প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
তৃণমূলের সংসদীয় দলের মধ্যে যে একটা বড় গন্ডগোল চলছে এবং তা সামাল দিতে যে তৃণমূলকে যথেষ্ট বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হচ্ছে, তা গতকালই উপলব্ধি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল তৃণমূলের সংদীয় দলের ভার্চুয়াল বৈঠকে সাংসদদের মধ্যে বনিবনার অভাব নিয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন। আর তারপরেই রীতিমত নেত্রী বলেছেন, সেই কারণে তিনি পদত্যাগ করছেন বলে মুখ্যসচেতকের পদ ছেড়ে দেন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে তো আগেই তিনি মন্তব্য করেছেন, গতকালও ঘুরিয়ে তাকে আক্রমণ করেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের একাধিক সাংসদের ভূমিকাকেও রীতিমত প্রশ্নের মুখে ফেলে দেন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে কাকলি ঘোষ দস্তিদারও ঠিকমত সংসদে আসেন না বলে মন্তব্য করতে দেখা যায় তাকে। কিন্তু এবার সেই কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যাপ্টার ক্লোজড করে যে কাকলি ঘোষ দস্তিদার সংসদে ঠিকমত আসে না বলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, তাকেই কল্যাণবাবুর ছেড়ে যাওয়া পদে বসিয়ে দিলো তৃণমূল কংগ্রেস।

জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দলের কাছে মুখ্য সচেতকের পদ ছাড়ার জন্য পদত্যাগ জমা দিয়েছিলেন। অবশেষে আজ তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হয়েছে। আর কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন যে মুখ্য সচেতাকে দায়িত্ব সামলেছিলেন, সেই দায়িত্বে বসানো হয়েছে তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। অন্য দিকে ডেপুটি দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আরও এক মহিলা সাংসদ শতাব্দী রায়কে।

আর তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তের পরেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেল যে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যাপ্টার ক্লোজড হয়ে যাচ্ছে। তিনি যেভাবে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করেছিলেন, যেভাবে তার অপমান আর সহ্য করতে পারছিলেন না, তাতে হয়ত দূরত্ব কমে যাবে, এরকম একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল বিভিন্ন মহলে। কিন্তু কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ পত্র গ্রহন করে দল বুঝিয়ে দিলো যে, তার প্রয়োজন হয়ত ফুরিয়ে গিয়েছে। কটাক্ষ করে তেমনটাই বলছেন বিরোধীরা। পাশাপাশি তারা এটাও বলছেন যে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সব থেকে বেশি বিজেপি বিরোধীতার ক্ষেত্রে তৃণমূলের মধ্যে সংসদে সোচ্চার। ফলে তাকে বাদ দিয়ে তৃণমূল নিজেরাই নিজেদের রাজনৈতিক কবর খুড়লো না তো? পাশাপাশি কাকলি ঘোষ দস্তিদার সম্পর্কেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল পারফরম্যান্স যে সেই তৃণমূলের মহিলা সংসদের ঠিক নেই, সেই ব্যাপারেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তিনি যার সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন, সেই কাকলিদেবীকেই তার ছেড়ে যাওয়া পদে যেভাবে বসিয়ে দেওয়া হলো, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, কল্যাণবাবুর ভ্যালু ক্রমশ কমছে তৃণমূলে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।