প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
হাতে আর মাত্র তিন দিন বাকি। তারপরেই ৯ আগস্ট। গত বছর এই দিনেই আরজিকর কান্ডের বিভীষিকাময় ঘটনা সামনে এসেছিল। যেখানে অভয়ার মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ। সরকারি হাসপাতালের ভেতরে এক কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসককে যেভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তাতে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিল তৃণমূল সরকার। পরবর্তীতে আন্দোলনের তীব্রতা কমে গেলেও, বিচারের দাবিতে মাঝেমধ্যেই আওয়াজ উঠেছে রাজ্যজুড়ে। আর যেহেতু এই ঘটনার এক বছর পূরণ হচ্ছে এবং এখনও পর্যন্ত বিচার হয়নি, তাই অভয়ার মৃত্যুর দিনেই ফের পথে নামতে চলেছেন আন্দোলনকারীরা। যেখানে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের পক্ষ থেকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে তার আগেই তাদের সেই আন্দোলন যাতে না হয় এবং তাদের যাতে ভয় দেখানো যায়, তার জন্য কি যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করে দিলো রাজ্য প্রশাসন?

জানা গিয়েছে, অভয়ার মৃত্যুর ঘটনায় বিচারের দাবি নিয়ে ফের পথে নামতে চলেছে জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন গত বছর ৯ আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছিল, ঠিক সেই দিনেই তারা আবার রাজপথে নেমে আন্দোলন করবেন। তবে সেই আন্দোলন যাতে শাসকের মাথা ব্যথার কারণ না হয়ে উঠতে পারে, তার জন্যই কি এখন পুলিশ দিয়ে যারা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন, বেছে বেছে তাদের বাড়িতে নোটিশ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল? নিজেদের অস্বস্তি ঢাকার জন্য শুধুমাত্র আন্দোলন বন্ধ করতে পুলিশ পাঠিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের ভয় দেখানোর কাজ শুরু করে দিলো নবান্ন? জানা গিয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট তো বটেই, এমনকি ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সভাপতিকেও ইতিমধ্যেই দুটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আর এই ঘটনার পরেই অনেকে বলছেন, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই। শুধুমাত্র একটাই কারণ যে, অভয়ার মৃত্যুর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এক বছর হয়ে যাওয়ার পরেও যেহেতু বিচার হয়নি, তাই তারা যেহেতু আবার পথে নামছেন, সেই কারণেই তাদের প্রতিবাদী কন্ঠকে রুদ্ধ করার জন্যই শাসকের এই চেষ্টা।

ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনায় গর্জে উঠেছে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্টের পক্ষ থেকে দেবাশিস হালদার বলেন, “কিঞ্জলের বাড়িতেও দিয়েছে। জামিন অযোগ্যধারাও আছে। পুলিশকে আঘাত, মহিলা পুলিশের সঙ্গে অভব্যতা, বেআইনি জমায়েতের কেস দিচ্ছে। আমাদের কর্মসূচি বানচাল করতে ও ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করতে এবং কর্মসূচি আটকাতেই এসব করা হচ্ছে। ভ্যানচালক, রিক্সা চালক যারা লেপ-তোষক দেয়, তাদেরও কেস দিয়েছে। আমাদের মামলা করে দমন করা যাবে না। পুলিশ তথ্য প্রমান লোপাট, খুনের কেসের তদন্ত করতে পারছে না। এক বছর আগের কেস নিয়ে মামলা করছে।” তবে যেভাবে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে, তাতে তারা যদি সেই নোটিসের প্রত্যুত্তরে সঠিক সময় পদক্ষেপ নেন, তাহলে তো পুলিশ আরও বড় কোনো পদক্ষেপ তাদের বিরুদ্ধে নিতে পারে। তখন তারা কি করবেন? ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে কি করে আইনি পরামর্শ নিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্টের সদস্যরা। তবে বেছে বেছে এমন একটা সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে, যখন আরজিকরের ঘটনায় আবার এক বছর হয়ে যাওয়ার কারণে অভয়ার মৃত্যুর বিচার চাওয়ার জন্য তারা পথে নামছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই সময়েই প্রশাসনের এই কেস দেওয়ার ঘটনা প্রতিবাদকে দমন করার ক্ষেত্রে শাসকের গভীর চক্রান্তের দিকেই ইঙ্গিত করছে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।