেছে, জেলা পরিষদের মেম্বার হয়ে গেছে, এমএলএ পর্যন্ত হয়ে গেছে। আসলে এরা সব আন্টিসোশ্যাল। পয়সা তোলো, পয়সা পার্টিকে দাও, এসব চলছে। কারও কন্ট্রোল নেই। মমতা ব্যানার্জি কেন, ভগবানেরও এখানে আর কোনো কন্ট্রোল নেই।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিলীপ ঘোষ কিন্তু অত্যন্ত সত্যি কথা বলেছেন। সত্যিই তৃণমূল দলে যে কারো কোনো কন্ট্রোল নেই, তা ক্রমাগত স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমনিতেই তো চুরি, দুর্নীতিতে তৃণমূল নেতারা ফেঁসে যাচ্ছেন। রাজ্যজুড়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। আর তার মধ্যেই তৃণমূলের কর্মীরাই যেভাবে তৃণমূলের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন এবং যেভাবে অনেক কর্মীরা খুন পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছেন, তাতেই স্পষ্ট যে, কোনো রাজনৈতিক দলে যতটা শৃঙ্খলা থাকা দরকার, তৃণমূলে তার বিন্দুমাত্র নেই। আর সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে যতই অনুশাসনের কথা বলুন না কেন, বাস্তবের মাটিতে তৃণমূল নিজেদের আরও বেশি করে শৃঙ্খলাহীন দলের পরিচয় দিচ্ছে। আর এতেই বিরোধীদের তীক্ষ্ণ বাণে মাথায় হাত পড়ছে তৃণমূল সুপ্রিমোর বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।