প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিরা হেনস্থা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই দলকে রাস্তায় নামার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকালই জেলায় জেলায় প্রতিবাদ হয়েছে। আর আজ বোলপুরে একটি মিছিলে অংশ নেবেন তৃণমূল নেত্রী। তবে তিনি বোলপুরে মিছিল করার আগেই সাতসকালে বাংলার অস্মিতা নিয়ে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত বেশি কথা বলছেন, তার দলের প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে যে সমস্ত অবাঙালি ব্যক্তিরা সংসদে গিয়েছেন, তাদের জায়গায় বাঙ্গালীদের কেন পাঠানো হচ্ছে না? সেই প্রশ্ন তুলে পাল্টা খোঁচা দিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। যাকে কেন্দ্র করে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।

প্রসঙ্গত, আজ বোলপুরে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। যে মিছিলে অংশ নেবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি জোর কদমে শুরু হয়েছে। তবে সেই মিছিল শুরু হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী যে বাঙালি প্রেমের কথা বলছেন, যেভাবে বাঙালিদের জন্য রাস্তায় নামছেন, তাতে তার এই পদক্ষেপ নিয়েই উঠে গেল বড়সড় প্রশ্ন। যে প্রশ্ন তুলে দিলেন সুকান্ত মজুমদার। সাকেত গোখলে শুরু করে কীর্তি আজাদের মত সাংসদদের নাম করে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন তিনি। ঠিক কি বলেছেন সুকান্তবাবু?

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদে বোলপুরে মিছিল নিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমার প্রশ্ন, বাঙালি অস্মিতাতে যদি শানই দিতে হয়, তাহলে সাকেত গোখলেকে প্রথমে রাজ্যসভা থেকে তাড়িয়ে দিন। সেখানে একজন বাঙালিকে পাঠান। লোকসভায় ইউসুফ পাঠানকে ইস্তফা করিয়ে সেখানে কোনো ভারতীয় বাঙালি মুসলমানকে দাঁড় করান। কীর্তি আজাদকে ইস্তফা করান, তার জায়গায় কোনো বাঙালি তৃণমূল নেতাকে দাঁড় করান। এমনকি শত্রুঘ্ন সিনহাকেও বাদ দিয়ে তার জায়গায় কোনো বাঙালিকে পাঠানো উচিত। মুখে বাঙালির কথা বলবেন, আর ভোটে দাঁড় করানোর সময় অন্য জায়গা থেকে লোক ভাড়া করে আনবেন, তারা হয় মারাঠি, তা না হলে বিহারি, এটা চলতে পারে না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছিলেন যে, ২০২৬ এর বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিকে বাংলা বিরোধী তকমা দিয়ে নিজে সমস্ত ভোট নিয়ে নেওয়ার। কিন্তু সেই জায়গায় মোক্ষম প্রশ্ন উত্থাপন করে দিলেন সুকান্ত মজুমদার। সত্যিই তো তাই। যদি বাঙালি প্রীতি এতই থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তাহলে তিনি এই রাজ্য থেকে যে সমস্ত আসনে তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছে, সেখানে প্রত্যেকে বাঙালি নেই কেন? কেন অন্য রাজ্য থেকে, অন্য ভাষাভাষীর মানুষকে সেখানে জায়গা দিতে হচ্ছে? কেন বাঙালি তৃণমূল নেতাদের ভোটে দাঁড় করিয়ে সংসদে পাঠাতে পারছে না তৃণমূল? স্বাভাবিকভাবেই বাংলার মানুষদের বিজেপি শাসিত রাজ্যে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ তুলছেন, তাকে অমূলক এবং ভিত্তিহীন বলার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বঙ্গপ্রীতি নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিলেন সুকান্ত মজুমদার।