প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
রাজ্যের ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বারুইপুর পূর্বেই ইআরও এবং এইআরওকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। একইভাবে ময়নাতেও ইআরও এবং এইআরওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন। এমনকি এই চার জন আধিকারিক সহ একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে যাতে রাজ্য এফআইআর করে, তার জন্য নবান্নকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কমিশনের সেই নির্দেশ এখনও পর্যন্ত পালন করেনি রাজ্য। শুধু তাই নয়, তারা যে এই নির্দেশ পালন করবে না, সেই ব্যাপারেও একটা গুঞ্জন তৈরি হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত যদি রাজ্য কমিশনের এই নির্দেশ পালন না করে, তাহলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে গোটা পরিস্থিতি, তা নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে প্রশাসনিক মহলে।

প্রসঙ্গত, গতকালই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। যেখানে বারুইপুর পূর্বের দুজন আধিকারিক এবং ময়নার দুজন আধিকারিককে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়ে দেয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। একইভাবে এই চারজন আধিকারিক সহ একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে যাতে রাজ্যের পক্ষ থেকে এফআইআর করা হয়, তার জন্যও মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে এখানেই রাজ্যের পক্ষ থেকে আপত্তি রয়েছে বলে খবর। রাজ্য কোনোভাবেই এই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর প্রক্রিয়ায় যেতে নারাজ। স্বাভাবিকভাবেই কমিশন যখন একটি নির্দেশ রাজ্যকে দিচ্ছে, তখন রাজ্য সেই নির্দেশ যদি পালন না করে, তাহলে দুই পক্ষের মধ্যে যে সংঘাত মারাত্মক আকার ধারণ করবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল।

অনেকেরই প্রশ্ন যে, রাজ্যের এত ভয় কেন এই সমস্ত আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে? তারা কেন ক্ষমতা দেখিয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পালন করতে পারছে না? কেন তারা কমিশনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যাচ্ছে? এর ফলেই তো বোঝা যাচ্ছে যে, রাজ্যের সদিচ্ছা নেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোর ক্ষেত্রে! রাজ্য যদি এভাবেই কমিশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ আনায় তাহলে কমিশনের পাল্টা রাজ্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্য বরাবরই নিজেদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেউ গেলেই তাকে চ্যালেঞ্জ জানায়। এক্ষেত্রে রাজভবনের সঙ্গেও রাজ্যের বারবার করে সংঘাত সামনে এসেছে। এবার নির্বাচন কমিশন রাজ্যকে একটি বিষয় নির্দেশ দেওয়ার পরেও যেভাবে রাজ্য তাতে সম্মতি প্রকাশ করছে না, তাতেই বোঝা যাচ্ছে যে, ভবিষ্যতে গোটা বিষয়টি আদালতের দরজায় চলে যেতে পারে। ফলে একটা আইনি জটিলতা তৈরি হয়ে যেতে পারে দুই পক্ষের মধ্যে। আর যদি শেষ পর্যন্ত আদালতের দরজায় চলে যায় গোটা বিষয়টি, তাহলে রাজ্য এবং কমিশনের এই সংঘাত রীতিমত নজিরবিহীন হয়ে দাঁড়াবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।