প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২৬ এর নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেস খুব ভালো মতই বুঝতে পেরেছে যে, রোহিঙ্গা, অনুপ্রবেশকারী, বাংলাদেশী ভোটার এবং যারা ভুয়ো ভোটার রয়েছে, তাদের নাম বাদ যাবে। আর তাদের নাম বাদ গেলেই তৃণমূলের ক্ষমতায় থাকা হবে না। আর তা বুঝতে পেরেই এখন থেকে বাংলা ও বাঙালিকে বিজেপির টার্গেট করেছে বলে রাস্তায় নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার করে মিছিল, মিটিং করে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করছেন, বিজেপি পরিকল্পনামাফিক বাংলার অনেকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে চাইছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই সমস্ত বক্তব্য এবং তার এই মিথ্যে বঙ্গপ্রেম যে শুধুই লোক দেখানো, তা বারবার করে পাল্টা যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ বন্যা কবলিত ঘাটাল এলাকায় গিয়ে একটি সভা থেকে আরও একবার মুখ্যমন্ত্রীকে এই ব্যাপারে নিশানা করলেন তিনি।

বলা বাহুল্য, গতকাল ঝাড়গ্রামের একটি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের অনেকের ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী যে ভয়ের থেকেই এই ধরনের কথা বলছেন, আজ সেই ব্যাপারে পাল্টা তৃণমূলের বিদায় ঘন্টা ঘাটাল থেকে বাজিয়ে দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যে ঘাটাল নিয়ে এত প্রতিশ্রুতি তৃণমূল দিয়েছিল যে, সেখানে বন্যা হবে না, সেখানে বন্যা মোকাবিলায় সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে, সেই ঘাটালে যে এবারও দৈনদশা, তা সকলেই প্রত্যক্ষ করেছে। এক্ষেত্রে তৃণমূল সরকারের সমস্ত প্রতিশ্রুতি যে ঢপের চপ, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ঘাটালের মানুষের কাছে। এদিন সেই কথাই তুলে ধরে ঘাটালে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সামিল হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই কর্মসূচি থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর এত বঙ্গপ্রেম এবং তার ভাইপো যেভাবে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে, তাতে তাদের মুখোশ টেনে খুলে দেন শুভেন্দুবাবু। ঠিক কি বলেছেন তিনি?

ঘাটালের কর্মসূচি থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এত শিক্ষিত, এত জ্ঞানী, ২০২১ এর পর ভাইপো কি বলেছিল? বলেছিল, বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা হচ্ছে সতীশ সামন্ত। মনে আছে আপনাদের? মমতা ব্যানার্জি কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছেন বাংলার জন্য। আসলে এইসব কিছু নয়। কারণ তিনি জানেন, রোহিঙ্গা, বাংলাদেশী ভোটার, এই তালিকা থেকে বাদ গেলে পিসি চিৎপটাং।” অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটার তালিকায় সংশোধনীর ক্ষেত্রে ভয় পাচ্ছেন। তা না হলে তার এত আপত্তি কেন? যিনি নির্বাচনী ক্ষেত্রে বারবার করে স্বচ্ছতার দাবি তুলেছেন বিরোধী নেত্রী থাকার সময়, সেই মুখ্যমন্ত্রীর আজ এত বদল কেন? নির্বাচন কমিশন যদি নিয়ম মেনে ভোটার তালিকায় সংশোধনী প্রক্রিয়া করে, তাহলে তো অসুবিধে থাকার কথা নয়। সেক্ষেত্রে বেছে বেছে তৃণমূল কংগ্রেসের অসুবিধে হচ্ছে এবং তারা বাংলা ও বাঙালির বিষয়টিকে সামনে এনে যেভাবে পথে নেমে বিজেপিকে আক্রমণ করছেন! এর অর্থ একটাই যে, তৃণমূল ভোটার তালিকায় অস্বচ্ছতা অবলম্বন করেই এতদিন ক্ষমতায় থেকেছে। তাই এক্ষেত্রে যদি স্বচ্ছতা শুরু হয়, তাহলে রোহিঙ্গা, অনুপ্রবেশকারী এবং ভুয়ো ভোটারদের নাম বাদ যাবে। আর তাতে তৃণমূলের ক্ষমতায় থাকা কার্যত অনিশ্চিত হয়ে যাবে। বিদায় ঘন্টা বেজে যাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। ঘাটালের সভা থেকে তেমনটাই দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী।