প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন প্রশাসনিক সভায় অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের টাকা দেয় না। অন্যান্য রাজ্যগুলোকে যেভাবে সহযোগিতা করা হয়, পশ্চিমবঙ্গকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তৃণমূল ক্ষমতায় আছে বলে এখানে টাকা না দিয়ে ভাতে মারার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কিন্তু বাস্তবে রাজ্যের চিত্র যে সম্পূর্ণ আলাদা, তৃণমূল সরকার কেন্দ্রের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মানুষকে সেই টাকার সুবিধে না দিয়ে নিজেদের নেতাদের পকেটে সেই টাকা ঢুকিয়েছে এবং সেই কারণেই যে আর চুরি করার সুযোগ না পেয়ে তৃণমূল নেতারা নাকে কান্না কাঁদছেন এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছেন, তাতে এক প্রকার নিশ্চিত বিজেপি। তবে তৃণমূল এবং বিজেপির এই রাজনৈতিক তরজার মাঝেই এবার আবারও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আবার যোজনার ক্ষেত্রে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বস্তুত, আজ বীরভূমে একটি প্রশাসনিক সভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই নিজের চিরাচরিত ভঙ্গিমায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা তিন চার বছর বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্র। আবাসের টাকা কেন্দ্র দেয় না। অন্য রাজ্য টাকা পাচ্ছে, আমরা বঞ্চিত।” তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ট মহল। তাদের বক্তব্য, বাংলার আবাস যোজনা নাম দিয়ে নিজের ছবি দিয়ে শুধুমাত্র নিজের ক্রেডিট এই প্রকল্পের পেছনে আছে, এটা প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। কেন্দ্রীয় সরকারও যখন টাকা দিচ্ছে, তখন কেন সেখানে কেন্দ্রের নাম থাকবে না? সব জায়গায় নিজেদের প্রচার করতে গিয়ে মানুষের যেটা পাওয়ার অধিকার, সেই টাকা তাদেরকে না দিয়ে সেখান থেকেও কাটমানি নিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। তাই হিসাব না দিলে মানুষের টাকা চুরি করলে যে তার শাস্তি এই ভাবেই পেতে হবে, তা বুঝিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। আর তাতেই দিশেহারা হয়ে এখন প্রশাসনিক সভা থেকে চূড়ান্ত মিথ্যাচার করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেই দাবি বিরোধীদের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে বঞ্চনা করছে, এই অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছেন যে, কেন্দ্র বাংলার প্রতি প্রতিহিংসা পরায়ন আচরণ করে, সেই কারণে ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে বাংলার আবাস যোজনার টাকা দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যকে দেওয়া হচ্ছে না। তবে এর পেছনে যে আরও একটা করুণ সত্য রয়েছে, তা হয়ত তৃণমূল নেতারা স্বীকার করেন না। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম দিকে টাকা দেওয়া হলেও, তাদের কাছে খবর গিয়েছিল যে, সেই টাকা ঠিকমত উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছচ্ছে না। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে দেওয়া টাকা তৃণমূল নেতারা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়ে নিচ্ছেন। আর তাতে চূড়ান্ত দুর্নীতি হচ্ছে। তাই রাজ্যের কাছে হিসেব চাওয়ার পরেও যখন তারা হিসেব দিতে পারেনি, তখন কেন্দ্রীয় সরকার বুঝে গিয়েছে যে, এই রাজ্যে মানুষের টাকা নিয়ে নয়ছয় হচ্ছে এবং চূড়ান্ত দুর্নীতি হচ্ছে। আর সেই কারণেই চুরি বন্ধ করতে, রাজ্যকে টাইট দিতে শুরু করেছে কেন্দ্র। আর তাতেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আবাস প্রকল্পে সহযোগিতা না পেয়ে এখন নাকে কান্না কাঁদতে শুরু করেছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেই দাবি রাজনৈতিক সমালোচকদের।