প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
আজ তৃণমূলের সংসদীয় কমিটির একটি ভার্চুয়াল বৈঠক ছিল। যে বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের সেভাবে এদিকে নজর না থাকলেও, তৃণমূলের যারা জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তারা গোটা ঘটনা পরম্পরা দিকে নজর রেখেছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হওয়ার পরেই সেই বৈঠকে কি ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে এমন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এলো, যাকে কেন্দ্র করে রীতিমত উত্তাল হয়ে উঠল তৃণমূলের অন্দরমহল। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের নেত্রী বলে এতদিন মেনে এসেছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, এবার ভার্চুয়াল বৈঠকের পরেই সরাসরি কি সেই নেত্রীর সঙ্গেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেন তিনি?
কি ঘটনা ঘটেছে? এদিন তৃণমূলের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। যেখানে দলের সমস্ত সাংসদদের নিয়ে এই বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই বৈঠকেই এমন কিছু একটা হয়, যার ফলে তৃণমূলের লোকসভার চিফ হুইপ পদ থেকে পদত্যাগ করেন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পদত্যাগ করেই ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। উল্টে একটি সংবাদমাধ্যমকে এই ব্যাপারে বলতে গিয়ে তিনি যে সমস্ত বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন, তাতে সরাসরি তিনি নেত্রীর দিকেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কাউকে কিছুই মনে করতেন না, এবার সরাসরি তিনি সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই যে সমস্ত মন্তব্য করলেন, তাতে তৃণমূলের রাজনীতিতে কল্যান বন্দোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎ কি এবার একেবারে প্রশ্নের মুখে পড়ে যাবে, তা নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
হঠাৎ চিফ হুইপ পদ থেকে পদত্যাগ করলেন কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে একটি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দিদির বক্তব্য হচ্ছে, লোকসভার কো-অর্ডিনেশন ঠিকভাবে হচ্ছে না। সেই জন্য আমি পদত্যাগ করলাম। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দিনের পর দিন আসবে না, কাকলি মাঝে মাঝে থাকবে, সব দায় দায়িত্ব কি আমি একা ঘাড়ে নেব? আমার দ্বারা যখন হচ্ছে না, তখন রিজাইন করে দেওয়াটাই ভালো। দিদি বলছেন, ঝগড়া করছে। আমাকে যদি কেউ গালাগাল দেয়, সেটা আমাকে সহ্য করতে হবে? আমি তো এসব সহ্য করতে পারব না।”
আর পদত্যাগ করার পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে প্রকাশ্যে এই ধরনের মন্তব্য করলেন, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, তিনি কি এবার সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেন একেবারে নেত্রীর সঙ্গে? এই কল্যাণবাবুই বিভিন্ন সময় তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা নেত্রীর সম্পর্কে প্রকাশ্যে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। কখনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে, আবার কখনও বা সরাসরি নাম করে মহুয়া মৈত্রকে নিশানা করেছেন তিনি। আর আজ তৃণমূলের ভার্চুয়াল বৈঠকে নেত্রীর মুখ থেকে যে সমস্ত কথা কল্যাণবাবু শুনেছেন, তারপর তিনি চরম অপমানিত বোধ করেছেন এবং তার ফলেই সরাসরি যেভাবে রাখঢাক না করে এই সমস্ত মন্তব্য করলেন, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, এবার সরাসরি নেত্রীকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ। যা শাসকের অন্দরমহলে শুধু যে প্রভাব ফেলেছে, তাই নয়। তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের রীতিমত হতবাক করে দিয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।