প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে তৃণমূলের জন্য এক আইন, আর বিরোধীদের জন্য বা সাধারণ মানুষের জন্য আর এক আইন। তৃণমূল নেতারা যা খুশি তাই বলতে পারেন, তারা প্রকাশ্যে পুলিশকে হুমকি দিতে পারেন, তারা বিরোধীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার কথা বলতে পারেন, কিন্তু তারপরেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা হবে না। রাজ্যে যে প্রবণতা শুরু হয়েছে, তাতে কিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হবে ২০২৬ সালে, সেটাই একটা চিন্তার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিরোধীদের মধ্যে। মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন তৃণমূল নেতাকে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে এখন থেকেই হুমকি হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যাচ্ছে। আর এবার সেই রেশ ধরে রেখেই রায়না ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি প্রকাশ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বসলেন বিজেপি নেতাদের। যাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরাও।

কি ঘটনা ঘটেছে? গতকাল প্রকাশ্য মঞ্চ থেকেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিরোধীদের রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়ে বসেন তৃণমূল নেতা বামদেব মন্ডল। বিরোধীরা তাদের মত করে রাজনীতি করবে, এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে বিরোধীদের রাজনৈতিক আক্রমণ না করে এই তৃণমূল নেতা যেভাবে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার নিদান দিলেন একেবারে প্রকাশ্যে, তাতে প্রশাসন কবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, এখন সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। যদিও বা বিরোধীরা এটাও বলছেন যে, যে রাজ্যের প্রশাসন অনুব্রত মণ্ডল গালিগালাজ করার পরেও তাকে গ্রেফতার করতে পারে না! সেই প্রশাসন এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে যে কোনো পদক্ষেপ নেবে না, তা বলা যায়। ‌ কিন্তু ঠিক কি বলেছেন এই তৃণমূল নেতা?

এদিন দলীয় একটি কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন রায়না ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বামদেব মন্ডল। যেখানে বিজেপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যদি কোনো বিজেপির নেতা, বিজেপির চামচা, বিজেপির ক্যাডার এখানে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর চেষ্টা করে, কাউকে বাংলাদেশী বলে অত্যাচার করার চেষ্টা করে, তাহলে আমি প্রকাশ্যে বলে দিলাম, প্রশাসনের সামনে বলে দিলাম, তার হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে গাছের সামনে ফেলে রেখে দেব।” আর এখানেই প্রশ্ন যে, আইন হাতে তুলে নেওয়ার এই তৃণমূল নেতা কে? আর তিনি প্রশাসনের সামনে বলছেন, অথচ প্রশাসন কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? যদি বিজেপি নেতারা সেরকম কোনো কাজ করে থাকেন, তাহলে আইন অনুযায়ী প্রশাসন অবশ্যই তার কাজ করবে। কিন্তু এখন থেকেই যদি তৃণমূল নেতা প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়ে নেয়, তাহলে রাজ্যে কি আদৌ আইনের শাসন পরিলক্ষিত হবে? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।